রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ | কি কি কারণে রোজা ভাঙ্গে তা জেনে নিন
রোজা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাচ্ছেন। তাই আমাদের আজকের পোস্টে রোজা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি রোজা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে যাদের মনে যে সকল প্রশ্ন রয়েছে সবগুলোর উত্তর এখানে পেয়ে যাবেন। মুসলমানদের জন্য এই মাসটি আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে রহমত স্বরূপ। আজকের এই পোস্টে রোজা ভাঙ্গার কারণ সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করব। যদিও আমরা জানি রোজা রাখার মূল উদ্দেশ্য নফসের হেফাজতের পাশাপাশি আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
রোজা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে কোরআন হাদিসের আলোকে এবং ইন্টারনেট থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বস্ত সূত্র থেকে নিচে তথ্যগুলো তুলে ধরা হলো। রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহের পরিপূর্ণ আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এগুলোর বাইরে ও আরো রোজা ভঙ্গের কারণ থাকতে পারে সেগুলো আপনি আপনার বিশ্বস্ত মাওলানার কাছ থেকে জেনে নেবেন। অথবা আপনার এলাকার মসজিদের ইমামের কাছ থেকে রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো সম্পর্কে আরো সুন্দরভাবে ব্যাখাসহ জেনে নিতে পারবেন।
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ
১. ইচ্ছাকৃত খাদ্য গ্রহণ বা পানাহার করলে
২. স্বামী স্ত্রী সহবাস করলে
৩. কুলি করার সময় যদি হালকের নিচে পানি চলে যায় (যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে হয় তবেই এই সত্য প্রযোজ্য)
৪. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে রোজা ভাঙবে
৫. নশ্য গ্রহণ করা নাকে বা কানে ঔষধ অথবা তেল প্রবেশ করালে
৬. জবরদস্ত করে যদি কেউ রোজা ভাঙ্গায়
৭. পাথর বাজে কোন ফলের বিচি গিলে ফেললে
৮. ইঞ্জেকশন অথবা স্যালাইনের মাধ্যমে দেমাগে ঔষধ পৌঁছালে
৯. যদি পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করে
১০. দাঁতে লেগে থাকা খাদ্য গিলে ফেললে শর্ত হচ্ছে সেটা সোলার পরিমাণ হতে হবে
১১. ধুমপান করলে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে আগরবাতি জ্বালিয়ে নিশ্বাস গ্রহণ করলে
১২. মুখ ভরে বমি করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে
১৩. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ভুলে ইফতার করে ফেললে এবং পরবর্তীতে যদি দেখা যায় সূর্যাস্ত হয়নি তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে
১৪. রাত্রি আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর সেহের ী করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে
১৫. যদি মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে এবং জেগে উঠে দেখে সুবহে সাদিক হয়ে গিয়েছে তাহলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে
১৬. বৃষ্টি অথবা বরফের টুকরা যদি খাদ্যনালির ভেতরে চলে যায়।
১৭. কোন ব্যক্তি যদি মনে করে এখন রাত এবং স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয় কিন্তু তৎক্ষণাৎ জানতে পারে সুবহে সাদিক হয়ে গিয়েছে এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত হয় তারপরেও রোজা ভেঙ্গে যাবে।
১৮. হস্তমৈথুন করা
১৯. মনের ভুলে স্ত্রীর সহবাসে লিপ্ত হওয়ার পর মনে করেছে যে রোজা ভেঙ্গে গিয়েছে এবং এটি মনে করে আবারও স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হলে রোজা ভেঙে যাবে।
২০. নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে।
২১. এমন কিছু বস্তু খেয়ে ফেলা যেগুলো আসলে খাবার নয় যেমন কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা, ইত্যাদি।
আল্লাহ পাক আমাদের মুসলমান অথবা মানুষদের ওপর কোনো এবাদতই জোরপূর্ব ক খাটিয়ে দেননি। তাই কিছু কিছু সময় রোজা রাখার ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে অথবা যদি কেউ নিষিদ্ধ সময় গুলোতে রোজা রাখে তাহলেও তার রোজা হবে না বলে বলে দেয়া হয়েছে। যেমন কোন নারী যদি হায়েজ নেফাজতরত অবস্থায় থাকে তাহলে তার জন্য রোজা রাখা নিষে ধ। কারণ এ সময় নারীদের শরীর অনেক দুর্বল থাকে যার ফলে শারীরিক অসুস্থতার সম্ভাবনা রয়েছে তাই আল্লাহ পাক এসময় রোজা রাখার ব্যাপারে নিষেধ করেছেন। আবার মুখ ভরে অতিরিক্ত বমি করলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে কেননা এ ক্ষেত্রেও শারীরিক অসুস্থতা বা দুর্বলতার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমরা জানি রোজা রাখা মানে শুধুমাত্র না খেয়ে থাকা আসলে ব্যাপারটা তা নয়। রোজা মানে হচ্ছে ত্যাগ তিতিক্ষা এবং নিজের নফসের হেফাজত করার শিক্ষা গ্রহণ করা। আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে রোজা রত অবস্থায় সকল প্রকার নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা তবেই আমাদের রোজা হবে বিশুদ্ধ এবং আল্লাহ পাকের দরবারে হাজির করার মত আমল। যদি আমরা রোজার হত অবস্থায় আল্লাহ পাকের নিষিদ্ধ কাজগুলো করি তাহলে হয়তো আমরা আল্লাহ পাকের দরবারে পরিপূর্ণ রোজার সওয়াবের দরখাস্ত করতে পারব না।