আইন

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পার্থক্য

1 min read

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত ২টি সরকারি পদ। উভয়ের কাজের কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্র রয়েছে। যদিও ম্যাজিস্ট্রেট বলতে সাধারণত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বোঝায় (ফৌজদারি কার্যবিধির (২০০৭ সালে সংশোধিত) ৪ক ধারা)।

কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (CrPC), ১৮৯৮ অনুযায়ী, বাংলাদেশে দুই শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে যথা: (ক) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং (খ) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। উভয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া, পদ এবং বিচারিক কার্যক্রমে ভিন্নতা রয়েছে। নিম্মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রধান পার্থক্য সমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করা হল।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কারা?

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্বাহী বিভাগের ম্যাজিস্ট্রেট। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস (প্রশাসন) এর মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্তরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা লাভ করে।

সরকার চাইলে প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদেরকে সীমিত আকারে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করতে পারে ((ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ১০(৫))। তারা সাধারণত তাদের নিজ নিজ এখতিয়ারে নির্বাহী এবং সীমিত বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কারা?

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলো যারা সব ধরনের ফৌজদারি মামলার বিচার করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর বিচার বিভাগে নিযুক্ত ফৌজদারি বিচারকার্য পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদেরকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বলা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর মধ্যে পার্থক্য

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
সংজ্ঞা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হলেন একজন সিভিল অফিসার যার কাছে আইন পরিচালনা ও প্রয়োগ করার ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া তার সীমিত বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে। ফৌজদারি আইন পরিচালনা ও প্রয়োগ করার সীমিত কর্তৃত্ব সহ একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বলে।
প্রকার জেলা প্রশাসক (DC), অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (ADC), উপজেলা নির্বাহী অফিসার (UNO), সহকারী কমিশনার (AC)। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
যোগ্যতা সাধারণত যেকোন সাবজেক্ট নিয়ে অনার্স/মাস্টার্স পাস হতে হবে। অবশ্যই আইন বিষয়ে ডিগ্রি থাকতে হবে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে উত্তীন্ন হতে হয়। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (BJS) পরীক্ষা দিয়ে উত্তীন্ন হতে হয়।
বেতন বেতন স্কেল শুরুতে ৯ম গ্রেড (ব্যাসিক ২২,০০০ টাকা)। বেতন স্কেল শুরুতে ৬ষ্ঠ গ্রেড (ব্যাসিক ৩০,৯৩৫ টাকা)।
কার্যাবলী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যায় (যেমন খাদ্যে ভেজাল, ইভটিজিং, মাদকদ্রব্য চোরাচালান, সরকারি সম্পত্তি বেদখল ইত্যাদির জন্য) মোবাইল কোর্ট বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ফৌজদারি অভিযোগ আমল, গ্রহণ ও বিচার করেন। এছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধ দমন করার জন্য যেকোন আদেশ দিতে পারেন।
ক্ষমতা সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড যোগ্য অপরাধের বিচার করতে পারেন মৃত্যুদন্ড ছাড়া সকল অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবে।
পদ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) থেকে নিয়োগপ্রাপ্তদের পদ হলো সহকারী কমিশনার। একটি জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদা সচিব মর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের সমান।  জেলার প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট হচ্ছেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
5/5 - (28 votes)
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x