অণুবীক্ষণ যন্ত্র কাকে বলে? অণুবীক্ষণ যন্ত্র কত প্রকার ও কি কি?

যে আলোক যন্ত্রের সাহায্যে নিকটবর্তী অতি ক্ষুদ্র বস্তুর খুঁটিনাটি প্রতিবিম্বের মাধ্যমে বড় করে দেখা যায় তাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র বলে। এর সাহায্যে কোনো বস্তুকে প্রায় ১০০ থেকে ৪০ লক্ষ গুণ বড় করে দেখা যায়। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দুই প্রকার। যথা- (ক) সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্র (Simple Microscope) বা বিবর্ধক কাচ ও (খ) জটিল বা যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র।
সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্রের গঠন
এ ধরনের অণুবীক্ষণযন্ত্রের গঠন অত্যন্ত সরল। এর সাহায্যে কোন লক্ষ্যবস্তু সাধারণত ২০ গুণ বড় দেখায়। যেসব বস্তু খালি চোখে অস্পষ্ট দেখায় সেগুলোকে পরিষ্কারভাবে নিরীক্ষণের জন্য সরল অণুবীক্ষণযন্ত্র ব্যবহার করা হয়। জীবদেহের কোন অংশ ব্যবচ্ছেদের জন্যও এ অণুবীক্ষণযন্ত্র ব্যবহৃত হয়। নিম্নোক্ত অংশগুলো নিয়ে এটি গঠিত।
  • পাদদেশ (Base) : যন্ত্রটির নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত ঘোড়ার খুরের মতো নিরেট অংশকে পাদদেশ বলে। এর উপরেই অন্যান্য অংশ অবস্থান করে।
  • স্তম্ভ (Pillar) : এটি পাদদেশের উপরিস্থিত লম্বভাবে যুক্ত একটি স্তম্ভাকৃতির নিরেট অংশ।
  • মঞ্চ (Stage) : এটি স্তম্ভের সাথে যুক্ত আয়তক্ষেত্রাকার একটি প্লেট বিশেষ। এর কেন্দ্রস্থলে লক্ষ্যবস্তুটি রাখা হয়। মঞ্চের দু’ধারে ক্লিপ থাকে। ক্লিপ দিয়ে স্লাইডকে আটকে রাখা হয়।
  • দর্পণ (Mirror ) : এটি মঞ্চের নিচে স্তম্ভের সাথে যুক্ত একটি ঘূর্ণায়মান দর্পণ বিশেষ। এর মাধ্যমে আলোকরশ্মিকে মঞ্চে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুর ভিতর দিয়ে প্রতিফলিত করা যায়।
  • সন্নিবেশক স্ক্রু (Adjustment screw) : এটি স্তম্ভের পিছন দিকে অবস্থিত। এর মাধ্যমে লেন্সকে উপরে-নিচে নাড়ানো যায়।
  • বাহু (Arm) : এটি মঞ্চের সাথে সমান্তরালভাবে অবস্থিত। এর অগ্রভাগে অভিনেত্র (eye piece) থাকে।
  • অভিনেত্র (Eye piece) : এটি একটি লেন্স এবং বিভিন্ন শক্তিসম্পন্ন (যেমন —10x, 15x, 20x) হতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য
  • নিকটবর্তী অতি ক্ষুদ্র বস্তু পর্যবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়।
  • অভিনেত্রের সাপেক্ষে অভিলক্ষ্য লেন্সের উন্মেষ ও ফোকাস দূরত্ব ছোট হয়।
  • অভিলক্ষ্য ও অভিনেত্র উভয় দ্বারা প্রতিবিম্ব কম-বেশি বিবর্ধিত হয়।
  • অভিলক্ষ্যে লক্ষ্যবস্তুর প্রতিবিম্ব তার ফোকাস দূরত্ব অপেক্ষা অধিক দূরত্বে গঠিত হয়।
  • চূড়ান্ত প্রতিবিম্ব লক্ষ্যবস্তুর সাপেক্ষে উল্টা হয়।

এ সম্পর্কিত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

১। আলোর বদলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে আর কী ব্যবহার করা যায়?

ক) ইলেকট্রন

খ) নিউট্রন

গ) পজিট্রন

ঘ) প্রোটন

সঠিক উত্তর : ক) ইলেকট্রন

২। আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র কত ধরনের?

ক) ১

খ) ২

গ) ৩

ঘ) ৪

সঠিক উত্তর : খ) ২

৩। অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ফুটের উঁচু যে অংশের সাথে বাতুটি লাগানো থাকে তাকে কী বলে?

ক) স্টেজ

খ) স্তম্ভ

গ) ড্র টিউব

ঘ) নোসপিস

সঠিক উত্তর : খ) স্তম্ভ

 

 

৪। যে ভিত্তির উপর অণুবীক্ষণ যন্ত্র দাঁড়িয়ে থাকে তাকে কী বলে?

ক) স্তম্ভ

খ) মঞ্চ

গ) পাদদেশ

ঘ) বাহু

সঠিক উত্তর : গ) পাদদেশ

৫। কোনটি জটিল অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যায়?

ক) হাতল

খ) কন্ডেনসার

গ) টানেল

ঘ) কভার

সঠিক উত্তর : খ) কন্ডেনসার

৬। জটিল অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেহনলের উপরে টানা নল বা ড্র টিউব এর অভ্যন্তরে কোনটি প্রবেশ করানো হয়?

ক) আইপিস লেন্স

খ) নাসিকা

গ) অবজেক্টিভ

ঘ) ক্লিপ

সঠিক উত্তর : ক) আইপিস লেন্স

৭। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দেহলের নিচে ঘূর্ণায়মান অংশকে কী বলে?

ক) টানানল

খ) নোসপিস

গ) অবজেকটিভ

ঘ) দর্পণ

সঠিক উত্তর : খ) নোসপিস

৮। অ্যামিবাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখলে নিচের কোনটি অনুপস্থিত থাকবে?

ক) প্লাস্টিড

খ) ক্ষণপদ

গ) প্লাজমালেমা

ঘ) গহ্বর

সঠিক উত্তর : ক) প্লাস্টিড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *