বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ
সংবিধানের অনুচ্ছেদ সমূহ
৪. জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক
- (১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সােনার বাংলার প্রথম দশ চরণ
- (২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত।
- (৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্য শীর্ষ বেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর সংযুক্তপত্র, তাহার । উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা
- (২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন।
দ্বিতীয় ভাগঃ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
- (১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই নীতিসমূহ এবং তৎসহ এইনীতি সমূহ হইতে উদ্ভূত এইভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে।
- (২) এইভাগে বর্ণিত নীতিসমূহ বাংলাদেশ পরিচালনার মূলসূত্র হইবে, আইন প্রণয়নকালে রাষ্ট্র তাহা প্রয়ােগ করিবেন, এই সংবিধান ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইন ব্যাখ্যাদানের ক্ষেত্রে তাহা নির্দেশক হইবে, তবে এই সকল নীতি সকল আদালতের মাধ্যমে বলবৎযােগ্য হইবে না।
- (ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা বিলোপ করা হবে।
- (খ) রাষ্ট্র কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান করা হবে না।
- (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
- (ঘ) কোন বিশেষ ধর্মপালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলােপ করা হইবে।
- (১) সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্র চেষ্টা করবে।
- (৩) জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযােগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।
তৃতীয় ভাগ: মৌলিক অধিকার
- (১) কেবল ধর্ম, গােষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।
- (২) রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।
- (৪) নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবেন না।
- (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা।
- (২) ক- বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা।
- খ- সংবাদপত্রের স্বাধীনতা।
- (১) প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর বা অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থা করার অধিকার থাকবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাবেনা।
- (৩) গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতা বিরােধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারীতে সােপর্দ কিংবা দণ্ডদান বিধান সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবেনা।
- (১) রাষ্ট্রে একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।
- (২) রাষ্ট্রপ্রধানরূপে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য সকল ব্যক্তির উর্ধ্বে স্থান লাভ করিবেন।
- (৩) এই সংবিধানের ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়ােগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।
- (৪) কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হইবার যােগ্য হইবেন না যদি তিনি-
- (১) রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসরের মেয়াদে তাঁর পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।
- (২) একাদিক্রমে হউক বা না হউক দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতির পদে কোন ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকবেন না।
- (৩) স্পীকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযােগে রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।
- (২)রাষ্ট্রপতি তাহার দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া কিংবা অনুরূপ বিবেচনায় কোন কার্য করিয়া থাকিলে বা না করিয়া থাকিলে সেইজন্য তাঁহাকে কোন আদালতে জবাবদিহি করিতে হইবে।
- (১) সংবিধান লংঘন বা গুরুতর অসদাচারণের অভিযােগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাইতে পারিবে।
- (৪) অভিযােগ বিবেচনার পর মােট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভােটে অভিযােগ যথার্থ বলিয়া ঘােষণা করিয়া সংসদ কোন প্রস্তাব গ্রহণ করিলে প্রস্তাব গৃহীত হইবার তারিখে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে।
- (২) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বা তাহার কর্তৃত্বে এই সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হইবে।
- (৩) মন্ত্রীসভা যৌথভাবে সংসদের কাছে দায়ী থাকবে ।
- (৪) সরকারের সকল নির্বাহী ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতির নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে।
- (১) দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী থাকিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকিবেন।
- (২) প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদিগকে রাষ্ট্রপতি নিয়ােগ দান করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তাহাদের সংখ্যার অন্যূন নয়-দশমাংশ সংসদ সদস্যগণের মধ্য থেকে নিযুক্ত হবেন এবং এক দশমাংশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যােগ্য ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে মনােনীত হইতে পারিবেন।
- (১) সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি হইবার যােগ্য কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের এ্যাটার্নি জেনারেল পদে নিয়ােগ নিয়ােগ দান করবেন ।
- (২)এ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপতি দ্বারা প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করবে।
- (৪) রাষ্ট্রপতির সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্বীয় পদে বহাল থাকবেন এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত পারিশ্রমিক লাভ করবেন।
- (১) জাতীয় সংসদ’ (House of the nation) নামে বাংলাদেশের একটি সংসদ থাকিবে এবং এই সংবিধানের বিধানবলী সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত হইবে।
- (২) একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফায় কার্যকরতাবলে উক্তদফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত ইবে। সদস্যগণ ‘সংসদ সদস্য’ বলে অভিহিত হবেন।
- (৩) (ক) সংবিধান (পঞ্চদশ) আইন, ২০১১ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত তিনশত সদস্য এবং ৩ দফায় বর্ণিত পঞ্চাশ মহিলা সদস্য লইয়া সংসদ গঠিত হইবে।
- (৪) রাজধানীতে সংসদের আসন থাকবে।
৬৬. সংসদে নির্বাচিত হইবার যােগ্যতা ও অযােগ্যতা
- (১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং তাহার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হইলে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যােগ্য হইবেন।
- (২) কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যােগ্য হইবেন না যদি-
(ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাহাকে অপ্রকৃতস্থ বলিয়া ঘােষণা করেন।
- (ক) তাঁহার নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৯০ দিনের মধ্য তিনি তৃতীয় তফসিলে নির্ধারিত শপথগ্রহণ এবং শপথপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে অসমর্থ হন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতে পারিবেন ।
- (খ) সংসদের অনুমতি না লইয়া একাদিক্রমে ৯০ বৈঠক দিবস অনুপস্থিত থাকেন।
- (গ) সংসদ ভেঙ্গে যায়।
- (১) সরকারী বিজ্ঞপ্তি দ্বারা রাষ্ট্রপতি সংসদ আহবান, স্থগিত ও ভঙ্গ করিবেন। থাকে যে, ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার (ক) উপদফায় উল্লিখিত নব্বই দিন সময় ব্যতীত অন্য সময়ে সংসদের এক অধিবেশনের সমাপ্তি এবং পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্য ৬০ দিনের অতিরিক্ত বিরতি থাকবেনা।
- (২) সংসদ সদস্যদের যে কোন সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘােষিত হইবার ৩০ দিনের মধ্য বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ আহবান করা হইবে।
- (৩) রাষ্ট্রপতি পূর্বে ভাঙ্গিয়া দিয়া না থাকিলে প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৫ বৎসর অতিবাহিত হইলে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাবে।
- (ক) সরকারী হিসাব কমিটি
- (খ) বিশেষ অধিকার কমিটি
- (গ) সংসদের কার্যপ্রণালী বিধিতে নির্দিষ্ট অন্যান্য স্থায়ী কমিটি।
- (১) সংসদ আইন দ্বারা ন্যায়পালের পদ প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করিতে পারিবেন।
- (২) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালকে কোন মন্ত্রণালয়, সরকারী কর্মচারী বা সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের যে কোন কার্য সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাসহ যেরূপ ক্ষমতা কিংবা যেরূপ দায়িত্ব প্রদান করিবেন, ন্যায়পাল সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়ােগ বা দায়িত্ব পালন করিবেন।
- (৩) রাষ্ট্রপতির নিকট কোন বিল পেশ করিবার পর ১৫ দিনের মধ্য তিনি তাহাতে সম্মতি দান করিবেন কিংবা অর্থবিল ব্যতীত অন্য কোন বিলের ক্ষেত্রে বিলটি বা তাহার কোন বিশেষ বিধান পুনর্বিবেচনার কিংবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্দেশিত কোন সংশােধনী বিবেচনার অনুরােধ জ্ঞাপন করিয়া একটি বার্তাসহ তিনি বিলটি সংসদে ফেরত দিতে পারবেন; এবং রাষ্ট্রপতি তাহা করিতে অসামর্থ হইলে উক্ত মেয়াদের অবসানে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হবে।
- (ক) কোন কর আরােপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরণ।
- (খ) সরকার কর্তৃক ঋণগ্রহণ বা গ্যারন্টি দান কিংবা সরকারের আর্থিক দায় দায়িত্ব সম্পর্কিত আইন সংশােধন।
- (গ) সংযুক্ত তহবিলের রক্ষণাবেক্ষণ, অনুরূপ তহবিলে অর্থ প্রদান বা অনুরূপ তহবিল হইতে অর্থ দান বা নির্দিষ্টকরণ।
- (ঘ) সংযুক্ত তহবিলের উপর দায় আরােপ কিংবা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলােপ।
- (ঙ) সংযুক্ত তহবিল বা অনুরূপ কোন দায় রদবদল বা বিলােপ।
- (চ) উপরি-উক্ত উপদফাসমূহে নির্ধারিত যে কোন বিষয়ের অধীন অনুষাঙ্গিক বিষয়।
- (১) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল ঋণ এবং ঋণ পরিশােধ হইতে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অর্থ একটি মাত্র তহবিলের অংশে পরিণত হইবে এবং তাহা ‘সংযুক্ত তহবিল’ নামে অভিহিত হবে।
৩য় পরিচ্ছেদ- অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা
- (১) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় অথবা উহার অধিবেশনকাল ব্যতীত কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়ােজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত পরিস্থিতিতে যেরূপ প্রয়ােজনীয় বলিয়া মনে করিবেন, সেইরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে পারিবেন এবং জারী হইবার সময় হইতে অনুরূপভাবে প্রণীত অধ্যাদেশ সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন হইবে,… ।
- (২) কোন অধ্যাদেশ জারী হইবার পর অনুষ্ঠিত সংসদের প্রথম বৈঠকে তাহা উপস্থাপিত হইবে এবং ইতঃপূর্বে বাতিল হইয়া না থাকিলে অধ্যাদেশটি অনুরূপভাবে উপস্থাপনের পর ৩০ দিন অতিবাহিত হইলে কিংবা অনুরূপ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে তাহা অনুমােদন করিয়া সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হইলে অধ্যাদেশটির কার্যকারিতা লােপ পাইবে।
ষষ্ঠ ভাগ: বিচার বিভাগ
- (১) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট’ নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে।
- (২) ধারায় বলা হয়েছে, “প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগে আসনগ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্রপতি যেইরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়ােগের প্রয়ােজন বােধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রীম কোর্ট গঠিত হইবে।” বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি রয়েছেন ১১ জন।
- (১) প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।
- (২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক না হইলে, এবং (ক) সুপ্রীম কোর্টে অন্যূন ১০ বৎসরকাল এ্যাডভােকেট না করিয়া থাকলে। (খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্য অন্যূন ১০ বছরকাল কোন বিচার বিভাগীয় পদে অধিষ্ঠান না করিয়া থাকিলে, অথবা, (গ) সুপ্রীম কোর্টে বিচারক পদে নিয়ােগ লাভের জন্য আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য যােগ্যতা না থাকিলে তিনি বিচারক পদে নিয়ােগ লাভের যােগ্য হইবেন না।
- (১) কোন বিচারক ৬৭ বৎসর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
- (২) এই অনুচ্ছেদের নিম্নরূপ বিধানবলী অনুযায়ী ব্যতীত কোন বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইবে না।
- (৩) একটি সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থাকিবে যাহা এই অনুচ্ছেদে “কাউন্সিল” বলিয়া উল্লেখিত হইবে এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকের মধ্যে পরবর্তী দুইজন কর্মে প্রবীণ তাঁহাদের লইয়া গঠিত হইবে।
সপ্তম ভাগ: নির্বাচন
- (২) কোন ব্যক্তি সংসদের নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত কোন নির্বাচনী এলাকায় ভােটার তালিকাভূক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি-
- (ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন।
- (খ) তাঁহার বয়স ১৮ বৎসরের কম না হয়।
- (গ) কোন যােগ্য আদালত কর্তৃক তাঁহার সম্পর্কে অপ্রকৃতস্থ বলিয়া ঘােষণা বহাল না থাকিয়া থাকে।
- (ঘ) তিনি ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বা আইনের দ্বারা ঐ নির্বাচনী এলাকার অধিবাসী বিবেচিত হন।
- (ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যােগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত ইইয়া না থাকেন।
- (১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখে পূর্ববর্তী ৯০ দিন হইতে ৬০ দিনের মধ্য শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
- (২) মৃত্যু, পদত্যাগ বা অপসারণের ফলে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার পর ৯০ দিনের মধ্য, তাহা পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে ।
- (৩) সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
(ক) মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে।
- (৪) সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদের কোন সদস্যপদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার ৯০ দিনের মধ্য উক্ত শূন্যপদ পূরণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
- (১)বাংলাদেশে একজন মহানিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (অতঃপর ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক’ নামে অভিহিত) থাকিবেন এবং তাহাকে রাষ্ট্রপতি নিয়ােগদান করিবেন।
- (১)মহাহিসাব নিরীক্ষক তাহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর বা তাহার ৬৫ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্য যাহা অগ্রে ঘটে, সেইকাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
- (১)প্রত্যেক সরকারী কর্মকমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক কমিশনের যতদূর সম্ভব অর্ধেক (তবে অর্ধেকের কা নহে) সংখ্যক সদস্য এমন ব্যক্তিগণ হইবেন, যাহারা ২০ বৎসর বা ততােধিককাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে কোন সময়ে কার্যরত কোন সরকারের কর্মে কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
- (১) কোন সরকারী কর্মকমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য তাহার দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে ৫ বৎসর বা তাঁহার ৬৫ বৎসর পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্যে যাহা অগ্রে ঘটে, সেই কাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
- (১) প্রত্যেক কমিশন প্রতি বৎসর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তাহার পূর্বে পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরে স্বীয় কার্যাবলী সম্পর্কে রিপাের্ট প্রস্তুত করিবেন এবং তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবেন।
- (১) এই সংবিধানকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান বলিয়া উল্লেখ করা হইবে এবং ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে ইহা বলবৎ হইবে, যাহাকে এই সংবিধানে ‘সংবিধান প্রবর্তন’ বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে।
- (২) বাংলায় এই সংবিধানের একটি নির্ভরযােগ্য পাঠ ও ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযােগ্য অনুমােদিত পাঠ থাকবে এবং ..।
- (৩) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্য বিরােধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাবে।