বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ

বাংলাদেশের সংবিধান একটি লিখিত সংবিধান। সংবিধানটি ১৯৭২ সালে প্রনীত হয়। একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দলিল হিসেবে এটি কার্যকর হয়ে আসছে। সংবিধানটিতে একটি প্রস্তাবনা, ১১ টি অধ্যায় ও ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ, এবং ৭ টি তফসিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সংবিধানের ১১ টি অধ্যায় বা ভাগ। যথা: প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা, বিচার বিভাগ, নির্বাচন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশের কর্মবিভাগ, জরুরী বিধান, সংবিধান সংশোধন, এবং অন্যন্য।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ সমূহ

নিম্মে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ দেওয়া হল।
প্রথম ভাগ – প্রজাতন্ত্র
১. প্রজাতন্ত্র (The Republic)
বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র যা ‘‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’’ নামে পরিচিত হইবে।
২. প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা
২ক.  রাষ্ট্রধর্ম
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন।
৩. রাষ্ট্রভাষা
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা।

৪. জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক

  • (১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সােনার বাংলার প্রথম দশ চরণ
  • (২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত।
  • (৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্য শীর্ষ বেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর সংযুক্তপত্র, তাহার । উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা
৪ক. জাতির পিতার প্রতিকৃতি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারী ও আধাসরকারী অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।
৫. রাজধানী
প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা।
৬. নাগরিকত্ব
  • (২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন।
৭. সংবিধানের প্রাধান্য
    (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ
৭ক. সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ।
সংবিধানের মৌলিক বিষয়াবলী সংশােধনের অযােগ্য

দ্বিতীয় ভাগঃ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি 

৮. মূলনীতিসমূহ
  • (১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই নীতিসমূহ এবং তৎসহ এইনীতি সমূহ হইতে উদ্ভূত এইভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে।
  • (২) এইভাগে বর্ণিত নীতিসমূহ বাংলাদেশ পরিচালনার মূলসূত্র হইবে, আইন প্রণয়নকালে রাষ্ট্র তাহা প্রয়ােগ করিবেন, এই সংবিধান ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইন ব্যাখ্যাদানের ক্ষেত্রে তাহা নির্দেশক হইবে, তবে এই সকল নীতি সকল আদালতের মাধ্যমে বলবৎযােগ্য হইবে না।
৯. জাতীয়তাবাদ
ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।
১০. সমাজতন্ত্র ও শােষণমুক্তি
মানুষের উপর মানুষের শােষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজতাভ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।
১১.  গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
১২. ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের জন্য নিম্মোক্ত প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
  • (ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা বিলোপ করা হবে।
  • (খ) রাষ্ট্র কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান করা হবে না।
  • (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
  • (ঘ) কোন বিশেষ ধর্মপালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলােপ করা হইবে।
১৩. মালিকানার নীতি
১৪. কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি
১৫. মৌলিক প্রয়ােজনের ব্যবস্থা
১৬. গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব
১৭. অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা
১৮. জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা
১৮ক. পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন
রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিধান করিবেন।
১৯. সুযােগের সমতা
  • (১) সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্র চেষ্টা করবে।
  • (৩) জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযােগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।
২০. অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম
২১. নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য
সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য।
২২. নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ
রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করবেন
২৩. জাতীয় সংস্কৃতি
২৩ক. উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গােষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ।
রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গােষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
২৪. জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন
২৫. আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন

তৃতীয় ভাগ: মৌলিক অধিকার

২৬. মৌলিক অধিকারের অসামঞ্জস্য আইন বাতিল
২৭. আইনের দৃষ্টিতে সমতা 
সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।
২৮. ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ প্রভৃতি কারণে বৈষম্য
  • (১) কেবল ধর্ম, গােষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।
  • (২) রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।
  • (৪) নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবেন না।
২৯. সরকারী নিয়ােগ লাভের সুযােগের সমতা।
প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়ােগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযােগের সমতা থাকবে।
৩০. বিদেশী খেতাব প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ
রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমােদন ব্যতীত কোন নাগরিক কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নিকট হইতে কোন খেতাব, সম্মান পুরস্কার বা ভূষণ গ্রহণ করিবেন না।
৩১. আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার।
৩২. জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার।
৩৩. গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে রক্ষকবচ।
৩৪. জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরণ।
৩৫. বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে নীতি।
৩৬. চলাফেরার স্বাধীনতা।
৩৭. সমাবেশের স্বাধীনতা।
৩৮. সংগঠনের স্বাধীনতা।
৩৯. চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক-স্বাধীনতা
  • (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা।
  • (২)   ক- বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা।
  • খ- সংবাদপত্রের স্বাধীনতা।
৪০. পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা
৪১. ধর্মীয় স্বাধীনতা
৪২. সম্পত্তির অধিকার
  • (১) প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর বা অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থা করার অধিকার থাকবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাবেনা।
৪৩. গৃহ ও যােগাযােগের সংরক্ষণ
৪৪. মৌলিক অধিকারের প্রয়োগ
৪৫. শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন
৪৬. দায়মুক্তি প্রদানের ক্ষমতা
৪৭. কয়েকটি আইনের হেফাজত
  • (৩) গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতা বিরােধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারীতে সােপর্দ কিংবা দণ্ডদান বিধান সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবেনা।
চতুর্থ ভাগ: নির্বাহী বিভাগ
১ম পরিচ্ছেদ- রাষ্ট্রপতি 
৪৮. রাষ্ট্রপতি 
  • (১) রাষ্ট্রে একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।
  • (২) রাষ্ট্রপ্রধানরূপে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য সকল ব্যক্তির উর্ধ্বে স্থান লাভ করিবেন।
  • (৩) এই সংবিধানের ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়ােগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।
  • (৪) কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইবার যােগ্য হইবেন না যদি তিনি-
                (ক) পঁয়ত্রিশ বৎসরের কম বয়স্ক হন। অথবা,
                (খ) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যােগ্য না হন। অথবা,
                (গ) কখনও এই সংবিধানের অধীন অভিসংশন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ হইতে                                     অপসারিত হইয়া থাকেন।
৪৯. ক্ষমার অধিকার
কোন আদালত, ট্রাইবুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোন দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।
৫০. রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ 
  • (১) রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসরের মেয়াদে তাঁর পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।
  • (২) একাদিক্রমে হউক বা না হউক দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতির পদে কোন ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকবেন না।
  • (৩) স্পীকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযােগে রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।
৫১. রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি
  • (২)রাষ্ট্রপতি তাহার দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া কিংবা অনুরূপ বিবেচনায় কোন কার্য করিয়া থাকিলে বা না করিয়া থাকিলে সেইজন্য তাঁহাকে কোন আদালতে জবাবদিহি করিতে হইবে।
৫২. রাষ্ট্রপতির অভিশংসন
  • (১) সংবিধান লংঘন বা গুরুতর অসদাচারণের অভিযােগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাইতে পারিবে।
  • (৪) অভিযােগ বিবেচনার পর মােট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভােটে অভিযােগ যথার্থ বলিয়া ঘােষণা করিয়া সংসদ কোন প্রস্তাব গ্রহণ করিলে প্রস্তাব গৃহীত হইবার তারিখে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে।
৫৩. অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ
৫৪. অনুপস্থিতি ও অন্যন্য সময়ে রাষ্ট্রপতি পদে স্পীকার
রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ক্ষেত্রমত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কিংবা রাষ্ট্রপতি পুনরায় স্বীয় কার্যাভাবে গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্পীকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করিবেন।
২য় পরিচ্ছেদ- প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা 
৫৫. মন্ত্রিসভা 
  • (২) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বা তাহার কর্তৃত্বে এই সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হইবে।
  • (৩) মন্ত্রীসভা যৌথভাবে সংসদের কাছে দায়ী থাকবে ।
  • (৪) সরকারের সকল নির্বাহী ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতির নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে।
৫৬. মন্ত্রী
  • (১) দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী থাকিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকিবেন।
  • (২) প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদিগকে রাষ্ট্রপতি নিয়ােগ দান করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তাহাদের সংখ্যার অন্যূন নয়-দশমাংশ সংসদ সদস্যগণের মধ্য থেকে নিযুক্ত হবেন এবং এক দশমাংশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যােগ্য ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে মনােনীত হইতে পারিবেন।
৫৭. প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ
৫৮. মন্ত্রীদের পদের মেয়াদ
৩য় পরিচ্ছেদ- স্থানীয় শাসন
 
৫৯. স্থানীয় শাসন
৬০. স্থানীয় শাসন প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা
৪র্থ পরিচ্ছেদ- প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ 
 
৬১. সর্বাধিনায়ক
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের সর্বাধিনায়কতা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত হইবে ।
৬২. প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি
৬৩. যুদ্ধ
সংসদের অনুমতি ব্যতীত যুদ্ধ ঘােষণা করা যাইবে না কিংবা প্রজাতন্ত্র কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করিবেন না।
 ৫ম পরিচ্ছেদ- অ্যাটর্নি জেনারেল
৬৪. অ্যাটর্নি জেনারেল
  • (১) সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি হইবার যােগ্য কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের এ্যাটার্নি জেনারেল পদে নিয়ােগ নিয়ােগ দান করবেন ।
  • (২)এ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপতি দ্বারা প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করবে।
  • (৪) রাষ্ট্রপতির সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্বীয় পদে বহাল থাকবেন এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত পারিশ্রমিক লাভ করবেন।
পঞ্চম ভাগ: আইন সভা
১ম পরিচ্ছেদ- সংসদ
 
৬৫. সংসদ প্রতিষ্ঠা
  • (১) জাতীয় সংসদ’ (House of the nation) নামে বাংলাদেশের একটি সংসদ থাকিবে এবং এই সংবিধানের বিধানবলী সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত হইবে।
  • (২) একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফায় কার্যকরতাবলে উক্তদফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত ইবে। সদস্যগণ ‘সংসদ সদস্য’ বলে অভিহিত হবেন।
  • (৩) (ক) সংবিধান (পঞ্চদশ) আইন, ২০১১ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত তিনশত সদস্য এবং ৩ দফায় বর্ণিত পঞ্চাশ মহিলা সদস্য লইয়া সংসদ গঠিত হইবে।
  • (৪) রাজধানীতে সংসদের আসন থাকবে।

৬৬. সংসদে নির্বাচিত হইবার যােগ্যতা ও অযােগ্যতা

  • (১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং তাহার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হইলে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যােগ্য হইবেন।
  • (২) কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যােগ্য হইবেন না যদি-

(ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাহাকে অপ্রকৃতস্থ বলিয়া ঘােষণা করেন।

(খ) তিনি দেউলিয়া ঘােষিত হইবার পর দায় হতে অব্যাহতি লাভ করিয়া না থাকেন।

(গ) তিনি কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেন।
(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন ২ বৎসরকাল কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।
৬৭. সংসদের আসন শূন্য হওয়া
কোন সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হইবে যদি-
  • (ক) তাঁহার নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৯০ দিনের মধ্য তিনি তৃতীয় তফসিলে নির্ধারিত শপথগ্রহণ এবং শপথপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে অসমর্থ হন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতে পারিবেন ।
  • (খ) সংসদের অনুমতি না লইয়া একাদিক্রমে ৯০ বৈঠক দিবস অনুপস্থিত থাকেন।
  • (গ) সংসদ ভেঙ্গে যায়।
৬৮. সংসদ সদস্যের পারিশ্রমিক
৬৯. শপথগ্রহণের পূর্বে আসন গ্রহণ বা ভােটদান করলে সদস্যের অর্থদণ্ড
৭০. পদত্যাগ কারণে আসন শূন্য হওয়া।
কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনােনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি উক্তদল হইতে পদত্যাগ করেন বা সংসদে উক্তদলের বিপক্ষে ভােটদান করেন, তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে।
৭১. দ্বৈত সদস্যতায় বাধা
৭২. সংসদের অধিবেশন
  • (১) সরকারী বিজ্ঞপ্তি দ্বারা রাষ্ট্রপতি সংসদ আহবান, স্থগিত ও ভঙ্গ করিবেন। থাকে যে, ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার (ক) উপদফায় উল্লিখিত নব্বই দিন সময় ব্যতীত অন্য সময়ে সংসদের এক অধিবেশনের সমাপ্তি এবং পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্য ৬০ দিনের অতিরিক্ত বিরতি থাকবেনা।
  • (২) সংসদ সদস্যদের যে কোন সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘােষিত হইবার ৩০ দিনের মধ্য বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ আহবান করা হইবে।
  • (৩) রাষ্ট্রপতি পূর্বে ভাঙ্গিয়া দিয়া না থাকিলে প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৫ বৎসর অতিবাহিত হইলে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাবে।
৭৩. সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী
২) সংসদ সদস্যদের প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনের পর প্রথম অধিবেশনের সূচনায় এবং প্রত্যেক বছর প্রথম অধিবেশনের সূচনায় রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দান করিবেন।
৭৩কঃ সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রিগণের অধিকার
৭৪. স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার
৭৫. কার্যপ্রণালী বিধি, কোরাম প্রভৃতি
(১) এই সংবিধান সাপেক্ষে-
(খ) উপস্থিত ও ভােট দানকারী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভােটে সংসদে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে। তবে সমসংখ্যক ভােটের ক্ষেত্রে তিনি (স্পীকার) নির্ণায়ক ভােট (Casting vote) প্রদান করিবেন।
(২) সংসদের বৈঠক চলাকালে কোন সময় উপস্থিত সদস্য সংখ্যা ষাটের কম বলিয়া যদি         সভাপতির দৃষ্ট আকর্ষণ করা হয়, তাহা হইলে তিনি অন্যূন ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না         হওয়া পর্যন্ত বৈঠক স্থগিত রাখিবেন কিংবা মূলতবী করিবেন।
৭৬. সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ
সংসদ সদস্যদের মধ্য হইতে সদস্য লইয়া সংসদ নিম্নলিখিত স্থায়ী কমিটি নিয়ােগ করিবেন-
  • (ক) সরকারী হিসাব কমিটি
  • (খ) বিশেষ অধিকার কমিটি
  • (গ) সংসদের কার্যপ্রণালী বিধিতে নির্দিষ্ট অন্যান্য স্থায়ী কমিটি।
৭৭. ন্যায়পাল
  • (১) সংসদ আইন দ্বারা ন্যায়পালের পদ প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করিতে পারিবেন।
  • (২) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালকে কোন মন্ত্রণালয়, সরকারী কর্মচারী বা সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের যে কোন কার্য সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাসহ যেরূপ ক্ষমতা কিংবা যেরূপ দায়িত্ব প্রদান করিবেন, ন্যায়পাল সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়ােগ বা দায়িত্ব পালন করিবেন।
৭৮. সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি
৭৯. সংসদ সচিবালয়
২য় পরিচ্ছেদ- আইন প্রণয়ন ও অর্থ সংক্রান্ত পদ্ধতি 
 
৮০. আইন প্রণয়ন পদ্ধতি
  • (৩) রাষ্ট্রপতির নিকট কোন বিল পেশ করিবার পর ১৫ দিনের মধ্য তিনি তাহাতে সম্মতি দান করিবেন কিংবা অর্থবিল ব্যতীত অন্য কোন বিলের ক্ষেত্রে বিলটি বা তাহার কোন বিশেষ বিধান পুনর্বিবেচনার কিংবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্দেশিত কোন সংশােধনী বিবেচনার অনুরােধ জ্ঞাপন করিয়া একটি বার্তাসহ তিনি বিলটি সংসদে ফেরত দিতে পারবেন; এবং রাষ্ট্রপতি তাহা করিতে অসামর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হবে।
৮১. অর্থবিল
এই ভাগে ‘অর্থবিল’ বলিতে কেবল নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের সকল বা যে কোন একটি সম্পর্কিত বিধানাবলী-সংবলিত বিল বুঝাইবেঃ
  • (ক) কোন কর আরােপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরণ।
  • (খ) সরকার কর্তৃক ঋণগ্রহণ বা গ্যারন্টি দান কিংবা সরকারের আর্থিক দায় দায়িত্ব সম্পর্কিত আইন সংশােধন।
  • (গ) সংযুক্ত তহবিলের রক্ষণাবেক্ষণ, অনুরূপ তহবিলে অর্থ প্রদান বা অনুরূপ তহবিল হইতে অর্থ দান বা নির্দিষ্টকরণ।
  • (ঘ) সংযুক্ত তহবিলের উপর দায় আরােপ কিংবা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলােপ।
  • (ঙ) সংযুক্ত তহবিল বা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলােপ।
  • (চ) উপরি-উক্ত উপদফাসমূহে নির্ধারিত যে কোন বিষয়ের অধীন অনুষাঙ্গিক বিষয়।
৮২. আর্থিক ব্যবস্থাবলীর সুপারিশ
কোন অর্থ বিল অথবা সরকারী অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত আছে এমন কোন বিল রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ব্যতীত সংসদে উপস্থাপন করা যাবেনা।
৮৩. সংসদের আইন ব্যতীত করারােপে বাধা
৮৪. সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব
  • (১) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল ঋণ এবং ঋণ পরিশােধ হইতে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অর্থ একটি মাত্র তহবিলের অংশে পরিণত হইবে এবং তাহা ‘সংযুক্ত তহবিল’ নামে অভিহিত হবে।
৮৫. সরকারী অর্থের নিয়ন্ত্রণ
৮৬. প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে প্রদেয় অর্থ
৮৭. বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি
৮৮. সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়
৮৯. বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি
৯০. নির্দিষ্টকরণ আইন
৯১. সম্পূরক ও অতিরিক্ত মঞ্জুরি
৯২. হিসাব ঋণ প্রভৃতির ওপর ভােট

৩য় পরিচ্ছেদ- অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা

৯৩. অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা
  • (১) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় অথবা উহার অধিবেশনকাল ব্যতীত কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়ােজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত পরিস্থিতিতে যেরূপ প্রয়ােজনীয় বলিয়া মনে করিবেন, সেইরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে পারিবেন এবং জারী হইবার সময় হইতে অনুরূপভাবে প্রণীত অধ্যাদেশ সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন হইবে,… ।
  • (২) কোন অধ্যাদেশ জারী হইবার পর অনুষ্ঠিত সংসদের প্রথম বৈঠকে তাহা উপস্থাপিত হইবে এবং ইতঃপূর্বে বাতিল হইয়া না থাকিলে অধ্যাদেশটি অনুরূপভাবে উপস্থাপনের পর ৩০ দিন অতিবাহিত হইলে কিংবা অনুরূপ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে তাহা অনুমােদন করিয়া সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হইলে অধ্যাদেশটির কার্যকারিতা লােপ পাইবে।

ষষ্ঠ ভাগ: বিচার বিভাগ

১ম পরিচ্ছেদ- সুপ্রীম কোর্ট
৯৪. সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা
  • (১) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট’ নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে।
  • (২) ধারায় বলা হয়েছে, “প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগে আসনগ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রপতি যেইরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়ােগের প্রয়ােজন বােধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রীম কোর্ট গঠিত হইবে।” বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি রয়েছেন ১১ জন।
৯৫. বিচারক নিয়ােগ
  • (১) প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।
  • (২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক না হইলে, এবং (ক) সুপ্রীম কোর্টে অন্যূন ১০ বৎসরকাল এ্যাডভােকেট না করিয়া থাকলে। (খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্য অন্যূন ১০ বছরকাল কোন বিচার বিভাগীয় পদে অধিষ্ঠান না করিয়া থাকিলে, অথবা, (গ) সুপ্রীম কোর্টে বিচারক পদে নিয়ােগ লাভের জন্য আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য যােগ্যতা না থাকিলে তিনি বিচারক পদে নিয়ােগ লাভের যােগ্য হইবেন না।
৯৬. বিচারকদের পদের মেয়াদ
  • (১) কোন বিচারক ৬৭ বৎসর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
  • (২) এই অনুচ্ছেদের নিম্নরূপ বিধানবলী অনুযায়ী ব্যতীত কোন বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইবে না।
  • (৩) একটি সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থাকিবে যাহা এই অনুচ্ছেদে “কাউন্সিল” বলিয়া উল্লেখিত হইবে এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকের মধ্যে পরবর্তী দুইজন কর্মে প্রবীণ তাঁহাদের লইয়া গঠিত হইবে।
৯৭. অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি
৯৮. সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারকগণ
৯৯. বিচারকগণের অক্ষমতা
১০০. সুপ্রীম কোর্টের আসন
১০১. হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার
১০২. কতিপয় আদেশ ও নির্দেশ প্রভৃতি দানের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা।
 
১০৩. আপীল বিভাগের ক্ষমতা।
১০৪. আপীল বিভাগের পরােয়ানা জারী ও প্রয়োগ।
১০৫. আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা।
১০৬. সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার।
১০৭. সুপ্রীম কোর্টের বিধি-প্রণয়ন ক্ষমতা।
১০৮. কোর্ট অব রেকর্ড রূপে সুপ্রীম কোর্ট।
১০৯. আদালত সমূহের উপর তত্ত্বাবধায়ন ও নিয়ন্ত্রণ।
 
১১০. অধস্তন বিভাগ হইতে হাইকোর্ট বিভাগের মামলা স্থানান্তর।
১১১. সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা।
১১২. সুপ্রীম কোর্টকে সহায়তা
১১৩. সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারী
২য় পরিচ্ছেদ- অধঃস্তন আদালত
১১৪. অধঃস্তন আদালতসমূহ প্রতিষ্ঠা
১১৫. অধঃস্তন আদালতে নিয়ােগ
১১৬. অধঃস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা
১১৬ক. বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন
 
৩য় পরিচ্ছেদ- প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল
১১৭. প্রশাসনিক ট্রাইবুনালসমূহ

সপ্তম ভাগ: নির্বাচন

১১৮. নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা
কোন নির্বাচন কমিশনারের পদের মেয়াদ তাঁহার কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর কাল হইবে ।
১১৯. নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব
১২০. নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ
১২১. প্রতিটি এলাকার জন্য একটি মাত্র ভােটার তালিকা
১২২. ভােটার তালিকায় নামভুক্তির যােগ্যতা
  • (২) কোন ব্যক্তি সংসদের নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত কোন নির্বাচনী এলাকায় ভােটার তালিকাভূক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি-
  • (ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন।
  • (খ) তাঁহার বয়স ১৮ বৎসরের কম না হয়।
  • (গ) কোন যােগ্য আদালত কর্তৃক তাঁহার সম্পর্কে অপ্রকৃতস্থ বলিয়া ঘােষণা বহাল না থাকিয়া থাকে।
  • (ঘ) তিনি ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বা আইনের দ্বারা ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বিবেচিত হন।
  • (ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যােগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত ইইয়া না থাকেন।
১২৩. নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়
  • (১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখে পূর্ববর্তী ৯০ দিন হইতে ৬০ দিনের মধ্য শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
  • (২) মৃত্যু, পদত্যাগ বা অপসারণের ফলে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার পর ৯০ দিনের মধ্য, তাহা পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে ।
  • (৩) সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।

(ক) মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে।

(খ) মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদ ভাঙিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙিয়া যাইবার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে

  • (৪) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদের কোন সদস্যপদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার ৯০ দিনের মধ্য উক্ত শূন্যপদ পূরণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
১২৪. নির্বাচন সম্পর্কে সংসদে বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
অষ্টম ভাগ: মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক 
 
১২৭. মহা হিসাব নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা
  • (১)বাংলাদেশে একজন মহানিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (অতঃপর ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক’ নামে অভিহিত) থাকিবেন এবং তাহাকে রাষ্ট্রপতি নিয়ােগদান করিবেন।
১২৮. মহা হিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব
১২৯. মহা হিসাব নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ
  • (১)মহাহিসাব নিরীক্ষক তাহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর বা তাহার ৬৫ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্য যাহা অগ্রে ঘটে, সেইকাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
১৩০. অস্থায়ী মহা হিসাব নিরীক্ষক
১৩১. প্রজাতন্ত্রের হিসাব রক্ষার আকার ও পদ্ধতি
১৩২. সংসদে মহা নিরীক্ষকের হিসাব উপস্থাপন
নবম ভাগ: বাংলাদেশের কর্মবিভাগ 
 
১ম পরিচ্ছেদ- কর্মবিভাগ
১৩৩. নিয়ােগ ও কর্মের শর্তাবলী
১৩৪. কর্মের মেয়াদ
১৩৫. অসামরিক সরকারী কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি
১৩৬. কর্মবিভাগ পুনর্গঠন
২য় পরিচ্ছেদ- সরকারী কর্মকমিশন
 
১৩৭. কমিশন প্রতিষ্ঠা
আইনের দ্বারা বাংলাদেশের জন্য এক বা একাধিক সরকারী কর্মকমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান করা যাইবে এবং একজন সভাপতিকে ও আইনের দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ অন্যান্য সদস্যকে লইয়া প্রত্যেক কমিশন গঠিত হইবে।
১৩৮. সদস্য নিয়ােগ
  • (১)প্রত্যেক সরকারী কর্মকমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক কমিশনের যতদূর সম্ভব অর্ধেক (তবে অর্ধেকের কা নহে) সংখ্যক সদস্য এমন ব্যক্তিগণ হইবেন, যাহারা ২০ বৎসর বা ততােধিককাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে কোন সময়ে কার্যরত কোন সরকারের কর্মে কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
১৩৯.পদের মেয়াদ
  • (১) কোন সরকারী কর্মকমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য তাহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর বা তাঁহার ৬৫ বৎসর পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্যে যাহা অগ্রে ঘটে, সেই কাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
১৪০. কমিশনের দায়িত্ব
১৪১.  বার্ষিক রিপাের্ট
  • (১) প্রত্যেক কমিশন প্রতি বৎসর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তাহার পূর্বে পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরে স্বীয় কার্যাবলী সম্পর্কে রিপাের্ট প্রস্তুত করিবেন এবং তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবেন।
নবম-ক ভাগ: জরুরী বিধানাবলী
১৪১ক. জরুরী অবস্থা ঘােষণা
১৪১খ.  জরুরী অবস্থার সময় সংসদের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ।
১৪১গ. জরুরী অবস্থার সময় মৌলিক অধিকার সমূহ স্থগিতকরণ
দশম ভাগ : সংবিধান সংশােধন
১৪২. সংবিধানে বিধান সংশােধনের ক্ষমতা
একাদশ ভাগ: বিবিধ
 
১৪৩. প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি
১৪৪. সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব
১৪৫. চুক্তি ও দলিল
১৪৫ক. আন্তর্জাতিক চুক্তি
১৪৬. বাংলাদেশের নামে মামলা
‘বাংলাদেশ’ এই নামে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইতে পারিবে।
১৪৭. কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি
১৪৮. পদের শপথ
১৪৯. প্রচলিত আইনের হেফাজত
১৫০. ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী
১৫১. রহিতকরণ
১৫২. ব্যাখ্যা
১৫৩. প্রবর্তন, উল্লেখ ও নির্ভরযােগ্য পাঠ
  • (১) এই সংবিধানকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান বলিয়া উল্লেখ করা হইবে এবং ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে ইহা বলবৎ হইবে, যাহাকে এই সংবিধানে ‘সংবিধান প্রবর্তন’ বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে।
  • (২) বাংলায় এই সংবিধানের একটি নির্ভরযােগ্য পাঠ ও ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযােগ্য অনুমােদিত পাঠ থাকবে এবং ..।
  • (৩) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্য বিরােধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাবে।
তথ্যসূত্র: আরিফ খান, ‘‘বাংলাদেশের সংবিধান’’

Similar Posts