হুমায়ুন কিভাবে সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন

 হুমায়ূনের সিংহাসন পুনরুদ্ধার

সম্রাট হুমায়ূন অসীম সাহস এবং ধৈর্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি সিংহাসনে বসেই নিজ ভাইদের বিরোধিতা এবং ষড়যন্ত্রের শিকার হন।

শেরশাহের দূরদর্শিতা এবং আফগান যোদ্ধাদের প্রচণ্ড জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্য ১৫৩৯ সালে চৌসা এবং ১৫৪০ সালে বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে হুমায়ূন সিংহাসন ছাড়া হন। এরপর ১৫৪০-১৫৫৫ সাল পর্যন্ত ভারতে আফগান শাসন চলে।

→ হুমায়ূনের সিংহাসন পুনরুদ্ধার : নিম্নে সম্রাট হুমায়ূনের সিংহাসন পুনরুদ্ধার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. শুরী বংশের আত্মকলহ : ১৫৪০ সালে শেরশাহ দিল্লির মসনদে বসেন। তিনি অসীম দক্ষতায় সাম্রাজ্য পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু তিনি এক দুর্ঘটনার মারা যান ১৫৪৫ সালে।

তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সেলিম শাহ সিংহাসনে বসেন। পিতৃব্য মোহাম্মদ আদিল শাহ সেলিম (ইসলাম শাহের) উত্তরাধিকারী ফিরোজ খানকে নিহত করে ক্ষমতা দখল করেন।

২. শুরী রাজত্বে বিদ্রোহ : শুরী সম্রাট মাহমুদ সিংহাসনে বসলে রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। কারণ সম্রাট মাহমুদ তার হিন্দু মন্ত্রী হিমুর ক্রীড়ানক ছিলেন। হিমুর কুপরামর্শে রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়।

এ সময় মাহমুদের চাচাত ভাই ইব্রাহীম খাঁ বিদ্রোহ করেন এবং দিল্লি ও আগ্রা দখল করেন। কিন্তু ইব্রাহীম অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রাজিত হলে সিকান্দার শুরী সিংহাসনে বসেন ।

৩. হুমায়ূনের লাহোর দখল : একের পর এক শুরী রাজত্বে বিদ্রোহ দেখা দেয়। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ক্ষমতার বহু রদবদল ঘটে শুরীদের আত্মকলহের সুযোগে হুমায়ূন ভারতবর্ষে অভিযান চালান এবং লাহোর দখল করেন।

৪. মাহিওয়ার যুদ্ধ : হুমায়ূন লাহোর দখল করে তাঁর আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। তিনি আবারো শুরী বংশ আক্রমণের পরিকল্পনা করেন।

ফলে সরসিদ্ধের নিকট আফগান বাহিনীর মুখোমুখি হন এবং এখানে মাহিওয়ারার যুদ্ধে আফগান বাহিনী মুঘল বাহিনীর নিকট শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। ফলে সরসিন্ধের শুরী বংশ লোপ পায় ।

৫. হুমায়ূনের সিংহাসন লাভ : পরে সিকান্দার শুরী অপর একটি যুদ্ধে হুমায়ূনের মুখোমুখি হন এবং তিনি পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন। ১৫৫৫ সালের জুলাই মাসে ১৫ বছর পর ভাগ্যাহত ও নির্বাসিত মুঘল সম্রাট সাম্রাজ্যের আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হুমায়ূনের সিংহাসন লাভ আবার সিংহাসন ছাড়া হওয়া পুনরায় আবার সিংহাসন লাভ এসব ঘটনার মাধ্যমে এগিয়ে চলে ভারতবর্ষের ইতিহাস।

তবে এই ইতিহাসে দীর্ঘস্থায়ীভাবে জায়গা করে নেয় হুমায়ূনের পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা মুঘল বংশ। তিনি অপরিসীম ধৈর্য ও প্রচণ্ড সাহসিকতার সাথে তার নির্বাসনের সময় পার করেছেন।

অতঃপর তার বিচক্ষণতা, ধৈর্য আর সাহসিকতার ফলস্বরূপ দিল্লির সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হন। তবে তিনি বেশি দিন তা ভোগ করতে পারেননি।

আরো পড়ুনঃ

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “হুমায়ুন কিভাবে সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts