তফসিল কি? বাংলাদেশ সংবিধানের তফসিল সমূহ

তফসিল অর্থ বৃত্তান্ত, বিবরণ বা দলিল। আইনের কোন ধারার বর্ধিতকরণের প্রয়োজনে বা কোন ধারার বিস্তৃত পরিধির দরকার হলে, সংবিধানের যে বিশেষ উল্লিখিত বিষয়ের দ্বারা তার এক্সটেনশন করা হয়, সেটাই হল সংবিধানের তফসিল।

তফসিল মূলত সংযুক্তির কাজ করে। দলিল তো আর মূল আইনে রাখা যায় না। তাই সংযুক্তি হিসেবে তফসিলে রাখা হয়।

এসব দলিল ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হতে পারে আবার গুরুত্বপূর্ণ প্রথা বা নিয়মের সাথেও (যেমন প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যন্য সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের  শপথবাক্য) সম্পর্কীত হতে পারে। বাংলাদেশ সংবিধানে ৭ টি তফসিল রয়েছে।

অন্যান্য বিধান সত্ত্বেও কার্যকর আইন: অর্থাৎ, সংবিধানে যে বিধানই থাকুক না কেন, এই তফসিলে বর্ণিত আইনগুলাে অন্যান্য বিধান থাকা সত্ত্বেও কার্যকর হবে। এই আইনগুলো অনুসারে গৃহীত কোন কর্মকান্ড অবৈধ ঘোষণা করা যাবে না। প্রথম তফসিলে সংবিধানের ৪৭ নং অনুচ্ছেদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: সংবিধানের চতুর্থ সংশােধন আইন, ১৯৭৫ এর ৩০ নং ধারাবলে মূল সংবিধানের এই দ্বিতীয় তফসিলটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, দ্বিতীয় তফসিল এখন আর কার্যকর নেই।

শপথ ও ঘােষণা: রাষ্ট্রে সাংবিধানিক পদে দায়িত্বপালনকারী বিভিন্ন ব্যক্তি যেসব শপথ ঘোষণার মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব শুরু করবেন, সেগুলোই ৩ তফসিলে বর্ণিত আছে। এই তফসিলে সংবিধানের ১৪৮ নং অনুচ্ছেদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে।

ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলি: অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও কার্যকর করার আগ পর্যন্ত সময়কালকে বাংলাদেশের সংবিধানে ক্রান্তিকাল বলে অভিহিত করা হয়েছে।

এই ক্রান্তিকালীন সময়ে বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত ও গৃহীত এবং বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার কর্তৃক প্রণীত ও গৃহীত আইন ও বিধানের বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। চতুর্থ তফসিলের মাধ্যমে সংবিধানের ১৫০(১) নং অনুচ্ছেদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে।

৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ। এই তফসিলে সংবিধানের ১৫০(২) নং অনুচ্ছেদের বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে।

স্বাধীনতার ঘােষণা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘােষণা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাত শেষে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘােষণা। এই তফসিলে সংবিধানের ১৫০(২) নং অনুচ্ছেদের বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে।

স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র: ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল, মুজিবনগর সরকার কর্তৃক জারিকৃত স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র। এই তফসিলে সংবিধানের ১৫০(২) নং অনুচ্ছেদের বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে