মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ জনগণ করবে নাকি কংগ্রেস? এমন আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসে মিনি কংগ্রেস বা বর্তমানের ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি। আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদাররা বা স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়করা দেশটির মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার জন্য এই উদ্যোগ নেন। বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধ এই পদ্ধতির কারণ হিসেবে বলা যায়। ১৭৮৭ সালে মার্কিন মিনি কংগ্রেস হিসেবে এই পদ্ধতি চালু করা হয়।
ইলেক্টোরাল কলেজ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২ নং অনুচ্ছেদ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তবে, এই ইলেকটোররা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হোন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা প্রতিটি প্রদেশ থেকে ভোটারদের কাছ থেকে যেসব ভোট পান সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট এবং ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটকে বলা হয় ইলেক্টোরাল ভোট।
ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পদ্ধতি
ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি রাজ্যে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে কিছু ইলেক্টোরাল ভোট থাকে। কোনো একটি রাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি পপুলার ভোট পাবেন, তিনি ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যাবেন।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, টেক্সাস রাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী যদি ৫০.১% ভোট পান, তাহলে ওই রাজ্যের সবকটি অর্থাৎ ৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোট তাদের পকেটেই যাবে। ফ্লোরিডা রাজ্যে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী যদি ৫০.১% ভোট পান, তাহলে ওই রাজ্যের টোটাল ২৯ টি ইলেক্টোরাল ভোট তাদের হবে।
মার্কিন নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। একজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য ২৭০টি ভোট পেতে হবে। ৫৩৮ টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ৪৩৫ জন নিম্নকক্ষের, ১০০ জন সিনেট এবং বাকি ৩ জন সংরক্ষিত আসনের জন্য নির্বাচিত হয়।
এ কারণে জনগণের ভোটে জয়ী হলেও হেরে যেতে পারে একজন প্রার্থীকে। উদাহরণ হিসেবে, সম্প্রতি ২০১৬ সালেই জনগণের পপুলার ভোট ভোটে জয়ী হয়েও হেরে যান ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন।
হিলারি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ৩০ লাখের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকেই বেছে নেয়। এটাই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে জনগণের ভোটে জয়ী না হয়েও প্রেসিডেন্ট হওয়ার পদ্ধতি।