জারণ সংখ্যা কাকে বলে? জারণ সংখ্যা নির্ণয় | H2SO4 এ S এর জারণ সংখ্যা নির্ণয়

জারণ সংখ্যা কাকে বলে?

যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌল যত সংখ্যক ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক আয়ন উৎপন্ন করে অথবা যত সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়ন উৎপন্ন করে তাকে ঐ মৌলের জারণ সংখ্যা (Oxidation Number) বলে। অর্থাৎ আয়নে সৃষ্ট চার্জের সংখ্যাই ঐ মৌলের জারণ সংখ্যা।

যেমনঃ Li+, O2-, M2+, Cl এর জারণ সংখ্যা যথাক্রমে +1, -2, +2, -1

জারণ সংখ্যা ধনাত্মক, ঋণাত্মক এমনটি ভগ্নাংশও হতে পারে।

অথবা,

কোনো অণু বা যৌগমূলকের মধ্যে অবস্থিত পরমাণুগুলোর কোনোটি ইলেকট্রন ছেড়ে দেওয়ার আবার কোনটি ইলেকট্রন গ্রহণ করার প্রবণতা দেখায়। অণু বা যৌগমূলকের মধ্যে অবস্থিত কোনো পরমাণুর ইলেকট্রন ছাড়ার প্রবণতাকে ধনাত্মক চিহ্নযুক্ত একটি সংখ্যা দিয়ে আর কোনো পরমাণুর ইলেকট্রন গ্রহণ করার প্রবণতাকে ঋণাত্মক চিহ্নযুক্ত সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

অণু বা যৌগমূলকের মধ্যে অবস্থিত কোনো পরমাণুর এই ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চিহ্নযুক্ত সংখ্যাকেই তার জারণ সংখ্যা (Oxidation Number) বলে।

একক পরমাণু যেমনঃ Na, Mg, Fe ইত্যাদিতে সংশ্লিষ্ট পরমাণুসমূহের জারণ সংখ্যা শূন্য ধরা হয়।

আবার, একই পরমাণু দিয়ে গঠিত অণু যেমনঃ H2, O2, N2, Cl2, Br2 ইত্যাদিতে সংশ্লিষ্ট পরমাণুসমূহের জারণ সংখ্যা শূন্য(0)।

FeSO4 অণুতে Fe এর জারণ সংখ্যা +2 আবার Fe ধাতুতে Fe এর জারণ সংখ্যা শূন্য। HCl এ Cl এর জারণ সংখ্যা -1 আবার Cl2 অণুতে এর জারণ সংখ্যা শূন্য(0)।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়

একটি যৌগে কোনো একটি মৌলের জারণ সংখ্যা যৌগের অন্যান্য মৌলের জারণ সংখ্যার উপর নির্ভর করে। যৌগে কোনো একটি মৌলের জারণ সংখ্যা বের করার জন্য যৌগের অন্যান্য মৌলের জারণ সংখ্যা জানতে হয়।

কোনো অণু বা আয়নে সংশ্লিষ্ট পরমাণুর জারণ সংখ্যা নিচের পদ্ধতিতে নির্ণয় করা যায়ঃ

1. যৌগ বা আয়নে অবস্থিত যে পরমাণুটির জারণ সংখ্যা বের করতে হবে ধরে নেই তার জারণ সংখ্যা x।

2. যৌগ বা আয়নের সকল মৌলের জারণ সংখ্যাকে তাদের নিজ নিজ পরমাণু সংখ্যা দ্বারা গুণ করে তাদের সমষ্টি বের করতে হবে।

3. জারণ সংখ্যার সমষ্টি হবে অণুর ক্ষেত্রে শূন্য (০) এবং আয়নের ক্ষেত্রে তার চিহ্নসহ চার্জ সংখ্যার সমান। এখান থেকে পরমাণুর জারণ সংখ্যা x বের করা যাবে। যেমনঃ KMnO4 অণুতে কেন্দ্রীয় পরমাণু Mn এর জারণ মান বের করতে হবে।

ধরাযাক, Mn এর জারণ মান x, K এর জারণ মান +1 এবং O এর জারণ মান -2 নিয়ে সকল মৌলের জারণ সংখ্যাকে তাদের পরমাণু সংখ্যা দ্বারা গুণ করে যোগ করি। উক্ত যোগফল হবে KMnO4 এর জারণ সংখ্যার সমান। KMnO4 একটি আধান নিরপেক্ষ অণু।

সুতরাং এর আধান শূন্য, কাজেই

(+1)×1+x×1+(-2)×4=0

বা, x = 7

অর্থাৎ Mn এর জারণ সংখ্যা = +7

4. সাধারণত ধাতব হাইড্রাইড (যেমন: LiH, LiAH4) ব্যতীত সকল H এর জারণ সংখ্যা +1। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড (H2O2), সোডিয়াম পার-অক্সাইড (Na2O2) এ অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -1, সুপার অক্সাইড যেমন: সোডিয়াম সুপার-অক্সাইড (NaO2), পটাশিয়াম সুপার-অক্সাইড (KO2) এ অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা –12 হয়। এছাড়া সকল ক্ষেত্রে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -2।

H2SO4 এ S এর জারণ সংখ্যা নির্ণয়ঃ

ধরি, H2SO4 এ S এর জারণ সংখ্যা = x

অতএব, (+1)×2+x+(-2)×4=0

বা, x = 6

অতএব, H2SO4 এ S এর জারণ সংখ্যা = +6।

 

শেষ কথা:

আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “জারণ সংখ্যা কাকে বলে? ” আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকলে, অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন।

Similar Posts