মাইটোকন্ড্রিয়া কি? মাইটোকন্ড্রিয়া এর গঠন ও কাজ।

মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বা পাওয়ার হাউজ বলা হয়। বিজ্ঞানী বেন্দা ১৮৯৮ সালে মাইটোকন্ড্রিয়ার নামকরণ করেন।
কোষের সাইটোপ্লাজম এর মাঝে বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থিত ধুসর বর্ণের, কোষের সকল জৈবিক কার্যাবলী সম্পাদনের জন্যে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনকারী বিশেষ ধরনের অঙ্গাণুগুলোকেই বলা হয় মাইটোকন্ড্রিয়া। মাইটোকন্ড্রিয়া সাধারনত দন্ডাকার, গোলাকার বা সুত্রাকার হতে পারে। প্রতিকোষে এদের সংখ্যা ২০০-৪০০ টি হয়ে থাকে।

মাইটোকন্ড্রিয়ার গঠনঃ
ইলেকট্রন অনুবীক্ষন যন্ত্রে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়যে, একটি আদর্শ মাইটোকন্ড্রিয়া নিম্নলিখিত অংশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। যথাঃ-
আবরণীঃ প্রতিটি মাইটোকন্ড্রয়নের দেহ লিপোপ্রোটিন নির্মিত দুই স্তর বিশিষ্ট ঝিল্লী দিয়ে ঘেরা থাকে। এদের বাইরের স্তরটি মসৃণ কিন্তু ভিতরের স্তরটি কেন্দ্রের দিকে অনেক ভাজ হয়ে থাকে। ভেতরের মেমব্রেনের এ ভাঁজগুলোকে বলা হয় ক্রিষ্টি।
মাইটোকন্ড্রিয়া কি? মাইটোকন্ড্রিয়া এর গঠন ও কাজ।
প্রকোষ্ঠঃ দুই স্তর বিশিষ্ট ঝিল্লীর মাঝখানের ফাকাস্থানকে বলা হয় বহিঃস্থ কক্ষ বা আন্তঃমেমব্রেন ফাঁক এবং ভেতরের মেমব্রেনকে বলা হয় অভ্যন্তরীণ কক্ষ বা ম্যাট্রিক্স।
ATP-Synthesis ও ETS: ক্রিস্টিতে স্থানে স্থানে ATP-Synthesis নামক গোলাকার বস্তু আছে। এতে ATP সংশ্লেষিত হয়। সমস্ত ক্রিস্টিব্যাপী অনেক ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম বা ETS অবস্থিত। পুর্বে এদের একসাথে অক্সিসোম নামে অভিহিত করা হত।

ম্যাট্রিক্স বা মাতৃকাঃ মাইটোকন্ড্রিয়ার ভিতরে এক ধরনের তরল পদার্থ থাকে, যাকে ম্যাট্রিক্স বা মাতৃকা বলে। এ মাতৃকা লিপিড বা প্রোটিন দিয়ে তৈরী। এতে ৭০ টিরও অধিক এনজাইম এবং ১৪ টির মত কো-এনজাইম থাকে।
মাইটোকন্ড্রিয়াল DNA:মাইটোকন্ড্রিয়াল DNA  একটি চক্রাকার দ্বিসুত্রক অণু। স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের জন্যে একে মাইটোকন্ড্রিয়াল DNA বলে।

রাইবোসোমঃ মাইটোকন্ড্রিয়াতে এনজাইম সংশ্লেষের জন্যে 70S রাইবোসোম পাওয়া যায়।

মাইটোকন্ড্রিয়ার কাজঃ
i.কোষের সমস্ত কাজের জন্য শক্তি উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ করা।
ii.শ্বসনের জন্যে প্রয়োজনীয় এনজাইম, কো-এনজাইম প্রভৃতি ধারন করা।
iii.শ্বসনের বিভিন্ন পর্যায় যেমন- ক্রেবস চক্র, ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট, অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন সম্পন্ন করা।
iv.নিজস্ব DNA ও RNA তৈরী করা।
v. স্নেহ বিপাকে সাহায্য করা।

শেষ কথা:
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “মাইটোকন্ড্রিয়া কি? এর গঠন ও কাজ।” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

5/5 - (33 votes)

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.