প্লেজারিজম কি? প্লেজারিজম কত প্রকার ও কি কি? What is plagiarism?

প্লেজারিজম হচ্ছে এক প্রকার নকল।

আমরা যখন কোনো বিষয় নিয়ে জানতে চাই বা জানার আগ্রহ পোষন করি তখন তা জানা বা বুঝার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই কোনো লেখক, কোনো গবেষক বা কোনো সাহিত্যিক এর রচিত সাহিত্য কে অনুসরণ করতে হয়।

তবেই আমরা সে সম্পর্কে পূর্ণ ধারনা পেতে পারি এবং চাইলে সে সম্পর্কে নিজের জ্ঞান খাটিয়ে কিছু লিখতেও পারি।

কিন্তু আজকাল আমরা প্রায়ই দেখতে পায় যে কেও অন্য কারো লিখা বা গবেষনা কে হুবুহু কপি করে নিজের বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।

যা খুবই অনৈতিক একটা কাজ। এই অনৈতিক অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকায় আমাদের জন্য শ্রেয়।

আজকে আমরা জানবো প্লেজারিজম (plagiarism)  কি এবং এই প্লেজারিজম কিভাবে নির্ণয় করা যায় ও এর প্রকারভেদ সমূহ কি কি।

প্লেজারিজম কি?

খুব সহজ ও সাবলীল ভাষায় বলতে গেলে প্লেজারিজম হচ্ছে- যদি কোন ব্যক্তির গবেষণা, সাহিত্য এবং আইডিয়া হুবহু নকল বা সামান্য পরিবর্তন করে তা নিজের কাজ বলে চালিয়ে দেওয়া হয় বা নিকের বলে দাবি করা হয় তবে তা হলো প্লেজারিজম(plagiarism)।

আমাদের বর্তমান এই বিশ্বে আধুনিক যুগের সাথে সাথে এই প্লেজারিজম এর মাত্রা ক্রমশ  বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আমাদের মধ্যেই অনেকেই অন্যের কাজকে খুব অবলীলায় নিজের বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

এর ফলে যে আবিষ্কারক বা যে সম্পাদক সে  ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

প্লেজারিজম নির্ণয়ের কৌশল কি?

প্লেজারিজম (plagiarism)  খুবই বড় একটি অসৎ ও অনৈতিক কাজ।

যে কেও বুঝে হোক বা না বুঝে হোক এ কাজটি করে থাকে।

এর ফলে অনেকে নিজেদের কাজের অগ্রগতির বদলে অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন ও হয়ে যেতে পারে।

বর্তমান এই আধুনিক ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে যেমন কোনো কিছু কপি বা চুরির পরিমান বেড়েছে ঠিক সেরকম এটি ধরার কৌশলও বেড়েছে।

কেননা এখন খুব সহজেই সফটওয়্যার ব্যবহার করার মাধ্যমে কোনো একটি ডকুমেন্টের কোন অংশ ইন্টারনেটের কোন জায়গা থেকে হুবহু কপি করে আনা হয়েছে  সেটা সহজেই বের করা যায়।

এ কারণে আমাদের সকলের উচিত বিভিন্ন গবেষণা, প্রজেক্ট পেপার, এসাইনমেন্ট, ফিল্ড ওয়ার্ক ইত্যাদির ডকুমেন্ট তৈরিতে প্লেজারিজম থেকে দূরে থাকা এবং নিজস্ব শক্তি, বুদ্ধি ও দক্ষতা ব্যবহার করে নিজের কাজ নিজে করা ।

 প্লেজারিজমের প্রকারভেদ –

প্লেজারিজম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। নিম্নে ৫ ধরনের প্লেজারিজম নিয়ে ধারনা দেওয়া হলোঃ

১। ডিরেক্ট প্লেজারিজম (Direct Plagiarism):

অন্য কোনো লেখক এর লেখা বা লেখার অংশ তার অনুমতি ছাড়াই হুবহু কপি করে কোন রেফারেন্স ছাড়াই নিজের লেখায় সংযুক্ত করা বা নিজের কাজে ব্যবহার করাকেই ডিরেক্ট প্লেজারিজম বলে।

২। প্যারাফ্রেইসিং (Paraphrasing Plagiarism):

অন্যের লেখায় কিছুটা পরিবর্তন করে এই ধরেন শব্দের গরমিল করে নতুন ভাবে বাক্য টা কে তৈরী করে  নিজস্ব হিসেবে দাবি করা হলো প্যারাফ্রেজ প্লেজারিজম।

এক্ষেত্রে কিছুটা দক্ষ চুরের প্রয়োজন যে কিনা সুণিপুন ভাবে আপনার লিখাকে নিজের বলে চালিয়ে দিবে আর আপনি বুঝতেই পারবেন না।

৩। আংশিক কপি করা (Verbatim Plagiarism)

কোনো একটি উৎস থেকে কপি পেস্ট করে তা নিজের লেখায় অন্তর্ভুক্ত করা।

৪। জটিলভাবে সংযুক্তকরণ (Patchwork Plagiarism)

এক বা একাধিক উৎস থেকে লিখা বা ইনফরমেশন নিয়ে একত্রে সংযুক্ত করে দেওয়াকেই এই প্রকারের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করা যায়।

৫। সেল্ফ প্লেজারিজম

নিজের পূর্ববর্তী লিখা গুলো কিছুটা পরিবর্তন করে আবার লিখে প্রকাশ করাই হলো সেল্ফ প্লেজারিজম।

৬। এক্সিডেন্টাল প্লেজারিজম (Accidental প্লাগিয়ারিস্ম):

যখন কোনো ব্যক্তি তার সংগ্রহীত তথ্যের সঠিক রেফারেন্স দিতে ভুল করে বা অনিচ্ছাকৃত বা অবহেলার জন্য ভুলভাবে দেখায় তখন তাকে Accidental Plagiarism বলে।

এগুলো ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের Plagiarism রয়েছে।

Plagiarism একটি অনৈতিক কর্মকান্ড, যেখানে কোনো একটি কন্টেন্ট এর আসল মালিক চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

আর সেইদিক বিবেচনা করে  বর্তমানে এই অনৈতিক কর্মকান্ড থেকে আসল মালিককে রক্ষা করার জন্য অনেক ধরনের নিয়ম-নীতি প্রকাশ হয়েছে।

তাতে সফলতাও দেখা দিয়েছে।

আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে। আর ভালো লাগলে নিজের পরিবার পরিজনের সাথে শেয়ার করে পাশে থাকুন।

Similar Posts