রচনা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা, বুদ্ধিজীবী কারা, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর প্রেক্ষাপট, বুদ্ধিজীবীদের হ*ত্যার নীলনকশা, বুদ্ধিজীবীদের হ*ত্যার কারণ

1 min read

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা

ভূমিকা:

একটি দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে সেই দেশের বুদ্ধিজীবীগণ।   এই বুদ্ধিজীবীগণ পরিকল্পনা করেন দেশ আসলে কোন দিকে এভাবে।  এই বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন এ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। 1971  সালে যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হতে থাকে তখন তারা আমাদের স্বাধীনতা লাভের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এই বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করে।  এই দিনটি ছিল হাজার 971 সালের 14 ই ডিসেম্বর।  তাই প্রতিবছর 14 ই ডিসেম্বর কি আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করে আসছি।  (  বিশেষ দ্রষ্টব্য: আপনি যখন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা লিখতে যাবেন তখন এমন ভাবে একটি ভূমিকা লিখতে পারেন।  এখানে  আপনি প্রথমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কে পরিচয় করিয়ে দিবেন এবং কেন এটা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস সেই ব্যাপারটিও সামনে নিয়ে আসবেন।  যেহেতু এটি একটি দিবস তাই দিবসের নামটি উল্লেখ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শুধু আপনাকে একটি রচনা লিখে দিচ্ছি না সেটি কেন কিভাবে সেই ব্যাপারটি তুলে ধরেছি।  চলুন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা নিয়ে। )

বুদ্ধিজীবী কারা:

যারা সাধারণত দৈহিক শ্রম এর বদলে মানসিক শ্রম দিয়ে আমাদের সমাজের উপকার করে থাকেন তাদেরকে আমরা বুদ্ধিজীবী বলে থাকি।  অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী হচ্ছেন বিজ্ঞানী,, লেখক, চিত্রশিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক  অথবা যে কোন পর্যায়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, স্থপতি,  সরকারি কর্মচারী বৃন্দ, সমাজসেবী, সংস্কৃতি সেবি, চলচ্চিত্র এবং নাটকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এর প্রেক্ষাপট:

0171 সালে যখন পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হওয়ার একেবারে দ্বারপ্রান্তে তখন তারা চিন্তা করে এ দেশকে মেধাশূন্য করতে হবে।  সেই পরিকল্পনা থেকেই তারা এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের কে ধরে ধরে নিয়ে হত্যা করতে থাকে।  মুক্তিযুদ্ধের পর1972  সালে বুদ্ধিজীবীদের পরিবারবর্গ বিভিন্ন বধ্যভূমি থেকে তাদের লাশ সনাক্ত করে।  তখন দেখা যায় যে এই বুদ্ধিজীবীদেরকে বিভিন্ন নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।  প্রতিটি বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করার আগে প্রায় তাদেরকে নির্যাতন করা হতো। তাদের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।  শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কারো কারো হাত পিছনে বাধা ছিল এবং কারও কারও শরীরে একাধিক গুলি করা হয়েছিল।  আবার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র ধরা জবাই করে।

বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নীলনকশা :

পাকিস্তানি সৈন্যরা যখন 25 শে মার্চ মধ্যরাতে  বাংলাদেশের নিরীহ জনগোষ্ঠীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে , তখন এই দেশের আপামর জনসাধারন পাকিস্তানের সৈন্যদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে।  মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন হয় ঠিকই কিন্তু আমরা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের কে হারাই।  এদেরকে হত্যা করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী নীলনকশা প্রণয়ন করে।   যদি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঘটনাটি কে দুই ভাগে ভাগ করে তবে প্রথম  ভাগ টি হবে 25 শে মার্চ কালো রাত থেকে নভেম্বর এর 30 তারিখ পর্যন্ত।  এবং দ্বিতীয় ভাগ  হল   পহেলা ডিসেম্বর থেকে 16 ই ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।  এদের মধ্যে 14 ই ডিসেম্বর সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা হয়।  মেজর রাও ফরমান আলী এ দেশের প্রায় 20,000 বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।  আমাদের দেশে কিছু ব্যক্তি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর দেরকে সহায়তা করেছিলেন। না হলে পাকিস্তানি বাহিনী এত বিপুলসংখ্যক বুদ্ধিজীবীদেরকে এত অল্প সময়ের মধ্যে হত্যা করতে পারতেন না। (শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা যখন লিখতে যাবেন তখন বুদ্ধিজীবী হত্যার কিছুটা ইতিহাস আপনি তুলে ধরতে পারেন।  বিভিন্ন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো আপনি তুলে ধরতে পারেন।  এখন কথা হচ্ছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা লিখতে গেলে রচনা ধরন হতে হয় বিভিন্ন রকম।  যেমন ক্লাস সেভেনের জন্য যে রচনা এবং নবম-দশম শ্রেণীর জন্য একই রকম রচনা হবে না।  আবার যদি কোনো প্রতিযোগিতা পরীক্ষার জন্য রচনাটি লিখতে হয় সেটি হতে হবে আরো স্মার্ট।  তাই আপনি যে রচনাটি লিখছেন সেটির তথ্যগুলো যেনো খুব সুন্দর হয় স্পষ্ট হয়।  শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা)

বুদ্ধিজীবীদের হত্যার কারণ :

পাকিস্তানের দুঃশাসনের দিনগুলোতে বিভিন্ন লেখক সাংবাদিক শিল্পী বুদ্ধিজীবীরা তাদের কণ্ঠস্বরকে সমাজের মানুষের জাগ্রত করণে ব্যবহার করেছেন এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন।  তারা নিজের জ্ঞান এবং দর্শন দ্বারা জাতির বিবেককে জাগ্রত করেছেন এবং আমাদের  দেশের মানুষকে আপন সংস্কৃতি বুঝাতে চেষ্টা করেছেন।  যার ফলে দেশের মানুষ একত্র হয়ে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করে।  যেহেতু   শহীদ বুদ্ধিজীবীরা এদেশের মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন এবং পাকিস্তান বাহিনীর হেরে যাওয়ার এটি একটি বড় কারণ তাই এই শহীদ বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শিকারে পরিণত হয়েছেন।  তারা যখন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা নিশ্চিত তখন তারা এই বুদ্ধিজীবীদের ওপর প্রতিশোধ নিলেন এবং একেবারে জাতিকে বুদ্ধিহীন করার  অপতৎপরতা চালিয়েছিলেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা :

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরি করা হয়।  যে তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া 968 জন শিক্ষক ছিলেন।  শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন 21 জন।  সেই হিসেবে শহীদ শিক্ষাবিদের সংখ্যায় হচ্ছে 989  জন।  এছাড়াও বিভিন্ন পেশাজীবীর বুদ্ধিজীবীদের কে হত্যা করা হয়েছে।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিচার :

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পেছনে এ দেশের চেয়ে ব্যক্তিগণ জড়িত ছিলেন তাদের নাম জাতির সামনে আজ স্পষ্ট।  আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করার মাধ্যমে এদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার কিছুটা বিচার করা সম্ভব হয়েছে।  এদের মধ্যে অনেকের বিচার ও শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে।  দেশ ঘৃণ্য এ হত্যাকাণ্ড থেকে কিছুটা হলেও কলঙ্ক মুক্ত হতে পেরেছে।  আমরা যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছি তাদের বিকল্প পাওয়ায় দেশে কখনোই সম্ভব নয়।  কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে কিছুটা হলেও বাঙ্গালীদের মনে স্বস্তি মিলেছে যে আমরা এর প্রতিশোধ নিতে পেরেছি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা :

1971  সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় নয় মাস ধরেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে থাকে।  তবে 14 ই ডিসেম্বর বেশি সংখ্যক বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।  তাই তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিবসটি কে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।  ( শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা যখন লিখতে যাবেন তখন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কে ঘোষণা করে সেই নামটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ)

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন :

প্রতি বছর 14 ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।  এই দিনে বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজস্ব ধারায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে থাকে।  বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য অনেকে মোমবাতি প্রজ্জলন করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে থাকে।  শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং  মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে বাণী প্রদান করে থাকেন।  রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে থাকে।  যেসকল  মিডিয়া রয়েছে তারা তাদের নিজস্ব ধারায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে।  আমরা এই দিনটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ :

স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রথম স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয় ঢাকার মিরপুরে। স্মৃতিসৌধটি   এর স্থপতি ছিলেন মুস্তাফা  কুদ্দুস।  1 991 সালে ঢাকার রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়।  এর নকশা করেন জামিয়া আল সাফি ও ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। (যে

উপসংহার :

শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।  তারা এ  দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। জাতির স্বার্থ রক্ষার্থে ক্ষেত্রে তাদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য।  তারা তারা দেশ গঠনের ক্ষেত্রে আদর্শ স্থাপন করে গেছেন।  এখন আমাদেরকে সেই আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নতুন করে দেশকে গড়ে তুলতে হবে তবেই আমাদের পক্ষে তাদের ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x