অনুচ্ছেদ

মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস অনুচ্ছেদ

1 min read

মে দিবস বা  আন্তর্জাতিক  শ্রমিক দিবস অনুচ্ছেদ

”মে দিবসে আমরা মিলিত কন্ঠে গাইবো”

”আসুক  অরাজকতার মহান দিন

আসবো আমরা এক হয়ে, করব স্লোগান মিলেমিশে

অন্ধকারের   গত দুনিয়াকে ফিরে আসতে দেব না বারে বারে ।”

শ্রমিকদের আন্দোলনে ইতিহাসে মে দিবসের স্মরণীয় অধ্যায় ।  মেহনতী শ্রমিকের আত্মদানে প্রতিষ্ঠিত মে দিবস পরিণত হয়েছে। বিশ্বের সকল দেশেই মর্যাদা সঙ্গে পালিত হয় মহান মে দিবস ।

প্রতিবছর মে মাসের ১ তারিখে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশ দিনটি উদযাপিত করে ।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সুগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। মে দিবস মূলতশ্রমজীবী মানুষের একটি স্মরণীয় দিন ।১৮৮৬সালে মে মাসে আমেরিকার শিকাগো শহরে শিল্পপতিদের  শোষণের বিরুদ্ধে আত্মদানকারী শ্রমিকরা স্লোগান তুলে । তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাদের কর্ম ঘন্টা নির্ধারণ এবং তাদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি । তারা যাতে মানুষের মতো বাঁচতে পারে । শ্রমিকদের কন্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য পুঁজিবাদী সরকার এবং তার প্রতিনিধিরা সম্ভাব্য সব  পন্থায়  অবলম্বন করে । শিল্পপতিরা শ্রমিকের এই আন্দোলনে কঠোর হতে নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে । মে দিবস  হাজার শ্রমিকের পায়ে চলা মিছিলের  কথা বলে ,   আপস হীনসংগ্রামের কথা বলে । মে দিবস দুনিয়ার শ্রমিকদের এক হওয়ার  বন্ধন । পৃথিবীর সব সব দেশেই মে দিবস ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং পালন করা হয় । শ্রমিকদের সাথে অমানবিক অত্যাচার করা হতো তাদেরকে মানুষ হিসেবে গণ্য করা হতো না । সমস্ত অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা কাজ করার পরিবর্তে দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার জন্য জনগণ আন্দোলন শুরু করে । শতাধিক শ্রমিক এতে আহত হয় কেউ মৃত্যুর  কোলে ঢলে পড়ে অবশেষে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়। তাদেরকে জীবনের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার দেওয়া হয় ।

আমেরিকার শ্রম সংস্থা শ্রমিকদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ পহেলা মে কে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক দিবস হিসেবে যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদার সাথে পালন করা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । দিনটি বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য একত্রিত হবার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে । পহেলা মে বাংলাদেশের শ্রমিকরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে । অর্থনৈতিক সুবিচারের জন্য তারা মিটিং মিছিলের আয়োজন করে । এই দিনে শ্রমিকরা তাদের কর্মের বিনিময়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেবার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় । আজ এশিয়া. আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,  আমেরিকাসহ ছোট-বড় সব দেশ মে দিবস পালিত হচ্ছে । মে দিবস এই দুনিয়ার মেহনতি মানুষের সংকল্প গ্রহণের দিন । মে দিবসে এখন শ্রমিক শ্রেণীর সামনে নতুন উষার স্বর্ণ দুয়ার উন্মোচন করেছে । মে দিবস সাম্রাজ্যবাদী  চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ, দুনিয়া শ্রমিকদের এক হওয়ার উজ্জীবনী মন্ত্র । এই সংকল্প হল সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শ্রেণী বৈষম্যের বিলোপ সাধন । জীবন দানের বিনিময়ে শ্রমিকদের সেই দাবি আজ বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত । মে দিবস বলতে বুঝায় শ্রমিকের কাজের সময় তাদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন মুখর একটি ঐতিহাসিক দিন । আন্দোলন ব্যতীত কখনোই অধিকার আদায় হয় না ।  মে দিবস বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ,  পুঁথিবাদের এক অসামান্য হাতিয়ার । মে দিবস দুনিয়ার শ্রমিকের এক হওয়ার বন্ধন । মে দিবসের অর্থ শ্রমজীবী মানুষের উৎসবের দিন, জাগরণের গান, সংগ্রামের ঐক্য, গভীর  প্রেরণা। মে দিবস শ্রমিকদের পাওয়া রক্তের বিনিময়ে  পাওয়া  দুর্লভ  পাওয়া এক সম্পদ ।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x