বিদেশ নীতি কাকে বলে? | বিদেশ নীতি কি?

বিদেশ নীতি কাকে বলে?

বিশ্বের সব স্বাধীন সার্বভৌম দেশ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য জাতীয় নীতি নির্ধারণ করে। জাতীয় নীতির দুই অংশ – অভ্যন্তরীণ নীতি ও বিদেশ নীতি।

সব রাষ্ট্রই অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পরিচালনার জন্য বিদেশ নীতি প্রণয়ন করে।

জোসেফ ফ্রাঙ্কেল বলেছেন যে, বিদেশ নীতি হলো সেই সব সিদ্ধান্ত বা ক্রিয়াকর্মের সমষ্টি যা কোনো রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য রাষ্ট্রের সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত।

বিদেশ নীতির মুখ্য লক্ষ্য হলো জাতীয় স্বার্থ সাধন। সুচিন্তিতভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে বিদেশ নীতি নির্ণয় করা হয়। তাই হার্টম্যান বলেছেন – সুচিন্তিতভাবে নির্ধারিত জাতীয় স্বার্থ বিষয়ে সুসংবদ্ধ বিবৃতিই বিদেশ নীতি।

হার্টম্যান আরও বলেছেন যে দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাষ্ট্রসমূহ যে বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন নীতি অনুসরণ করে তাকেই বিদেশ নীতি বলে।

সি.সি.রেড্ডি বলেছেন যে, বিদেশ নীতি হচ্ছে একগুচ্ছ নীতি যা কোনো রাষ্ট্র তার জাতীয় স্বার্থরক্ষার জন্য ও অন্য রাষ্ট্রের ব্যবহার পরিবর্তনের জন্য অনুসরণ করে।

লার্কে ও সৈয়দ বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক পরিবেশে রাষ্ট্র নিয়তই নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হচ্ছে। সেগুলোর মোকাবিলার জন্য রাষ্ট্র যে নীতি নির্ণয় এবং কার্যকর করে তাই বিদেশ নীতি।

ভি.পি. দত্তের মতে, বিদেশ নীতি সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা। প্রতিবেশী রাষ্টের সঙ্গে সম্পর্ক। বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক। বিশ্বের বেশি সংখ্যক রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা। রাজনৈতিক কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে, উন্নয়নের লক্ষ্যে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য ঐ সব সম্পর্ক পরিচালনা করা হয়।

সুতরাং বিদেশ নীতি কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রূপায়িত হয়। কে. জে. হলসটি সেই সব লক্ষ্যকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। যেগুলো হলো –

১) মুখ্য মূল্যবোধঃ সেই সব মূল্যবোধ বা লক্ষ্য যার জন্য জাতি চরম ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমিকতা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও ভৌগলিক অখণ্ডতা, সামাজিকত ঐক্য এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা মুখ্য মূল্যবোধের সঙ্গে জড়িত।

২) মধ্যমেয়াদী লক্ষ্যঃ অর্থনৈতিক স্বার্থসাধন ও সমৃদ্ধি অর্জন, সামরিক শক্তি বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার এই লক্ষ্যের অন্তর্গত।