বাগর্থতত্ত্ব কি?

বাগর্থতত্ত্ব ভাষাবিজ্ঞানের একটি বিশিষ্ট অংশ। এর অপর নাম শব্দার্থতত্ত্ব। এ অংশে শব্দ ও বাক্যের অর্থ নিয়ে আলোচনা করা হয়। অভিধানে শব্দের যেসব অর্থ থাকে, তার বাইরেও যে নানা অর্থে শব্দ ব্যবহৃত হয়, সেসব আলোচনা নিয়েই বাগর্থতত্ত্ব বা শব্দার্থতত্ত্ব। যেমন ‘কুশল’ একটি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ মঙ্গল, শুভ, কল্যাণ ইত্যাদি। এগুলো সবই বিশেষ্য।

আবার বিশেষণ অর্থে মঙ্গলময়, কল্যাণযুক্ত, নির্বিঘ্ন ইত্যাদি। এসবের বাইরেও ‘কুশল’ শব্দটির আরও একটি অর্থ আছে, তাহলো ‘যে কুশ আহরণ করে’। এ রকম ‘অসুখ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ রোগ, ব্যাধি, পীড়া, দুঃখ, অশান্তি ইত্যাদি। এসবের বাইরে তার আরও একটি অর্থ হলো ‘সুখের অভাব’। বাগর্থতত্ত্বে এসব আলোচিত হয়।

ভাষা সৃষ্টিতে বাক্যের ভূমিকা প্রধান হলেও ভাষার প্রধান কাঠামো গড়ে ওঠে শব্দকে ভিত্তি করে। ভাষার প্রাণ হলো শব্দের অর্থ। ভাষার পরিবর্তন যেমন তার বাইরের অঙ্গ-সম্পর্কিত পরিবর্তন, তেমনি তার ভেতরের প্রাণশক্তি হলো অর্থের পরিবর্তন। ভাষাবিজ্ঞানে শব্দ তথা বাক্যের অর্থ ও তার পরিবর্তন-সংক্রান্ত যে বিচার-বিশ্লেষণ, আলোচনা ও ব্যাখ্যা করা হয়, তাকে শব্দার্থতত্ত্ব বা বাগৰ্থতত্ত্ব বলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *