হুমায়ুননামা কে ছিলেন। হুমায়ুননামার পরিচয় দাও

হুমায়ুননামা সম্পর্কে আলোচনা

সম্রাট বাবর ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার পরপরই এই রাজবংশ অত্যন্ত সুনামের সাথে ভারতে একচ্ছত্র শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল।

ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে মুঘল শাসন একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মুঘল ইতিহাস চর্চার প্রথম দিকে চরিত্রভিত্তিক ইতিহাস রচিত হতো। হুমায়ুননামা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থ।

হুমায়ুননামার পরিচয় : হুমায়ূননামার লেখক ছিল গুলবদন বেগম। তিনি তার ভাইয়ের ছেলে সম্রাট আকবরের অনুরোধক্রমে ১৫৮৭ সালে ফার্সি ভাষায় এই গ্রন্থটি রচনা করেন।

গুলবদন বেগম সম্রাট বাবরের কন্যা ও হুমায়ূনের বোন ছিলেন। হুমায়ুননামার সম্রাট বাবর, হুমায়ূন ও আকবরের শাসনামলের কিছু অংশ আলোচনা করা হয়েছে।

এই গ্রন্থ রচনায় গুলবদন বেগম অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তার মাতৃভাষা তুর্কি হলেও তিনি ফার্সি ভাষায় এই গ্রন্থখানি লিপিবদ্ধ করেছেন।

হুমায়ুননামায় সম্রাট বাবরের বর্ণনা : সম্রাট বাবর ছিলেন গুলবদন বেগমের পিতা। তিনি তাঁর গ্রন্থে সম্রাট বাবর সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি তার গ্রন্থে বলেছেন আমার পিতা আগ্রহ নগরী ও এর শহরতলীকে অপছন্দ করতেন।

তাই গ্রীষ্মকালে বাবর তার পিতৃদেশ আফগানিস্তানে চলে যেতেন। হুমায়ূননামায় বাবরের সন্তানভক্তির কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

হুমায়ূনের জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন। অত্যন্ত সুন্দরভাবে বাবরের বিভিন্ন ঘটনা এই গ্রন্থে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।

সম্রাট হুমায়ূন ও অন্যান্য বিষয়ের বর্ণনা : হুমায়ূননামা সম্রাট হুমায়ূনের আমলের বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। গুলবদন বেগম হুমায়ূনের বৈমাত্রেয় বোন হলেও তিনি তাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন।

এই গ্রন্থে বাল্যকালে হুমায়ূনের প্রেম অতঃপর গুলবদনের মাতা দিলদার বেগমের সুপারিশে বিয়ে। শেরশাহের সাথে হুমায়ূনের যুদ্ধ, অতঃপর যুদ্ধে পরাজিত হয়ে স্ত্রী হামিদা বানুকে নিয়ে পারস্যে পলায়ন- এগুলো সবই নিখুঁতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

তিনি এই গ্রন্থে মুঘল হেরেমের প্রেম বিরহের কথা, দ্বন্দ্ব, সুখ-দুঃখের স্মৃতি অত্যন্ত সাবলীলভাবে বর্ণনা করেছেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুঘল আমলে চরিত গ্রন্থের মধ্যে হুমায়ূননামা অন্যতম। এই গ্রন্থে সম্রাট বাবর হুমায়ূন ও আকবরের শাসনামলে হেরেমে ঘটে যাওয়া কাহিনি অত্যন্ত সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

গুলবদন বেগম হুমায়ূনের ভগ্নি হওয়ার কারণে এই গ্রন্থখানি রচনা করতে তার কোনো বেগ পেতে হয়নি। মুঘল ইতিহাস চর্চায় হুমায়ূননামা গ্রন্থের গুরুত্ব অপরিসীম ।

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “হুমায়ুননামা কে ছিলেন। হুমায়ুননামার পরিচয় দাও” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts