আণবিক সংকেত কাকে বলে? আণবিক সংকেতের তাৎপর্য কি?

কোনো যৌগের অণুতে কোন কোন মৌল আছে এবং প্রতিটি মৌলের পরমাণুসমূহের প্রকৃত সংখ্যা কত তার সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে ঐ যৌগের আণবিক সংকেত বলে।

উদাহরণ : পানির একটি অণুতে হাইড্রোজেনের ২টি পরমাণু এবং অক্সিজেনের ১টি পরমাণু থাকে। সুতরাং পানির আণবিক সংকেত H2O।

আণবিক সংকেতের তাৎপর্য

আণবিক সংকেতের দু’ধরনের তাৎপর্য রয়েছে। যথা– গুণগত তাৎপর্য ও পরিমাণগত তাৎপর্য

গুণগত তাৎপর্য :

  1. কোন সংকেত দ্বারা একটি নির্দিষ্ট বস্তু বা পদার্থ বোঝায়। যেমন– H2SO4 সংকেত দ্বারা একটি নির্দিষ্ট বস্তু সালফিউরিক এসিড বোঝায়।
  2. সংকেত দ্বারা বস্তুটি কী কী মৌল দ্বারা গঠিত তা বোঝায়। যেমন– H2SO4 সংকেত দ্বারা বুঝা যায় যে বস্তুটি হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও সালফার এ তিনটি মৌল দ্বারা গঠিত।
  3. সংকেত থেকে সংক্ষেপে পদার্থের নাম জানা যায়।

পরিমাণগত তাৎপর্য :

  1. কোনো বস্তুর প্রতিটি অণুতে উপাদান মৌলের কয়টি পরমাণু আছে সংকেত তা নির্দেশ করে।
  2. সংকেত দ্বারা বস্তুটির আণবিক ভর জানা যায়।
  3. কোন যৌগের সংকেত যৌগটিতে বিদ্যমান মৌলসমূহের আপেক্ষিক ভর নির্দেশ করে।
  4. রাসায়নিক সমীকরণে কোনো সংকেত সংশ্লিষ্ট পদার্থের একটি অণুকে বোঝায়।
  5. যৌগের মৌলগুলো কী কী ওজন অনুপাতে পরস্পর যুক্ত হয় তা সংকেত থেকে জানা যায়।
আণবিক সংকেত নির্ণয়ের নিময় কি?
আণবিক সংকেত নির্ণয়ের নিময় নিম্নরূপ–
১ম ধাপ : প্রথমে বিভিন্ন মৌলের শতকরা পরিমাণগুলোকে যোগ করে দেখতে হবে ঐ যোগফল 100 বা এর খুব কাছাকাছি কোনো সংখ্যা হয় কিনা। যদি যোগফল 100 অপেক্ষা কম হয় তখন বুঝতে হবে অন্য কোনো মৌলের পরিমাণ সরাসরি উল্লেখ করা হয় নি। প্রশ্নে উহা খুঁজে বের করতে হবে। যদি উল্লেখ না থাকে তবে অজৈব যৌগের ক্ষেত্রে অক্সিজেন (O) ও জৈব যৌগের ক্ষেত্রে কার্বন (C) ধরে নিতে হবে। এবার 100 থেকে প্রাপ্ত মৌলসমূহের শতকরা সংযুতির যোগফল বিয়োগ করলে অবশিষ্ট O বা এর পরিমাণ পাওয়া যাবে।
২য় ধাপ : অতঃপর প্রত্যেক মৌলের শতকরা পরিমাণকে স্ব-স্ব মৌলের পারমাণবিক ভর দ্বারা ভাগ করতে হবে।
৩য় ধাপ : এই ভাগফলসমূহকে অপেক্ষাকৃত সরল সংখ্যায় পরিণত করতে হবে। তখন উহাদের মধ্যস্থিত ক্ষুদ্রতম সংখ্যা দ্বারা প্রত্যেক সংখ্যাকে ভাগ করতে হয়। প্রাপ্ত ভাগফলই যৌগের অণুস্থিত ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণুসমূহের ক্ষুদ্রতম অনুপাত নির্দেশ করে। যেহেতু আণবিক ভর = 2 × বাষ্প ঘনত্ব।
৪র্থ ধাপ : আমরা জানি, আণবিক সংকেত = (স্থূল সংকেত) n প্রয়োগ করতে হয়। এখানে n = 1, 2, 3, 4… ইত্যাদি পূর্ণসংখ্যা। এই n এর মান নির্ণয় করে সূত্রে বসালে আণবিক সংকেত পাওয়া যাবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *