বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
আমাদের আজকের আর্টিকেল এর বিষয়টি হলো বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আমাদের আজকের আর্টিকেল বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি ।
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা কিনা জানতে চান প্রথমবার বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময় কখন বা কোন পদ্ধতিতে বা কিভাবে। আমাদের আজকের আর্টিকেলটা তাদের জন্যই। কেননা আমাদের আজকের আর্টিকেল এর বিষয় হলো বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে। নিচে বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হলো।
বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
যারা কিনা বাচ্চা গ্রহণ করতে চান তারা অবশ্য একটু হিসাব-নিকাশ করে সহবাস করবেন। এতে ফলাফল ভাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা স্ত্রীর জরায়ুতে অভিয়েশন হওয়ার পর ডিম্বাণু সাধারণত 24 ঘন্টা জীবিত থাকতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ হচ্ছে যদি বাচ্চা নিতে চান তাহলে অবশ্যই ডেঞ্জার পিরিওড এর একদিন পর পর সহবাস করতে হবে। বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি এর মধ্যে অন্যতম হলো সঠিক নিয়মে মিলন করা।
এর জন্য প্রথমেই ভেবে দেখতে হবে স্বামীর সাথে মিলিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে। দেখা যায় অনেক সময় স্ত্রী ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সময় হয়তো মিলন ঘটে নি যার কারণে গর্ভধারণ হয়নি। অনেকে দেখা যায় কনডম ব্যবহার করেন, বাচ্চা নেওয়ার জন্য কনডম ব্যবহার করা বাদ দেন তারপরও গর্ভবতী হন না বিভিন্ন ধরনের ভুলের কারণে। যেহেতু একজন নারীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতিমাসে একবার ডিম্বাণু তৈরি হয় সেই ক্ষেত্রে নারীর ডিম্বানুর নিষিক্ত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গর্ভধারণের জন্য। যেহেতু নারীর ডিম্বানু একবার তৈরি হয় প্রতিমাসে সেহেতু তখনই যদি বীর্য এর সংস্পর্শে ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে পারে তাহলেই একজন নারী গর্ভবতী হতে পারে। থাই বাচ্চা নেওয়ার জন্য অবশ্যই অবশ্যই সহবাসের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
গর্ভে শুক্রাণু কত দিন বাঁচে
নারীর গর্ভে পুরুষের শুক্রাণু প্রায় পাঁচ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। পুরুষের সাথে মিলিত হয়ে তার সঙ্গীর সাথে তখনই শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হতে পারে যদি নারীর ডিম্বানু প্রস্তুত হয় তাহলে। এমন সময় সহবাস করতে হবে যখন কিনা নারীর ডিম্বানু সঠিক ভাবে প্রস্তুত।
ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার আনুমানিক সময়
বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি এর মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি হলো ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সঠিক সময়। কেননা আপনি যদি ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সঠিক সময় না জানেন তাহলে সহবাস করেও গর্ভবতী হতে পারবেন না। অনেক সময় কনডম ব্যবহার না করলেও গর্ভবতী হতে পারে না প্রায়ই অনেক মহিলারাই। দেখা গেছে স্ত্রীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সময় হয়তো মিলন ঘটে নি যার ফলে গর্ভধারণ ও হয়নি। প্রতিটি নারীর ডিম্বাশয় মাসে একবার ডিম্বাণু তৈরি করে। আর এই পদ্ধতিকে বলা হয় অভিয়েশন। যখন কিনা এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শুধুমাত্র তখনই বীর্য এর সংস্পর্শে এলে ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে পারে। আর নারীদের গর্ভে শুক্রাণু 5 দিন বেঁচে থাকে তাই এর মধ্যে যদি ডিম্বাণু তৈরি হয় তাহলে গর্ভবতী হওয়া সম্ভব।
নারীর মাসিক শুরুর দিন থেকে গুনে গুনে সাতদিন পর্যন্ত এই ডিম্বাণু পুরোপুরি তৈরি হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। আর যাদের কিনা মাসিকে অনিয়ম রয়েছে তাদের বিষয়টা আলাদা। আবার যাদের মাসিক প্রতিমাসে ঠিকঠাক সময় হয় তারা এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। অনেক সময় দেখা যায় ইমার্জেন্সি পিল খেলে এই হিসাব কাজ করবেনা। আবার যাদের কিনা স্বাভাবিকভাবে মাসিক হয় তাদের পিরিয়ড শুরুর দিন থেকে 7 দিন পর্যন্ত স্বামীর সাথে মিলিত হলেও এই থেকে গর্ভধারণ করার সুযোগ খুব কম। আর এই সময় সহবাস করা ঠিক না স্বাস্থ্যের ক্ষতি এবং সুখী। গর্ভবতী হতে চাইলে এর পরের 10 দিন স্বামীর সাথে একবার করে মিলিত হলে কোন সমস্যা না থাকলে গর্ভবতী হবেন নারী। কারণ এই সময় ভিতরে ডিম্বাণুটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হয়ে থাকে।
জন্ম বিরতি করন প্রক্রিয়া দ্রুত বন্ধ করুন
আপনি যদি বাচ্চা নিতে চান তাহলে অবশ্যই যেকোনো জন্ম বিরতি করন প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। কেননা ওই সময় আপনার বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা একদম নেই বললেই চলে। বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি এর মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি হল জন্মবিরতিকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করা। আপনি যদি কনডম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই কনডম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আর আপনি যদি দেখে থাকেন তাহলে অবশ্যই পিল খাওয়া বন্ধ করুন। কেননা এই সময়ে আপনি বাচ্চা নিতে পারবেন না বা বাচ্চা আপনার গর্ভে আসবেনা। আপনি যদি পিল খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার মাসিক চক্র ফিরে আসতে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। এই ছয় মাসের মধ্যে বাচ্চা নেওয়া বা বাচ্চা গর্ভে আসা খুবই কম সম্ভাবনা। আর আপনার যদি পিল খাওয়া অবস্থায় বাচ্চা পেটে আসে তাহলে অবশ্যই পিল খাওয়া তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দিবেন এবং ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। কিন্তু পিল খাওয়া অবস্থায় গর্ভধারণ করলে যে শিশুর ক্ষতি হয় ব্যাপারটা কিন্তু সেরকম নয়। আবার অনেক মহিলারা দেখা যায় বাচ্চা না হওয়ার জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে আপনার এক বছর সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আবার এই ইনজেকশন এর মেয়াদ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এক বছর, দুই বছর, তিন বছর, কিংবা 6 মাস সে ক্ষেত্রে আপনার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।
প্রতিদিন শারীরিক মিলন নয়
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা কিনা মনে করেন প্রতিদিন শারীরিক মিলন করলে বাচ্চা নেওয়া সম্ভব বা জরুরী। এই ধারণাটা আসলেই ভুল। আপনি যদি প্রতিদিন শারীরিক মিলন করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ক্লান্তি হবে অবসাদগ্রস্ততা আসতে পারে ঘুম হতে পারে বেশি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা। আবার এর ফলে দেখা যায় অনেক নারীর মিলিত হওয়ার আগ্রহ কমে যায়। আবার পুরুষদের ক্ষেত্রে বীর্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বা বীর্য হালকা হয়ে যেতে পারে। এর ফলে অনেক সময় দেখা যায় ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার সময় শারীরিক মিলন না ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এর জন্য আপনি অবশ্যই একদিন পরপর শারীরিক মিলন করুন। এ পদ্ধতি গর্ভধারণের জন্য বা গর্ভবতী হওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়। এর ফলে আপনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বেন না এবং শাররীক মিলনে আগ্রহী হবেন। এবং সঠিক টাইমে ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
শারীরিক মিলন ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার আগেই
পুরুষের শুক্রাণু জরায়ুর ডিম্বনালীতে 5 দিন বেঁচে থাকে। নারীর নিম্ন মাত্র 12 থেকে 24 ঘন্টার নিষিক্ত হওয়ার অবস্থায় থাকে। এরপর সেখানে আর কোন শুক্রাণু কাজ করতে পারেনা। তাই আপনি ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য দিনে শারীরিক মিলন না করে মাসিক শেষ হওয়ার পর একদিন পরপর শারীরিক মিলন করেন। এর ফলে ডিম্বাণু প্রস্তুত হলে শুক্রাণু মিলিত হতে পারবে। আর জরায়ুতে আগে থেকে থাকা যে শুক্রাণুগুলো আছে সেই শুক্রাণুগুলো যখন ডিম্বাণু প্রস্তুত হয়ে যাবে তখন কাজ করার শুরু করতে পারবে এর ফলে আপনি গর্ভবতী হতে পারবেন।
ইসলামিক নিয়মে বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
দোয়া করা এক ধরনের ইবাদত। কিন্তু সেই দোয়া প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর নির্দেশিত ভাবে হতে হবে। জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দোয়া করার বিষয়টি রয়েছে। তেমনি সহবাসের ক্ষেত্রে একটি বিষয় রয়েছে। ইসলাম ধর্মের মধ্যে সহবাস করার পূর্বে সহবাসের দোয়া পড়তে হয়। এটি স্বামী স্ত্রীর জন্য উত্তম। অবশ্যই সহবাস করার আগে সহবাসে দোয়াটি পড়ে নিবেন।
আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয়টি ছিল বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে। আশা করি আপনারা সবাই বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি গুলোর সম্পর্কে। আপনাকে আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আবার আপনি যদি দেখেন এসকল জিনিস মেনে চলার পরও আপনি গর্ভবতী হতে পারছেন না তাহলে অবশ্যই আপনি একটি গাইনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।