হজের গুরুত্ব ও ফজিলত

হজ্জ কাকে বলে? হজের ফজিলত

হজ্জ কাকে বলে? হজের ফজিলত

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে হজ একটি অন্যতম ইবাদত ।প্রত্যেক জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন মুসলিম নর-নারীর উপর হজ পালন করা ফরজ।এটি একটি ফরয ইবাদত যা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর ফরজ । ইসলামের হজ্ব  পঞ্চম স্তম্ভ । এই ইবাদতের মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিম একত্রিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে । এর গুরুত্ব যেমন অপরিসীম এবং ফজিলত  সীমাহীন । পৃথিবীর মধ্যে যত নেক আমল রয়েছে তার মধ্যে হজ  শ্রেষ্ঠতম । হজের প্রতিটি কর্ম সম্পাদনের জন্য রয়েছে পৃথক ফজিলত, মর্যাদা । রাসুল সালাম সালাম বলেন অন্য সকল আমলের উপর হজের মর্যাদা কে পূর্ব পশ্চিম  দিগন্তের দূরত্বের সাথে তুলনা করেছেন ।   হজের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল বলেন ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে হজ্ব  ।হজ্ব মহান আল্লাহর নির্দেশিতএকটি ইবাদত ।

আরবি শব্দ অর্থ সংকল্প করা বা ইচ্ছা করা । তাই আল্লাহ তায়ালা  আর্থিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক  ব্যক্তিকে পরিপূর্ণ হজ্ব সম্পাদন করা  নির্দেশ দিয়েছেন । এ ফরজ হজ্ব  উদ্দেশ্যে হলো মহান আল্লাহতালা সন্তুষ্টি অর্জন করা ।হজ্ব উমরাও  গুনাহ দূর করা এবং জান্নাত দেওয়ার পাশাপাশি দুনিয়া মানুষের দারিদ্রতা দূর করে দেয় ।হজ্ব  প্রতিটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত ।

 হজের গুরুত্ব ও ফজিলত

নবীজি সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এক সাহাবী জিজ্ঞাসা বাদে  সর্বোত্তম তিনটি বিশেষ কাজের মধ্যে হজের কথা বলেছিলেন ।সুতরাং মমিন মুসলমানের উচিত আল্লাহর জন্য নবীজির দেখানো নিয়মে হজ পালনের মাধ্যমে গুনাহ ও দারিদ্র্যমুক্ত জীবন হওয়ার চেষ্টা করা । নিষ্পাপ হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করে পরকালে সুনিশ্চিত জান্নাতের অধিকারী হওয়া ।আল্লাহতালা মুসলিম উম্মাহ হয়ে সামর্থ্যবান সবাইকে হজ করার তৌফিক দান করুন আমীন ।সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য জীবনে একবার হলেও হজ পালন করা ফরজ শারীরিক সক্ষমত আর্থিকভাবে সচ্ছল প্রত্যেক মুমিন মুসলমান যেন হজ নিয়ত করতে পারে এবং যাইতে পারে ।মহান আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন আর তুমি মানুষের মাঝে হজের ঘোষনা প্রচার করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে হেঁটে এবং সব ধরনের  কৃষকায়  উটের উপর সোয়াব হয়ে দূর দুরান্ত থেকে ।

যাতে তারা তাদের কল্যাণের জন্য সেখানে উপস্থিত হতে পারে এবং রিযিক হিসেবে তাদের দেওয়া গবাদিপশুগুলো জবাই করার সময় নির্দিষ্ট দিনগুলোতে তাদের উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে ।রাসুল সালাম বলেন যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করেছে যার মধ্যে সে অশ্লীলতা বলেনি বা  অশ্লীল   কার্য করেনি, সে হজ্জ থেকে ফিরবে সেদিন এর মত নিষ্পাপ অবস্থায় সেদিন তার মা তাকে প্রস্রাব করেছিলেন ।  হজ্ব  ওমরা কারীর আল্লাহর প্রতিনিধিদল । তারা দোয়া করলে তাদের দোয়া কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদের দেওয়া হয় । হজ্ব  একমাত্র প্রতিদান জান্নাত ।

হজ্ব এর জন্য খরচ করা ফজিলত , আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মতই যার সওয়াব 27 গুন পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় । রাসূল আরো বলেন যখন কোন মুসলিম তাল্বিয়া পাঠ করে তখন তার ডানে বামে পাথর, আদি মাটি সব কিছুই তার সঙ্গে তালাবিয়া দিয়ে পাঠ করে, এমনকি পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পর্যন্ত । হজ্ব দারিদ্রতা গুণাগুলো  দূর করে । আল্লাহর মেহমান হলো তিনটি দল আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধকারী, অসকারী, ওমরাহকারী ।হজ্ব  নিয়তকারী কোন কারণে হজ করতে সক্ষম না হলে  নেকি পাবে । হজ্ব সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ পবিত্র মক্কা নগরীতে একত্রিত হয় । ভাষা বর্ণের ভিন্নতা, সাংস্কৃতিক জাতীয় পরিচয় এর পার্থক্য ভৌগোলিক দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব মুসলিমের ভাতৃত্ববো জাগ্রত ও সুসংহত হয় পবিত্র হজ্ব  উদযাপনে । বিশ্ব মুসলিমের পারস্পরিক দুঃখ অভাব অভিযোগ সমস্যা সম্পর্কে অবগত হওয়া ও তার সমাধানের সুযোগে পবিত্র হজের বিশ্ব সম্মেলন ।

এই সম্মেলনে বিশ্বের সর্বস্তরের মুসলিম অংশগ্রহণ করতে পারে । উঁচু নিচু ভাষা বর্ণ জাতি গর্ত নির্বিশেষে  বিশ্বের সামর্থ্যবান যে কোন মুসলিমের অংশগ্রহণ অংশগ্রহণের সুযোগ অবধারিত । নিজের উপর যত অর্থ ব্যয় এবং দৈহিক কষ্ট করে আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের প্রতিষ্ঠা করা পবিত্র হজ । মূলত হজ্ব  একটি অন্যান্য ইবাদত, যাতে সমন্বয়ে ঘটেছে আর্থিক ত্যাগ ও দৈহিক কসরত । এ সময়ে ব্যবসায়ী  বিশ্ব মুসলিম নেতারা  আলোচনা চুক্তির মাধ্যমেমুসলিম বিশ্বের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধিশালী করতে পারেন । এটি বিশ্ব মুসলিম নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক সংহতি গড়ে উঠতে পারে । হজ্ব মুসলিম বিশ্বের নেতারা বিভিন্ন মুসলিম দেশের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব মতবেদ নিরসনে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন । এছাড়া হজের বিশ্ব সম্মেলন থেকে মুসলিম নেতারা নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আধিপত্য বাদীদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুযোগ লাভ করেন ।

আরাফাত ময়দানে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ কাজ । এ অবস্থানে অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য সমবেত মুসলিম করণীয় বর্জনীয় সম্পর্কে বিশ্ব নেতাদের দিক নির্দেশনা দেওয়া । তিনি বিদায় হজের সময় আরাফাত ময়দান উপস্থিত মুসলিমদের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক রাজনৈতিক ও বিভিন্ন বিষয়ে দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন এবং তার বক্তব্য অনুভূতির কাছে পৌঁছানো  নির্দেশ দিয়েছেন । আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কুরবানীর ইত্যাদি হজের আনুষ্ঠানিক ইবাদত ।

আমাদের এই সব ইবাদত পারস্পরিক সম্পর্কিত হলেও এর প্রত্যেকটির মধ্যে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও নিজস্ব ঐতিহ্য । মুসলিম উম্মাহ  মহা সম্মেলন হজ্ব । হাজার বছরের স্মৃতি বিজড়িত এই হজের পত্রিকার জন্য কার্যক্রমে রয়েছে মানব জাতির সু প্রাচীন  ইতিহাস ঐতিহ্য । মুসলমানের জন্য এটি একটি ফরয ইবাদত । কালেমা মুসলমানদের প্রথম ইবাদত । যার দ্বারা সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ইসলাম ধর্মে পদার্পণ করে । আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কার্যাবলীর মাধ্যমে পবিত্র কাবাঘর জিয়ারত করার ইচ্ছা পোষণ করাকে হজ্ব  বলে ।

হজ্ব কবুল হওয়ার জন্য তিনটি কাজ  যথাযথভাবে আদায় করতে হয়

  •   নিয়ত সহি করা
  •  নির্দিষ্ট সময়ে তথা হজের মাসেই হজ্ব  সম্পাদন করা
  • .নির্দিষ্ট কার্যাবলীর মাধ্যমে অর্থাৎ রাসূল সাঃ এর দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী  সম্পাদন করা

 

যে ব্যক্তি হজ অথবা ওমরা কিংবা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদীর   উদ্দেশ্যে বের হয়েছে সে ওই পথে মৃত্যুবরণ করেছে । হজ যাত্রীরা ওমরা যাত্রীরা আল্লাহর প্রতিনিধি দল । তারা তার কাছে দোয়া করলে তিনি তাদের দোয়া কবুল করেন এবং তার কাছে মাফ চাইলে তিনি ক্ষমা করেন ।

 হজ্ব ফরজ হওয়া শর্তাবলী । হজের ফরজ কয়টি

  • মুসলমান হওয়া
  • স্বাধীন হওয়া
  • শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়া
  • পূর্ণবয়স্ক হওয়া ও জ্ঞান হওয়া
  • পরিবারে খরচ ব্যতীত অবশ্যই হজ্ব সব খরচ বহন করা সামর্থ্য  থাকা  ।

মানুষের মধ্যে যার যেখানে যাওয়া সামর্থ্য আছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই গৃহের হজ করা তার অবশ্য কর্তব্য । রাসূল সাঃ বলেন হে লোক সফল আল্লাহ তোমাদের উপরহজ্ব ফরজ করেছেন । তোমরা তা তোমাদের সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই পালন করবে ।

আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা হজের গুরুত্ব ফজিলত সম্পর্কে জেনেছেন ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *