পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় । কি খেলে পায়খানা নরম হবে

পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায়।কি খেলে পায়খানা নরম হবে

আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে পায়খানা ক্লিয়ার হয় না পায়খানা শক্ত হয় বা কষা হয়ে থাকে এটি আমাদের বাজে রকমের একটি ভোগান্তির সৃষ্টি করে কিন্তু এটি যেহেতু দৈনন্দিন জীবনে আমাদের পরিচিত একটি সমস্যা তাই আমরা এ থেকে উত্তরণ চাই আমরা চাই পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় বা কি খেলে পায়খানা নরম হবে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব  আজকের আলোচনাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে তাই অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করে পড়ুন। 

পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ

পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় বা কি খেলে পায়খানা নরম হবে সে সম্পর্কে আমরা জানব এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব কিন্তু আপনি যদি পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ না জানেন তবে পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় বা কি খেলে পায়খানা নরম হবে জানা কঠিন হবে কারণ আপনাকে ঠিক কি কারণে পায়খানা ক্লিয়ার হচ্ছে না সেটি যদি জানতে পারেন সে ক্ষেত্রে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন তাই পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার কিছু কারণ এবং সেটা থেকে প্রতিকারের পদ্ধতি নিয়ে নিচে কয়েকটি প্যারায় আলোচনা করা হয়েছে সেখান থেকে আপনি যাচাই করুন আপনার পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন  নিচে বেশ কয়েকটি পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় সম্পর্কে কথা বলেও আর্টিকেলের একেবারে শেষের দিকে পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় এর সারসংক্ষেপ আলোচনা করা হয়েছে

খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানো

আগে আমাদের বুঝতে হবে কেন ফাইবার আমাদের খাবারে বাড়াতে হবে আসলে ফাইবার এক ধরনের তন্তু যা পায়খানার গঠনের ক্ষেত্রে অনেকটা সহায়তা করে এগুলো পায়খানায় পানি ধরে রাখে এবং  পায়খানা কে ভারী করে ফাইবার পায়খানার পরিমাণ বৃদ্ধি করে তাই সহজে পায়খানা আমাদের পেটের নাড়িভুড়ি দিয়ে চলাচল করতে পারে এগুলো সাধারণত আমাদের নাড়িভুঁড়ির দিয়ে চলার সময় নাড়িভুঁড়ির থাকে পরিচ্ছন্ন রাখে তাই পায়খানা ক্লিয়ার করার খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবারের উপস্থিত থাকতে হবে তাই আমাদের জানতে হবে আসলে কি ধরনের খাবার থাকে সাধারণত শাকসবজিতে বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকেডাল ছোলা কমলা আপেল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফলমূলে শ্বাদন্ত ফাইবার থাকেখাবারে অধিক পরিমাণে ফাইবার পাওয়ার জন্য আপনারা সবজি খেতে পারেন কিন্তু যারা রান্না করার সবজি খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না তারা অবশ্যই খাবারের কিছু অংশ সালাত রাখবেন সালাতে ও প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে এছাড়া যে ফলগুলো খাবেন এদের মধ্যে কোনটি খোসা ছাড়ানো ছাড়া খাওয়া যায় তবে সেগুলো খোসা  না ছাড়িয়ে কারণ ফলের খোসার প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে পায়খানা ক্লিয়ার করার সহায়তা করে তাই পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শাকসবজির মাধ্যমে শরীরে ফাইবার গ্রহণ করা

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা

পানি আমাদের খাদ্য তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান পানির  পায়খানা ক্লিয়ার করে আমরা যে খাবারগুলো খাই সেগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে আমি আগেই বলেছি ফাইবার গুলোতে পানি ধারণক্ষমতা অনেক বেশি এবং সেগুলো প্রচুর পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয় হজম করতে তাই বেশি করে ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে বেশি পরিমাণ পানি দরকার পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় বা কি খেলে পায়খানা নরম হবে তা যেহেতু পানির উপর নির্ভর করছে তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য পায়খানা কষা হয় তারা বেশি করে পানি পান করুন একজনের  ন্যূনতম প্রতিদিন দুই লিটার পানি খাওয়া উচিত আপনি আপনার পড়ার টেবিলের কাছে অথবা হাতের নাগালে  একটি এক লিটার পানির বোতল রাখতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজেই অনুমান করতে পারবেন যে আজকের দিনে কতটুকু পানি পান করেছেন এবং আপনার শরীরে পানির ঘাটতি রয়েছে কিনা এছাড়াও শীতের দিনে ঠান্ডার কারণে আমরা অনেক সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করিনা এটা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম কারণ অথবা পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ তাই পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন

শারীরিক পরিশ্রম করা

পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায় বা কি খেলে পায়খানা নরম হবে সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করার সময় আপনি হয়তো কম্পিউটারের সামনে বসে আছেন অথবা হাতে মোবাইল নিয়ে কোথাও বসে আছেন আপনি একবার চিন্তা করে দেখুন দিনে কতটা সময় আসলে পরিশ্রম করা হয় এখন আমরা অনলাইনে ক্লাস করি অথবা বাসায় বসেই মোবাইলে  যথেষ্ট সময় ব্যয় করি আমাদের প্রতিদিন নূন্যতম পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম হয় না এই শারীরিক পরিশ্রম করা পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার অন্যতম কারণ তাই পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য আপনাকে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে  সেজন্য আপনি কিছু ব্যায়ামের  চর্চা করতে পারেন আপনার বয়স অনুসারে একেকজনের ব্যায়ামের পরিমাণ এক এক রকম হবে কিছু কিছু ব্যায়াম আছে খুব সহজেই করা যায় যা আপনার শরীরকে সতেজ রাখবে এবং পায়খানা ক্লিয়ার করার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে যেমন আপনি প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটাচলা করতে পারেন এছাড়াও যারা একটু কম বয়সের আছে তারা ফুটবল খেলার মাধ্যমে অথবা দৌড়ের মাধ্যমে ব্যায়াম করতে পারে

পায়খানার চাপ আসলে দেরি না করা

পায়খানার চাপ আসলে অনেকে সাথে সাথে পায়খানায় যায় না অথবা ঘর থেকে বাইরে থাকার কারণে অনেক সময় প্রয়োজনের সুযোগটা হয়ে  ওঠেনা এক্ষেত্রে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য এর মাত্রা বেড়ে যায় এরকম যদি প্রতিনিয়ত করা হয় তবে আপনার পায়খানা করার অভ্যাস বদলে যেতে পারে সেজন্য  দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে পায়খানা করার অভ্যাস করুন সেটা হতে পারে সকালে ঘুম থেকে উঠেই এছাড়া পায়খানা  ক্লিয়ার করার জন্য ভালোভাবে সময় দিন যাদের কমোডে বসে পায়খানা করতে কষ্ট হয় তারা সাধারন পেন ব্যবহার করুন নিশ্চয়ই আপনারা কমেন্ট এবং পেন এর পার্থক্য বুঝে থাকবেন কমেন্ট হচ্ছে একটু উচু হয় আর পায়খানা করার  পেন হচ্ছে সাধারণ পায়খানায় যে ব্যবস্থা থাকে যদি আপনার বাসায়  হাই কমোড ছাড়া সাধারণ  পেন না থাকে তবে বসার সময় আপনি আপনার পায়ের নিচে একটি টুল জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন তখন দেখবেন আপনার পায়খানা ক্লিয়ার হচ্ছে

উদ্বিগ্ন বা বিষন্ন না থাকা

অনেক সময় উদ্বিগ্ন বা বিষণ্নতা থাকার কারণেও পায়খানা ক্লিয়ার হয় না এটার জন্য একটাই সমাধান সেটা হচ্ছে বিষণ্নতা থেকে দূরে থাকতে হবে এর জন্য আপনারা নিকটাত্মীয় বা বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় অতিবাহিত করতে পারেন তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার বিষণ্নতা দূর হয়ে গেছে এবং আপনার পায়খানা ক্লিয়ার হয়ে গেছে

ঔষধ প্রয়োগের সচেতন হয়ে পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায়

অনেক সময় কিছু ঔষধ পায়খানা ক্লিয়ার হতে বাধা প্রদান করে যেমন একটানা কেলসিয়াম অথবা আয়রনের ট্যাবলেট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার মতো আরো কিছু ওষুধ রয়েছে যদি ঔষধ সেবন করার পর আপনি দেখেন যে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের পরিমাণ  বেড়ে গেছে অথবা পায়খানা ক্লিয়ার হচ্ছে না তখন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন যে ডাক্তার ওষুধ দিয়েছে তার কাছে যান তিনি আপনাকে ঔষধ বদলে দিতে পারে অথবা পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিতে পারে

পায়খানা ক্লিয়ার উপায় সম্পর্কে সারসংক্ষেপ

  • প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা
  • তরল আঁশযুক্ত খাবার   বা শাকসবজি বেশি খাওয়া
  • যতদূর সম্ভব মল চেপে না রেখে নিয়মিত পায়খানা করা
  • প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম করা
  • ইসবগুলের ভুষি, এলোভেরা, ঘৃতকুমারীর  শরবত খাও
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী ঔষধ বর্জন করা

 

এতেও যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হয় তবে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় এ থেকে আপনার শরীরের অন্যান্য জটিলতা চলে আসতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য অশ্ব বা পাইলস ,ফিস্টুলা, এনাল ফিসার, সহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে কিন্তু ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে  উপরে যে ঘরোয়া  পদ্ধতিগুলোর কথা আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন যদি এতে  কমে যায় বা পায়খানা ক্লিয়ার হয়ে যায় তবে আর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *