ভাব সম্প্রসারণ

ভাব সম্প্রসারণঃ “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই” । ভাবসম্প্রসারণ কর্ম মানুষকে বাচিয়ে রাখে

1 min read

আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো  ভাব সম্প্রসারণঃ “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই” ।  ভাবসম্প্রসারণ কর্ম মানুষকে বাচিয়ে রাখে নিয়ে ।

ভাব সম্প্রসারণঃ “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই” ।  ভাবসম্প্রসারণ কর্ম মানুষকে বাচিয়ে রাখে

ভাব-সম্প্রসারণ করার নিয়ম

ক. যে উক্তি বা অংশের ভাব-সম্প্রসারণ করতে হবে, তা ভালোভাবে পড়ে মূল ভাবটি উদ্ঘাটন করতে হবে। খ. যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ভাবটিকে বিশ্লেষণ করতে হব।।

গ. প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত বা উপমা দেওয়া যাবে।

ঘ. এক কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে । রচনা সহজ, সরল ও সহজবোধ্য হতে হবে ।

উত্তরের কলেবর বা আয়তনের কোনো মাপকাঠি নেই। ভাবটি সম্প্রসারিত হওয়া মাত্রই উত্তর শেষ করতে হবে।

ভাব-সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে মূলভাব এবং সারকথা লেখার প্রয়োজন নেই। ভাব হলো কোনো নিগূঢ় চিন্তা যা সংক্ষেপে গদ্যে বা পদ্যে নিহিত থাকে । সুতরাং ভাব সম্প্রসারণের জন্য প্রশ্নোল্লিখিত বক্তব্যটিই একটি মূলভাব বা একটি সারকথা। তার আবার মূলভাব, সারকথা কেন? আধুনিক রীতিতে ভাব-সম্প্রসারণ লেখার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো—

যদি পরিক্ষার প্রশ্নে থাকেঃ 

“কীর্তিমানের মৃত্যু নেই”

 

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

ভাব-সম্প্রসারণ: মানুষ মরণশীল হলেও কর্মগুণে অমরত্ব লাভ করা সম্ভব। এই বেঁচে থাকার মানে জৈবিকভাবে বেঁচে থাকা নয়, অমরত্ব লাভ করা। সংক্ষিপ্ত মানবজীবনকে অনন্তকাল বাঁচিয়ে রাখতে হলে তথা স্মরণীয়-বরণীয় করে রাখতে হলে কল্যাণকর কর্মের কোনো বিকল্প নেই ।
মৃত্যু অনিবার্য, এটি চিরন্তন সত্য। তবুও মানুষ তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারেন। সেজন্য যাঁরা কীর্তিমান তাঁরা তাঁদের সেবামূলক কাজের মাধ্যমে মানবসমাজে বেঁচে থাকেন বহু যুগ ধরে। এ নশ্বর পৃথিবীতে সবই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় । অর্থাৎ, কোনো মানুষই পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে না। সেজন্য দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা বড় কথা নয়, কারণ এতে তার অমরত্ব আসে না। মানুষ অমরত্ব প্রাপ্ত হয় তার কর্মের মাধ্যমে। কর্ম তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে সাধারণ মানুষের অন্তরে চিরদিন। অর্থাৎ, যেসব মানুষ নিঃস্বার্থভাবে পরোপকারে আত্মনিয়োগ করেন, মানুষের কল্যাণে নিজেদেরকে বিলিয়ে দেন— মৃত্যুর পরেও তাঁরা অমর হয়ে থাকেন মানুষের মাঝে। এভাবে কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব তাঁদের সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য অমরত্ব প্রাপ্ত হন। এসব লোকের দৈহিক মৃত্যু হলেও প্রকৃতপক্ষে তাঁরা অমর। সর্বদাই তাঁরা মানবের অন্তরে বিরাজ করেন। মানুষ তাঁদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কীর্তিমান ব্যক্তিবর্গের জীবনাদর্শই যুগ যুগ ধরে মানুষের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকে। সুতরাং তাঁদের মৃত বলে মনে হয় না।
মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মাধ্যমে, তার বয়সের জন্য নয়। কোটি কোটি মানুষ এ পৃথিবীতে এসেছে। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর কেউ তাদেরকে মনে রাখেনি। তারা ভেসে গিয়েছে কালস্রোতে। তবু যেসব কীর্তিমান ব্যক্তিবর্গ মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁরা অমর। তাই সক্রেটিস, প্লেটো, গ্যালিলিও প্রমুখ কীর্তিমান ব্যক্তিবর্গের মৃত্যু হয়েছে বহুদিন পূর্বে, কিন্তু তাঁরা আজও চিরভাস্বর মানুষের হৃদয়ে ।
নশ্বর পৃথিবীতে মানুষ অবিনশ্বর হয় কর্মগুণে। মানবকল্যাণে ব্যয়িত জীবন মানুষের মনে বেঁচে থাকে অনন্তকাল। বস্তুত জীবনের সার্থকতা এখানেই নিহিত।
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x