পড়াশোনা

তড়িৎ বিশ্লেষণ কাকে বলে? তড়িৎ বিশ্লেষণের ব্যবহার। What is Electrolysis?

1 min read
তড়িৎ বিশ্লেষ্যের দ্রবণের মধ্যদিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করার ফলে যে রাসায়নিক বিয়োজন ঘটে তাকে তড়িৎ বিশ্লেষণ (Electrolysis) বলে।

তড়িৎ বিশ্লেষণের ব্যবহার (Use of Electrolysis)

তড়িৎ বিশ্লেষণ মূলত ধাতু নিষ্কাশনে ব্যবহার হয়। অ্যালুমিনিয়াম, লিথিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কপার এই পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা হয়। বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ যেমন, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড, সোডিয়াম ক্লোরেট, পটাশিয়াম ক্লোরেট, ট্রাই ফ্লুরো অ্যাসেটিক এসিড তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয়। এছাড়াও ক্লোরিন এবং হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনে তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

এক ধাতুর ওপর আরেক ধাতুর প্রলেপ দেওয়ার জন্য তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

তড়িৎ বিশ্লেষণের কয়েকটি ব্যবহারিক প্রয়োগঃ

তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার নানা ব্যবহারিক প্রয়োগ আছে। কয়েকটি প্রয়োগ নিম্নে আলোচনা করা হল :

১। তড়িৎ প্রলেপনঃ তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কোন ধাতুর উপর সুবিধামত অন্য কোন ধাতুর প্রলেপ দেয়াকে তড়িৎ প্রলেপন বলে। জলবায়ু হতে রক্ষা করবার জন্য এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য তামা, লোহা, পিতল, টিন প্রভৃতি নিম্নমানের ধাতু নির্মিত জিনিসপত্র যথা : ছুরি, কাঁচি, বোতাম, চামুচ ইত্যাদির উপর সোনা, রুপা, নিকেল, ক্রোমিয়াম, দস্তা ইত্যাদি মূল্যবান ধাতুর প্রলেপ দেয়া হয়। যে বস্তুতে প্রলেপ দিতে হবে তাকে ক্যাথোড রূপে এবং যার প্রলেপ দিতে হবে সে ধাতুর একটি পাতকে অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

২। তড়িৎ মুদ্রণঃ তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রণালিতে হরফ, ব্লক, মডেল ইত্যাদির অবিকল ধাতব প্রতিলিপি প্রস্তুত করার প্রক্রিয়াকে তড়িৎ মুদ্রণ বলা হয়। তড়িৎ মুদ্রণের জন্য প্রথমে লেখাটি সাধারণ টাইপে কম্পোজ করে মোমের উপর ছাপ নেয়া হয়। ছাপটির উপর গ্রাফাইটের গুঁড়া ছড়িয়ে একে তড়িৎ পরিবাহী করা হয়। তারপর একে একটি কপার সালফেট দ্রবণে পূর্ণ ভোল্টামিটারে কাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং একটি তামার পাতকে অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখন দ্রবণের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে মোমের ছাঁচের উপর তামার পুরু আস্তরণ পড়ে। এবার তামার পুরু আস্তরণটিকে ছাঁচ হতে ছড়িয়ে নিয়ে ছাপার কাজে ব্যবহার করা হয়।

৩। ধাতু নিষ্কাশন ও শোধন : সাধারণত খনি থেকে বিশুদ্ধ অবস্থায় কোন ধাতু পাওয়া যায় না। এদের মধ্যে নানা ধাতুর মিশ্রণ থাকে যাকে আকরিক বলা হয়। তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে আকরিক থেকে সহজে ধাতু নিষ্কাশন ও তা শোধন করা যায়। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, তামা, সোনা প্রভৃতি ধাতুকে আকরিক হতে তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিষ্কাশন করা হয়। যে আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশন করতে হবে তাকে ভোল্টামিটারের অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যে ধাতু নিষ্কাশন করতে হবে তার কোন লবণের দ্রবণকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য রূপে এবং তার একটি বিশুদ্ধ পাতকে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখন দ্রবণের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে আকরিক থেকে বিশুদ্ধ ধাতু ব্যবহার নিষ্কাশিত হয়ে ক্যাথোডে জমা হয় এবং খাদগুলো পাত্রের নিচে পড়ে থাকে।

৪। ডি.সি. লাইনের মেরু পরীক্ষা : কোন ডি.সি. মেইন লাইনের দু’টি তারের কোনটি ধনাত্মক ও কোনটি ঋণাত্মক তা নির্ণয় করার জন্য পানির তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্য নেয়া যায়।

একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে তাতে সামান্য লবণ মিশানো হলো। এবার মেইন লাইনের তার দু’টির প্রান্ত পানির মধ্যে ডুবালে পানির তড়িৎ বিশ্লেষণ হবে। যে তার দিয়ে বেশি পরিমাণ গ্যাস নির্গত হবে-বুঝতে হবে যে ঐ গ্যাস হাইড্রোজেন এবং তারটি ঋণাত্মক। আর অপর তারটি হবে ধনাত্মক।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x