ফরিদের শেরখান উপাধি লাভ । ফরিদ কিভাবে শেরখান উপাধি লাভ করেন

ফরিদের শেরখান উপাধি লাভের ঘটনা বর্ণনা

শুর আফগান দলপতি শেরখান মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর পুত্র হুমায়ূনকে বিলগ্রামের যুদ্ধে পরাজিত করে শেষবারের মতো আফগান জাতি দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে উত্তর ভারত এবং বাংলায় আফগান শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।

হুমায়ূন কর্তৃক মুঘল সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করা পর্যন্ত শেরশাহ এবং তার বংশধরগণ সাম্রাজ্য শাসন করেন। শেরশাহের পুত্র ইসলাম শাহের পর বাংলায় আফগানের অন্য গোত্র কররাণীরা স্বাধীনভাবে বাংলা শাসন করেন।

ফরিদের শেরখান উপাধি লাভ : মধ্যযুগের ভারতবর্ষের ইতিহাসে শেরখান এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। শেরশাহের অভ্যুত্থান তার কর্মদক্ষতা ও প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধে সার্থক সংগ্রামের ইতিহাস।

তার পিতা হাসান জৌনপুরের শাসনকর্তা জামাল খা লোহানীর অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন। পরে জৌনপুরের অন্তর্গত | সাসারামের জায়গীরদার হন।

ফরিদের বাল্যজীবন বিমাতার অনাদর ও লাঞ্ছনার সকরুণ ইতিহাস। তার সৎ মায়ের ষড়যন্ত্রে তার পিতা তার প্রতি নিস্পৃহ ছিলেন। ফলে তিনি গৃহত্যাগে বাধ্য হন।

বাইশ বছর বয়সে তিনি শিক্ষা-সংস্কৃতির কেন্দ্র জৌনপুরে গমন করেন এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। তাঁর প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে জামাল খাঁ পিতা পুত্রের সদ্ভাব সৃষ্টি করেন।

সাসারামে প্রত্যাবর্তন করে তিনি সাসারাম ও খোয়াসপুর নামে দুটি পরগণা পরিচালনার দায়িত্ব পান। তার দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তার সৎমা ষড়যন্ত্র শুরু করেন।

ফলে তিনি আবার গৃহত্যাগে বাধ্য হন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি দিল্লির সুলতান ইব্রাহীম লোদির নিকট থেকে সাসারামের জায়গীরদার হন।

১৫২২ সালে বিহারের সুলতান দরিয়া খান লোহানীর পুত্র বাহার খানের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন ।একবার তিনি সুলতান বাহার খানের সাথে শিকারে যান এবং কারো সাহায্য ছাড়া একাই একটা বাঘ মেরে ফেলেছিলেন।

তাঁর সাহসিকতার জন্য জামাল খাঁ তাঁকে শের খান উপাধি প্রদান করেন। ফলে ফরিদ নতুনভাবে শের খাঁ নামে পরিচিত হন। তবে তাঁর ভাগ্য বেশি দিন সুপ্রসন্ন রইল না।

শত্রুদের প্ররোচনায় তিনি সাসারামের জায়গীর হারান। পরবর্তীতে ইব্রাহীম লোদী বাবরের নিকট পানিপথের প্রান্তরে পরাজিত হন।

ফলে তিনি মুঘল বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে মুঘল সম্রাটের অধীনে সাসারামের জায়গীর পুনরায় লাভ করেন। পরবর্তীতে শের খা মুঘল সম্রাট হুমায়ূনকে পরাজিত করে শেরশাহ উপাধি নিয়ে দিল্লি শাসন করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শের খা পরবর্তীতে শেরশাহ নিজ যোগ্যতায় সামান্য জায়গীরদারের ছেলে হয়েও পরবর্তীতে দিল্লি শাসন করেন। শেরশাহের বাল্য নাম ছিল ফরিদ। তাঁর বাল্যকাল এতো সহজ ছিল না।

বিমাতার অনাদর অবহেলা তাকে চরিত্রের দৃঢ়তা প্রদান করে। ফলে তিনি বারবার জায়গীর হারান। নিজের বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা দিয়ে তিনি পরে দিল্লি শাসনে সক্ষম হয়েছিলেন।

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “ফরিদের শেরখান উপাধি লাভ । ফরিদ কিভাবে শেরখান উপাধি লাভ করেন” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

5/5 - (35 votes)

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.