পড়াশোনা

কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে কি বুঝায়? কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ, চিকিৎসা

1 min read

কোষ্ঠকাঠিন্য কোনো বিশেষ ধরনের রোগ নয়। যখন কারো শক্ত পায়খানা হয় কিংবা দুই বা তারও বেশি দিন পায়খানা হয় না, এ অবস্থাকে বলা হয় কোষ্ঠকাঠিন্য। বিভিন্ন কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে, যেমন পায়খানার হওয়ার সময় চেপে রাখলে, বৃহদন্ত্রে অপাচ্য খাদ্যাংশ থেকে বেশি পানি শোষিত হলে, পৌষ্টিক নালির মধ্য দিয়ে খাদ্যের অপাচ্য অংশ ধীরে ধীরে গমনে মল থেকে বেশি পানি শোষিত হলে। আবার পরিশ্রম না করলে, আন্ত্রিক গোলযোগে, কোলনের মাংসপেশি স্বাভাবিকের তুলনায় ধীরে ধীরে সংকুচিত হলে, রাফেজ বা আঁশযুক্ত খাবার না খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মল ত্যাগ কষ্টদায়ক হয়। ফলে পেটে অস্বস্তিকর অবস্থা, পেট ব্যথা ও নানা রকম আনুষঙ্গিক অসুবিধার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে হার্নিয়াসহ বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। আবার পরিপাক নালির টিউমারসহ বিভিন্ন অসুখের লক্ষণ হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

এ রোগ প্রতিকারে যা করতে হবে তা হলো: আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া, প্রচুর পানি পান করা, নিয়মিত শাকসবজি, আপেল, নারকেল, খেজুর, আম, কমলা, পেঁপে, আনারস, কলা ইত্যাদি খাওয়া। নিয়মিত মল ত্যাগের অভ্যাস করা, হাঁটাচলার অভ্যাস গড়ে তোলা।

 

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ

  • অপর্যাপ্ত খাবার ও উচ্চমাত্রার বিশোধিত খাবার খাওয়া।
  • খাদ্যে আঁশের পরিমাণ কম হওয়া।
  • বিছানায় বেশি সময় শুয়ে থাকা।
  • অনিয়মিত জীবন যাপন।
  • ধুমপান কিংবা বেশি মাত্রায় চা-কফি পান করা।
  • ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা পরিপাকতন্ত্রের অসহিষ্ণুতা।
  • কিছু কিছু ওষুধ সেবন: যেমন- এন্টাসিড, এন্টিকলিনার্জিক, আয়রন, উত্তেজনা প্রশমনকারী ওষুধ, মূত্রবর্ধক ওষুধ প্রভৃতি।
  • মানসিক উত্তেজনা ও দুঃশ্চিতা।
  • বিপাকক্রিয়ার অসুবিধা, যেমন- শরীরের পটাসিয়াম কমে যাওয়া, চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়া প্রভৃতি।
  • প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান করা।
  • থাইরয়েড গ্রন্থি কিংবা পিটুইটারি গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যাওয়া।
  • পায়ুপথের অসুখ কিংবা অন্ত্রের অস্বাভাবিকতা।
  • স্নায়ুজনিত অসুবিধা।
  • বয়স বেড়ে যাওয়া।
  • গর্ভাবস্থা।
  • পায়খানা করানোর জন্য ঘনঘন এনেমা অর্থাৎ মলদ্বারের ভেতর দিয়ে তরল ওষুধাদি প্রয়োজ করা।

 

কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা

  • সতর্কতা সহকারে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ খুঁজে বের করে তারপর তার চিকিৎসা করতে হবে।
  • প্রত্যেক দিন নির্দিষ্ট সময়ে মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মলত্যাগের চাপ না থাকলেও ওই নির্দিষ্ট সময়ে বাথরুমে বসতে হবে।
  • প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার যেমন- টাটকা, শাক-সবজি, ফল-মূল খেতে হবে।
  • সকালে নাশকতার আধা ঘন্টা আগে এক গ্লাস দুধ কিংবা গরম পানি খাওয়া যেতে পারে। এগুলো মৃদুজোলাপ হিসেবে কাজ করে।
  • নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে।
  • চা, কফি বা সিগারেট বর্জন করতে হবে।
  • এনেমা ব্যবহার করলে তা সাময়িক ভিত্তিতে করতে হবে। কারণ বারবার এনেমা ব্যবহার করলে তা স্বাভাবিক মলত্যাগের ওপর প্রভাব ফেলে। সাময়িকভাবে মলদ্বারে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • দুশ্চিন্তা, ভয় প্রকৃতি থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
  • সাময়িক ভিত্তিতে মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়াম খাওয়া যেতে পারে।
  • রাতে শোবার আগে এবং সকালে এক গ্লাস পানিতে ২-৩ চামচ ইসুবগুলের ভূসি মিশিয়ে পান করবেন।
5/5 - (18 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x