এনপিটি চুক্তি
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি এনপিটি (NPT) নামে পরিচিত, একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি যার উদ্দেশ্য পারমাণবিক অস্ত্র এবং অস্ত্র প্রযুক্তি বিস্তার প্রতিরোধ করা, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা। NPT এর পূর্ণরুপ Treaty on the Non-Proliferation of Nuclear Weapons।
১ জুলাই, ১৯৬৮ সালে, পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তাররোধ সংক্রান্ত চুক্তি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং অন্যান্য ৫৯টি রাষ্ট্র দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়। তিনটি প্রধান স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র (USA, UK, Russia), যারা পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী ছিল, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন বা উৎপাদনে অন্য রাষ্ট্রকে সহায়তা না করতে সম্মত হয়েছিল। চুক্তি মতে,
- পারমাণবিক অস্ত্র বিহীন রাষ্ট্র এটি কখনও অর্জনের চেষ্টা করবে না।
- পরমাণু অস্ত্রধারী রাষ্ট্রগুলো নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টা করবে।
- সমস্ত রাষ্ট্র নিরাপত্তার অধীনে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে।
চুক্তিটি ১৯৭০ সালের মার্চ মাসে ২৫ বছরের জন্য কার্যকর হয়। পরবর্তীতে অন্যন্য দেশ চুক্তিটি অনুমোদন করে। ২০০৭ সাল পর্যন্ত, শুধুমাত্র তিনটি দেশ (ভারত, ইসরায়েল এবং পাকিস্তান) চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে এবং একটি দেশ (উত্তর কোরিয়া) স্বাক্ষর করে এবং তারপর চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করেছে। ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘের সদর দফতরে ১৭৪টি দেশের ঐক্যমত্য ভোটের মাধ্যমে চুক্তিটি অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং শর্ত ছাড়াই বাড়ানো হয়েছিল।
এনপিটি চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পর বেশ কয়েকটি ঘটনা চুক্তিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে , যার মধ্যে রয়েছে,
- ২০০৩ সালে চুক্তি থেকে উত্তর কোরিয়ার প্রত্যাহার কারণ এটি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করেছিল।
- স্বাক্ষরকারী হওয়া সত্ত্বেও ১৯৮০ সালে ইরাক তার পারমাণবিক কর্মসূচিতে অগ্রগতির প্রমাণ করেছিল।
- চুক্তির আরেকটি স্বাক্ষরকারী দেশ ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অভিযোগ তোলা হয়।
- ১৯৯৮ সালে ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তি হিসেবে ঘোষণা।
- ২০০৮ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অংশ হিসেবে নিজস্ব বিশেষ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার কারণে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তাররোধ নীতির বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষুণ্ন হয়েছে।