দশম অধ্যায় : খনিজ সম্পদ ধাতু-অধাতু, নবম ও দশম শ্রেণির রসায়ন

প্রশ্ন-১. ক্যালামাইনের রাসায়নিক সংকেত কি?

উত্তর : ক্যালামাইনের রাসায়নিক সংকেত হলো ZnCO3।

প্রশ্ন-২. ম্যাগমা কী? (What is magma?)

উত্তর : শিলা ভূগর্ভের অনেক গভীরে থাকে এবং ভূগর্ভের উচ্চচাপে শিলা গলে যায়, এ গলিত অবস্থাকে ম্যাগমা (magma) বলে।

প্রশ্ন-৩. খনিজ কাকে বলে?

উত্তর : ভূগর্ভে বা ভূপৃষ্ঠে কোনো কোনো শিলাস্তূপে প্রচুর যৌগ অথবা মুক্ত মৌল হিসেবে মূল্যবান ধাতু বা অধাতু পাওয়া যায়, এগুলোকে খনিজ বলে।

প্রশ্ন-৪. মৌলিক খনিজ কাকে বলে?

উত্তর : স্বর্ণ, হীরা, গন্ধক ইত্যাদি প্রকৃতিতে মৌলিক পদার্থরূপে পাওয়া যায়। এদের মৌলিক খনিজ বলে।

 

প্রশ্ন-৫. তরল খনিজ কী?

উত্তর : যেসব খনিজ পদার্থকে তরল হিসেবে পাওয়া যায় সেগুলোই হলো তরল খনিজ।

প্রশ্ন-৬. আকরিক কাকে বলে?

উত্তর : যেসব খনিজ থেকে লাভজনকভাবে ধাতু নিষ্কাশন করা যায় তাকে আকরিক বলে।

প্রশ্ন-৭. ইলেকট্রোপ্লেটিং কাকে বলে?

উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি অধিক সক্রিয় ধাতুর তৈরি জিনিসপত্রের উপর অন্য একটি কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ সৃষ্টি করাকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বলে।

 

প্রশ্ন-৮. সিন্নাবার এর সংকেত কি?

উত্তর : সিন্নাবার এর সংকেত হলো HgS।

প্রশ্ন-৯. কপার পাইরাইট এর সংকেত কি?

উত্তর : কপার পাইরাইট এর সংকেত হলো CuFeS2।

প্রশ্ন-১০. ওলিয়াম কী? (What is oleum?)

উত্তরঃ ধূমায়মান সালফিউরিক এসিড (H2S2O7) হলো ওলিয়াম।

প্রশ্ন-১১. রেকটিফাইড স্পিরিট কাকে বলে?

উত্তর : 95.6% ইথাইল অ্যালকোহলকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে।

 

প্রশ্ন-১২. স্মেল্টিং কী? (What is smelting?)

উত্তর : কোনো ধাতুর আকরিককে গলিয়ে তা থেকে ধাতু নিষ্কাশনের প্রক্রিয়াই হলো স্মেল্টিং।

প্রশ্ন-১৩. ধাতব বন্ধন কাকে বলে?

উত্তর : ধাতব পরমাণু সমূহ যে আকর্ষণ বল দ্বারা পরস্পরের সাথে আবদ্ধ থাকে তাকে ধাতব বন্ধন বলে।

প্রশ্ন-১৪. ধাতু কী?

উত্তর : যে সকল পদার্থ ঘাত সহনীয়তা, নমনীয়তা, উজ্জ্বলতা, তাপ ও তড়িৎ পরিবাহিতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে তারাই হলো ধাতু।

 

 

প্রশ্ন-১৫. সংকর ধাতু কাকে বলে?

উত্তর : দুই বা ততােধিক ধাতুকে উচ্চতাপে গলিয়ে তরলে পরিণত করে একত্রে মিশিয়ে অতঃপর মিশ্রণকে ঠান্ডা করলে যে কঠিন পদার্থে পরিণত হয় তাকে সংকর ধাতু বলে। যেমন পিতল হলো কপার ও জিংকের সংকর ধাতু।

প্রশ্ন-১৬. কোরান্ডাম কী? (What is corundum?)

উত্তর : বিশুদ্ধ অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের স্ফটিককে কোরান্ডাম বলা হয়। কোরান্ডাম খুব শক্ত বলে ঘর্ষণ ও পলিশের কাজে ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন-১৭. খনিজ মল কি?

উত্তর : খনিজ পদার্থটিতে আসল বস্তু ছাড়াও অনেক অপ্রয়োজনীয় পদার্থ যেমন মাটি, বালু, কাদা ইত্যাদি মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। এ সকল অপ্রয়োজনীয় পদার্থকে খনিজ মল বলা হয়।

 

প্রশ্ন-১৮. ব্লিস্টার কপার কি? (What is blister copper?)

উত্তর : কপারের আকরিক থেকে স্ব-বিজারণ পদ্ধতিতে কপার ধাতু নিষ্কাশন করা হয়। ঐ কপার 98% বিশুদ্ধ হয়। এ অবিশুদ্ধ কপারকে ব্লিস্টার কপার (blister copper) বলা হয়। ব্লিস্টার কপার থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ কপার উৎপাদন করা হয়।

প্রশ্ন-১৯. ভস্মীকরণ কাকে বলে?

উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় কোন আকরিকে বায়ুর অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে উত্তপ্ত করে ধাতুর অক্সাইডে পরিণত করা হয় তাকে ভস্মীকরণ (Calcination) বলে। সাধারণত কার্বনেট যুক্ত ও আর্দ্র আকরিককে ভস্মীকরণ করা হয়। ভস্মীকরণ করলে আকরিক থেকে কার্বনেট এবং জলীয় বাষ্প দূর হয় এবং ধাতুর অক্সাইড পরিণত হয়।

প্রশ্ন-২০. তাপজারণ কাকে বলে?

উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় বায়ুর অক্সিজেনের উপস্থিতিতে আকরিকে উত্তপ্ত করে ধাতুর অক্সাইডে পরিণত করাকে তাপজারণ বলে।

সাধারণত যেসব আকরিকে কার্বনেট বা পানি থাকে না তাদেরকে তাপজারণ করা হয়।

প্রশ্ন-২১. ইলেকট্রোপ্লেটিং কেন করা হয়?

উত্তর : ইলেকট্রোপ্লেটিং হচ্ছে মরিচা রোধক প্রলেপ। এটির ব্যবহারে লোহার স্থায়িত্ব বেড়ে যায়। কোনো ধাতুর উপর ইলেকট্রোপ্লেটিং করলে তা মসৃণ হয়। আবার ইলেকট্রোপ্লেটিং এর ফলে অলংকারের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে। তাই ইলেকট্রোপ্লেটিং করা হয়।

 

প্রশ্ন-২২. আকরিকে সালফার থাকলে তেল-ফেনা ভাসমান পদ্ধতির প্রয়োজন হয় কেন?

উত্তর : যেসব আকরিক নিম্নমানের এবং যাতে সালফার বিদ্যমান থাকে, তাদেরকে গাঢ়ীকরণের জন্য তেল-ফেনা ভাসমান প্রণালির প্রয়োজন। কেননা, তেল-ফেনা ভাসমান প্রণালিতে বিচূর্ণ আকরিককে পানি ও পাইন তেলসহ আলোড়িত করলে আকরিকের মূল উপাদানগুলো পাইন তেলের সাথে ফেনা আকারে ভেসে ওঠে এবং ভেজালগুলো তলানিরুপে পাত্রের নিচে জমা হয়। পরে ফেনা থেকে গাঢ়ীকৃত আকরিক সংগ্রহ করে পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়।

প্রশ্ন-২৩. কার্বন বিজারণ পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়ামকে নিষ্কাশিত করা যায় না কেন?

উত্তর : আকরিকে ধাতব আয়ন ও অ্যানায়নের বন্ধন শক্তির উপর নির্ভর করে ধাতু নিষ্কাশন করতে গলন বা বিজারণের প্রয়োজন হয়। সক্রিয় ধাতুসমূহের ক্ষেত্রে শক্তিশালী বন্ধন বিদ্যমান থাকে। সক্রিয়তা সিরিজে অ্যালুমিনিয়াম কার্বনের উপরে অবস্থিত। এক্ষেত্রে, অ্যালুমিনিয়ামের লবণসমূহের বিজারণ সম্ভব নয়। কেননা, অ্যালুমিনিয়াম কার্বন অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী বিজারক। তাই, কার্বন বিজারণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাশন করা হয়।

প্রশ্ন-২৪. ক্যালসিয়ামকে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না কেন?

উত্তর : যেসব ধাতু অধিক সক্রিয় তাদেরকে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। প্রকৃতিতে এদের যৌগ হিসেবে পাওয়া যায়। যেহেতু ক্যালসিয়াম সক্রিয় ধাতু তাই একে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। ক্যালসিয়ামকে যৌগ হিসেবে পাওয়া যায়। CaCO3, CaCl2, CaSO4 ইত্যাদি হলো ক্যালসিয়ামের উল্লেখযোগ্য যৌগ।

প্রশ্ন-২৫. সক্রিয়তা ক্রমের কোন কোন মৌলকে তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিষ্কাশন করা যাবে এবং কেন?

উত্তর : ধাতুর সক্রিয়তা ক্রমে যে সকল মৌলের অবস্থান Zn এর উপরে সে সকল মৌলকে তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিষ্কাশন করা যাবে।

K, Na, Ca, Mg, Al ধাতু সমূহ কার্বন অপেক্ষা অধিক সক্রিয় এবং শক্তিশালী বিজারক। এ সকল মৌলকে কার্বন বিজারণ পদ্ধতিতে এ সকল ধাতুর আকরিক হতে ধাতু মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই কার্বন বিজারণ পদ্ধতি অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী বিজারণ প্রক্রিয়া তড়িৎ বিশ্লেষণ হওয়ায় K, Na, Ca, Mg, Al ধাতু সমূহকে তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিষ্কাশন করা হয়।

 

প্রশ্ন-২৬. সকল খনিজ, আকরিক নয় ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : প্রকৃতিতে বিভিন্ন ধাতু ও ধাতব যৌগ পাথরের মত কঠিন পদার্থরূপে ভূত্বকে বা ভূগর্ভে পাওয়া যায়। এরূপ পদার্থ হলো খনিজ পদার্থ। আর যেসব খনিজ পদার্থ হতে সহজেই সুলভে প্রয়োজনীয় ধাতু বিভিন্ন পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যায় তাদেরকে আকরিক বলে। কিন্তু যেসব খনিজ হতে ধাতু নিষ্কাশন ব্যয়বহুল ও অলাভজনক নয় সেগুলো আকরিক নয়। অর্থাৎ সকল আকরিক খনিজ কিন্তু সকল খনিজ আকরিক নয়।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

১। নিচের কোনটি অ্যালুমিনিয়ামের আকরিক?
ক) হেমাটাইট খ) ম্যাগনেটাইট
গ) বক্সাইট ঘ) চালকোসাইট
উত্তর : খ) ম্যাগনেটাইট

২। মুদ্রা ধাতু কোনটি?
ক) নিকেল খ) ম্যাগনেসিয়াম
গ) কপার ঘ) ক্রোমিয়াম
উত্তর : গ) কপার

৩। ২২ ক্যারেট স্বর্ণে কতভাগ কপারসহ অন্যান্য ধাতু থাকে?
ক) ৮.৩৩% খ) ১২.৫% গ) ১৮% ঘ) ১৮.৫%
উত্তর : খ) ১২.৫%

৪। সর্বপ্রথম ব্যবহৃত ধাতু সংকর কোনটি?
ক) পিতল খ) কাঁসা
গ) ইস্পাত ঘ) স্বর্ণ
উত্তর : খ) কাঁসা

৫। রেললাইন প্রস্তুতিতে কোনটি ব্যবহৃত হয়?
ক) লোহা খ) কপার
গ) ইস্পাত ঘ) স্টেইনলেস স্টিল
উত্তর : গ) ইস্পাত

৬। রুটাইলের সংকেত কোনটি?
ক) FeWO4 খ) TiO2
গ) CO2 ঘ) SO2
উত্তর : খ) TiO2

৭। ক্যারামেলের বর্ণ কোনটি?
ক) সাদা খ) হলুদ গ) কালো ঘ) লাল
উত্তর : গ) কালো

৮। পিতলে জিংকের শতকরা পরিমাণ কত?
ক) ৬০% খ) ৩৫% গ) ৪৫% ঘ) ৯৫%
উত্তর : খ) ৩৫%

৯। লিমোনাইট কোন পদার্থের আকরিক?
ক) জিংক খ) লোহা গ) অ্যালুমিনিয়াম ঘ) ক্যালসিয়াম
উত্তর : খ) লোহা

১০। সালফারের গলনাঙ্ক কত?
ক)১৮০°C খ)১৯০°C গ)১১৮°C ঘ) ১০০°C
উত্তর : গ)১১৮°C

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *