বন্যা মোকাবেলায় সিলেটে মোতায়েন সেনাবাহিনী

টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের ফলে সিলেটের বেশ কিছু অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ির ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে।

পানির উচ্চতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এমতাবস্থায় প্রশাসনের আহ্বানের প্রেক্ষিতে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।

শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, অসামরিক প্রশাসনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটে বন্যা নিয়ন্ত্রনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে আবারও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক উপচে তীব্র বেগে পানি ঢুকছে। উজানি ঢলে একের পর এক তলিয়ে যাচ্ছে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা। গ্রাম ছেড়ে লোকজন আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে। গবাদিপশুর জায়গা হয়েছে মহাসড়কে। বানভাসি মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে।

এছাড়া সারাদেশের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে জেলা সদরের প্রতিটি মহল্লা, অলিগলিতে পানি প্রবেশ করছে। প্রতিটি মহল্লার ঘরের ভেতরে হাটু পানি সড়কে কমর পানি।

সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারা বাজারসহ প্রতিটি উপজেলা পানিতে তলিয়ে তলিয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জেলার সাথে। খেটে খাওয়া মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

এদিকে সুরমা নদীর পানি ৭৫ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বন্দী হয়ে পড়ায় জেলার প্রতিটি উপজেলা,ইউনিয়নে-ইউনিয়নে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জানা যায়, সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

জেলার নিম্নাঞ্চল এলাকায় সৃষ্ট বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি ত্রাণসহায়তা পাঠাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ি ঘাট, জগন্নাথবাড়ি এলাকা, উকিল পাড়া, রপিন নগর, জামতলা, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, হাসননগর, নবীনগরসহ কয়েকটি এলাকার ঘর ও সড়কে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, মৎস্য খামার, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজার। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *