১৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা
17 ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় ।তাই যারা ১৭ ই মার্চ উপলক্ষে জাতীয় শিশু দিবস রচনা প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করতে চান । তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম ।
জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস
১৭ ই মার্চ ২০২৪ বঙ্গবন্ধুর ১০৩ তম জন্ম দিবস পালিত হবে । এই দিনটিকে ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে । অনেকেই জানেন না যে বঙ্গবন্ধুর জন্ম তারিখ । বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তার বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মায়ের নাম সাহারা খাতুন । ১৭ ই মার্চ বাংলাদেশ এ পালিত হয় জাতীয় শিশু দিবস । এই দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয় ।
ভূমিকা :আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ । তাই আমাদেরকে শুরু থেকে শিশুর দিকে অন্যভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে ।তাই আমাদেরকে শিশুদের যত বেশি পরিচর্যা করবেন তত বেশি শিশুরা ভালো মানুষ হবে দেশের জন্য দেশের জন্য কিছু করতে পারবে ।
জন্ম ও পারিবারিক পরিচয় ; জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাবেক ফরিদপুর জেলায় বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান মায়ের নাম সাহেরা খাতুন । দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে পিতা মাতার তৃতীয় সন্তান ।
শিক্ষা জীবন :১৯২৭সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বয়স ৭ বছর তখন তাকে স্থানীয় গিয়ামাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় ।নয় বছর বয়সে অর্থাৎ ১৯২৯ সালে তাকে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হয় । পরে তিনি মিশনারি স্কুলে পড়ালেখা করেন । ১৯৩৪ সালে তিনি প্রথম বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় চার বছর পড়ালেখা বন্ধ থাকে । আবার তিনি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন । ইস্কুল থেকেই তিনি১৯৪২ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন । পরে তিনি কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন ।কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে আইয়ে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৭ সালে বিএ পাস করেন । এবং ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন । ছাত্র অবস্থায় থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনে সূত্রপাত ঘটে । আর তার রাজনৈতিক জীবনের রয়েছে বিশেষ বিশেষ অবদান ।
মুক্তি সনদ 6 দফা দাবি :১৯৬৬সালের ৩ জানুয়ারির পাকিস্তান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ৩৫ জন এর বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দায়ের করে । তারপর ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা মামলার বিচার কাজ শুরু হয় ।
বাংলাদেশ এর নামকর:১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীর উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অপূর্ব নামকরণ করেন বাংলাদেশ ।
গণঅভ্যুত্থান : ১৯৬৯সালের ৫ই জানুয়ারি ৬ দফা সহ ১১ দফা দাবি লক্ষে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় । পরিষদ আগতলা মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু করে । একপর্যায়ে এ আন্দোলন রূপ নিলেও ২২ ফেব্রুয়ারি সরকার আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধু সহ অন্যান্য আসামিকে বিনা শর্তে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় । এবং ছাত্র সংগঠন পরিষদ আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়
কারাগার থেকে কারাগার :১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি কর বঙ্গবন্ধুকে নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয় ।১৪ মাস আটক রাখার পর মুক্তি পান তিনি। প্রায় দুই বছর কারাগারে থাকেন । ১৯৬২সালে নিরাপত্তা আইনে আবার তাকে গ্রেফতার করা হয় । পরবর্তীতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু সমালোচনা করেন এবং এর তীব্র প্রতিবাদ জানান ।
৭০এর নির্বাচন :১৯৭০ সালের ৬ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন । বঙ্গবন্ধু১৯৭০ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণে সিদ্ধান্ত নেন । নির্বাচনে ভাষা আন্দোলন নিয়ে অংশগ্রহণ :পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করে বাংলা ও বাঙালি বেদানা তো রাখার পরিকল্পনা করে । প্রথমে আঘাত করে ভাষার উপর এর উদ্যোগে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করে এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে ২ই মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করেন এবং এর পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় । বঙ্গবন্ধু আমন্ত্রণ সভাপতিহিসাবে ভাষণ প্রদান করেন । উল্লেখযোগ্য ভাষণ গুলো হল বঙ্গবন্ধু তার রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবী উল্লেখ করেন ।
১৬ তারিখ সকাল দশটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র সবাই আমরা সকলে যোগদান করলাম । অর্থাৎ কে যেন আমার নাম প্রস্তাব করে বসলো সহজে আসন গ্রহণ আওয়ামী লীগে নির্বাচনী প্রতিফলে নৌকা ,স্লোগান ছিল জয় বাংলা । নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তান ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ টি আসনের মধ্যে জয় লাভ করে । পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ টি আসনের মধ্যে ২৮৮ টি লাভ করলেও আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় না । এজন্যই ১৯৭০ সালে নির্বাচনকে পাকিস্তানের মৃত্যুর বার্তাবাহক বলা হয় ।
৭ মার্চের ভাষণ :১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তারিখে ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে রোজ শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ প্রদান করেন । সময় বিকাল ৩ টা ২০মিনিট । ভাষণটি ছিল ২৩ মিনিট তবে ১৮ থেকে ১৯ মিনিট রেকর্ড করা হয় । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে জাতির পিতা এই ভাষণ ভাষণ দেন বাংলার জনগণের জন্যই ৭ই মার্চ ভাষণ এমন ছিল ।
আমি প্রধানমন্ত্রী চাই না আমি এ দেশের মানুষের অধিকার চাই।
৭ই মার্চ ভাষণে বঙ্গবন্ধু ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ১. প্রথমে মার্শাল উইথড্র করতে হবে।
- ২. সামরিক বাহিনী লোকদেরকে ব্যারাকে ফেরাতে হবে।
- ৩. জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
- ৪. যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে।
স্বাধীনতার ঘোষণা : ১৯৭১ সালের 25 শে মার্চ ঢাকা সহ সারা দেশে পাকিস্তানি বাহিনী সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার শুরু করে । ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সর্বপ্রথম নিজের কন্ঠে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা পাঠ করেন ।
বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা : বঙ্গবন্ধু ছোটদেরকে ভীষণ ভালবাসতেন । কচিকাঁচার মেলা ও খেলাঘর ছিল তার প্রিয় সংগঠন । তার জীবনের সেই দিনটি তিনি কাটিয়েছেন এ সংগঠনের ভাইবোনদের মাঝে। তার জন্মদিন এখন আমরা জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করি শিশুদের কাছে দিনটি আনন্দ ও খুশির ।
বঙ্গবন্ধুর নৈতিকতাবোধ : বঙ্গবন্ধু শাশ্বত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ হাসি-কান্না ছেলেবেলা থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন । শৈশব থেকেতৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার তালুকদার অত্যাচার শোষণ নিপীড়ন দেখিয়েছেন । গ্রামের হিন্দু মুসলমানদের সম্মিলিত সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িকতার । দরিদ্র মানুষের দুঃখ কষ্ট তাকে সারা জীবন সাধারন দুঃখী মানুষের প্রতি অগাধ ভালবাসায় সিক্ত করে তোলে । বস্তুত পক্ষে সমাজ ও পরিবেশ তাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় সংগ্রাম করতে শিখিয়েছে । তাই পরবর্তী জীবনে তিনি কোন শক্তির কাছে এসে যত বড়ই হোক আত্মসমর্পণ কখনো করেননি ।
মৃত্যুবরণ : ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা নেমে আসে বাংলার এই বুকে কিছু সামরিক বিপথগামী শত্রু সেনা বাংলার এই মহান নেতা কে এবং তার পরিবারকে হত্যা করে যা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল । বাংলার মানুষ কখনোই তাকে ভুলতে পারবেনা তিনি থাকবেন বাংলার হৃদয়ের অমর হয়ে ।
উপসংহার : দেশের মানুষের জন্য দেশের জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান কখনো অস্বীকার করা যাবে না । বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের এক মহান ব্যক্তি এবং সাহসিকতা ছিলেন অন্যরকম বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের শিখিয়েছেন কিভাবে উঁচু করে বেঁচে থাকতে হয় বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার সাহস শিখিয়েছেন বাঙ্গালীদের কে । তিনি বাংলার খোকা নামে আজ পরিচিত তাই এই দিনটিকে আমরা যথাযথভাবে স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত স্মরণ করব আমরা ।
আশা করি আপনারা ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু রচনা পড়ে আপনাদের অনেক ভালো লাগবে তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে এই আর্টিকেলটি তুলে ধরলাম আপনাদের উপকৃত হবে ।