পড়াশোনা

৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

1 min read

প্রশ্ন-১ : শাহেদ তার আম্মার তৈরি কেক খেয়ে বলল এ কেকটার স্বাদ ও গন্ধ দোকানের কেকের চেয়ে ভালো হয়েছে; কিন্তু দেখতে অতটা ভালো হয়নি।

ক. সংবেদী অঙ্গ কাকে বলে?

খ. জিহ্বা একটি সংবেদি অঙ্গ– ব্যাখ্যা কর।

গ. বিভিন্ন ধরনের সংবেদি অঙ্গ বিভিন্ন কাজ করে– ব্যাখ্যা কর।

ঘ. সংবেদি অঙ্গগুলো সুস্থ রাখার জন্য কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা আলোচনা কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. যেসব অঙ্গের দ্বারা আমরা দেখি, শুনি, খাবারের স্বাদ গ্রহণ করি, গরম, ঠাণ্ডা, তাপ ও চাপ অনুভব করি তাদের সংবেদী অঙ্গ বলে।

খ. জিহ্বা দিয়ে আমরা খাদ্যবস্তুর টক, ঝাল, মিষ্টি, তিতা স্বাদ গ্রহণ করে থাকি। এটা আমাদের স্বাদইন্দ্রিয়। সংবেদি অঙ্গ না হলে এটা অনুভব বা সংবেদন করতে পারতাম না। তাই জিহ্বা একটি সংবেদি অঙ্গ।

গ. বিভিন্ন ধরনের সংবেদি অঙ্গ বিভিন্ন কাজ করে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো–

চোখ, কান, নাক, ত্বক, জিহ্বা বাহিরের সকল খবরা-খবর জোগাড় করে মস্তিষ্ককে জানিয়ে দেয়। মস্তিষ্ক হচ্ছে আমাদের দেহের চালিকাশক্তি। চোখ দিয়ে দেখি, কান দিয়ে শুনি, জিহ্বা দিয়ে আমরা স্বাদ গ্রহণ করি, ত্বক দিয়ে গরম, ঠাণ্ডা, তাপ, চাপ অনুভব করি।

এছাড়া জিহ্বা খাবার গিলতে সাহায্য করে, খাদ্যবস্তুকে নেড়েচেড়ে দাঁতের নিকট পৌছে দেয় যাতে খাদ্যবস্তু চিবানো সহজ হয়, খাদ্যবস্তুকে লালার সাথে মিশ্রিত করতে সাহায্য করে। জিহ্বা আমাদের কথা বলতে সাহায্য করে। ত্বকের অন্যান্য সাধারণ কাজের মধ্যে আছে দেহের ভেতরের অংশকে বাহিরের আঘাত, ঠাণ্ডা, গরম, রোদ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও দেহে রোগজীবাণু ঢুকতে বাধা দেয়, ঘাম বের করে দিয়ে শরীর ঠাণ্ডা ও সুস্থ রাখে, দেহের ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয় এবং সূর্যরশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, বিভিন্ন ধরনের সংবেদি অঙ্গ বিভিন্ন কাজ করে।

ঘ. সংবেদি অঙ্গগুলো সুস্থ রাখার জন্য প্রতিটি অঙ্গের আলাদা আলাদাভাবে যত্ন নিতে হবে। সংবেদি অঙ্গগুলো সুস্থ রাখার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা নিচে আলোচনা করা হলো–

চোখের ক্ষেত্রে :

i. ঘুম থেকে উঠে ও বাহির থেকে আসার পর অবশ্যই পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ দুটি পরিষ্কার করতে হবে।

ii. চোখ মোছার জন্য পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করা উচিত।

iii. নিয়মিত সবুজ শাকসবজি ও রঙিন ফলমূল খাওয়া উচিত। কারণ এগুলোতে ভিটামিন-এ থাকে। এবং চোখের জন্য খুবই ভালো। এসব খেলে রাতকানা রোগ এড়ানো যায়।

কানের ক্ষেত্রে :

i. নিয়মিত কান পরিষ্কার করা উচিত।

ii. গোসলের সময় কানে যেন পানি না ঢোকে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

iii. উচ্চ শব্দে গান শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

জিহ্বার ক্ষেত্রে :

i. নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করতে হবে।

ii. মুখ ও জিহ্বায় ঘা হলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ii. নাকের শ্লেষার সঙ্গে ধুলাবালি জমে, এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

ত্বকের ক্ষেত্রে :

i. নিয়মিত গোসল করা উচিত। কারণ নিয়মিত গোসল করলে ত্বক বা চামড়ার সংক্রমণ, খুশকি, চুলকানি ইত্যাদি সমস্যা এড়ানো যায়।

ii. ত্বকে কোনো রকম রোগ (যেমন— খোসপাঁচড়া, দাদ) দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রশ্ন-২ : অক্ষিগোলক তিনটি স্তরে গঠিত। এগুলো হলো : ১. স্ক্লেরা, ২. কোরয়েড এবং ৩. রেটিনা।

ক. শ্রবণ ইন্দ্রিয় কী?

খ. জিহ্বার কাজ কী? ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের ২য় স্তরটির গঠন ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকের ৩য় স্তরটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক. শ্রবণ ইন্দ্রিয় হলো কান যার সাহায্যে আমরা শব্দ শুনতে পাই।

খ. জিহ্বা আমাদের স্বাদ ইন্দ্রিয়। জিহ্বা দিয়ে প্রধানত আমরা খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করি। এছাড়া জিহ্বার আমাদেরকে খাদ্যবস্তু চিবাতে, লালার সাথে মিশ্রিত করতে এবং গিলতে সাহায্য করে। জিহ্বা আমাদের কথা বলতেও সাহায্য করে।

গ. অক্ষিগোলকের ২য় স্তরটি হলো কোরয়েড। কোরয়েড স্তরটি স্ক্লেরা স্তরের নিচে অবস্থিত। এটা একটা ঘন রঞ্জিত পদার্থের স্তর। এখানে বহু রক্তনালি প্রবেশ করে। এ স্তরে আইরিশ নামক কালো গোলাকার পর্দা থাকে। আইরিশের মাঝখানে পিউপিল নামক ছোট ছিদ্র থাকে। আইরিশ পেশি দিয়ে তৈরি।

এ পেশিগুলো সংকুচিত ও প্রসারিত হতে পারে যার ফলে পিউপিল ছোট বড় হতে পারে। এর ফলে আলোকরশ্মি রেটিনায় প্রবেশ করে। পিউপিলের পেছনে একটি দ্বি-উত্তল লেন্স থাকে যার মাঝখানে প্রশস্ত আর দুই পার্শ্ব সরু। লেন্সটি বিশেষ এক ধরনের সিলিয়ারি পেশি দ্বারা আটকানো থাকে। এ পেশিগুলো সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে লেন্সের আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।

ঘ. উদ্দীপকের ৩য় স্তর অর্থাৎ অক্ষিগোলকের ৩য় স্তরটি হলো রেটিনা। রেটিনা আমাদের চোখের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি অক্ষিগোলকের সবচেয়ে ভিতরের স্তর। রেটি একটি আলোক সংবেদি স্তর। কোন বস্তু থেকে আসা আলোকরশ্মি রেটিনায় প্রবেশ করার ফলে বস্তুটির প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। যার ফলে আমরা দেখতে পাই।

রেটিনায় বড় ও কোন নামে দুই ধরনের কোষ রয়েছে যা কম ও বেশি আলোতে কোন বস্তুকে দেখতে সাহায্য করে। চোখে কর্ণিয়ার মাধ্যমে যেকোনো বস্তু থেকে আসা আলোর চোখের ভিতর প্রবেশ করলেও রেটিনা না থাকলে সেই বস্তুটির প্রতিবিম্ব তৈরি হত না। ফলে আমরা দেখতে পেতাম না। তাই, আমাদের চোখের দর্শনের জন্য রেটিনার গুরুত্ব অপরিসীম।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x