বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ , বিজয় দিবসের তাৎপর্য, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনার অনেক ভালো আছেন। আজকে আমরা আপনাদের সাথে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলাপ আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ বিভিন্নভাবে পড়তে চান। যেটা আপনারা বই-পুস্তকে খুঁজে পেয়েছেন না। তাই আমরা আপনাদের কাছে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ একটু আলাদা এবং সুন্দরভাবে আর্টিকেল তৈরি করছি। চলুন শুরু করা যাক।

1971 সালের 16 ডিসেম্বর আমরা মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছি। আর তাই 16 ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। আনন্দের সাথে এ দিনটিকে আমরা প্রতি বছর গভীর শ্রদ্ধার সাথে জাতীয় মর্যাদায় উদযাপন করি।বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ বাঙালির  স্বাধীনতার চেতনা চিরতরে স্তব্ধ করে দেবার জন্য ইয়াহিয়া খান 1971 সালে 25 শে মার্চ নিরীহ বাঙালি সেনাবাহিনী লেলিয়ে দেয়।তারা বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে নিয়ে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের। পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। সারা দেশজুড়ে চলতে থাকে ধ্বংসলীলা।

স্বাধীনতার জন্য বাংলার আপামর জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিসংগ্রামে। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর হাজার 971 সালের 16 ই ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়। বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ 16 ই ডিসেম্বর এই মহান দিনটি প্রতিবছর আমাদের সামনে  সংগ্রামের স্মৃতি এসে হাজির হয়। বিজয় দিবস যখনই ফিরে আসে তখনই বাঙালি জাতি সংগ্রামী জীবনের প্রেরণা পাই। প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস পালিত হয়।

এ দিনে সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এদিনটি সরকারি ছুটির দিন। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান শোভাযাত্রা আলোচনা সভা সেমিনার ক্রিয়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করে থাকেন বাংলাদেশের মানুষেরা। সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হলেও আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি আজও।

প্রতিবছর বিজয় দিবসের আদর্শ আমাদের কর্ণকুহরে যে বার্তা সোনায় বাস্তব জীবনে আমরা ভুলে যাই বারবার। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে প্রাপ্ত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তুলতে হলে আমাদেরকে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। তবেইতো শহীদ ভাইদের স্বপ্ন পূরণ হবে ও তাদের আত্মা শান্তি পাবে।

স্বাধীনতা  দিবস

স্বাধীনতা এক অমূল্য সম্পদ।  ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে স্বাধীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। 26 শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। আমাদের জীবনের স্বাধীনতা দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। 1971 সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের সূচনা হয় অবসান ঘটে   23  23 বছর  বাপি পাকিস্তানি অপশাসনের।

বাঙালি স্বাধীনতা ঘোষণা এবং স্বাধীনতা লাভের পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ প্রেক্ষাপট ও সংগ্রামের ইতিহাস। 1947 সালে দেশ বিভাগের পর থেকে পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করে। প্রথমে আমাদের মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির উপর আঘাত আসে। পরবর্তীতে তাদের অনুসরণ ও ধারণ করে চরম আকার। হাজার 970 সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ লাভ করেছিল। কিন্তু জনগণের উপেক্ষা করে পাকিস্তানের সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করে।

এদেশে সচেতনতা কিছুতেই তা মেনে নিতে পারেনি। 1971 সালের 25 মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হামলা চালায় নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ নির্বিচারে হত্যা যোগ্য চালায় পিলখানা রাজারবাঘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। মধ্যরাতের পর হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

গ্রেফতারের পূর্বে অর্থাৎ 26 শে মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তার স্বাক্ষরিত ঘোষণাটি পিয়ার এর মিটারের মাধ্যমে চট্টগ্রামে প্রেরণা করেন। এরপর চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে 26 ও 27 শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর নামে প্রচারিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণা। সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির সংগ্রাম।

এরপর গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করে 9 মাসব্যাপী চলা বাঙালির বীরত্বপূর্ণ স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনাবলী। 1971 সালের 16 ডিসেম্বর বাঙালি লাভ করে চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে মুক্তির স্বাদ। আমাদের জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবস বিশেষ একটি দিন। প্রতিবছর ছাব্বিশে মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। একদিন সমস্ত ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় দীক্ষা প্রদান করা হয়। বলা হয়ে থাকে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। তাই প্রতিটি স্বাধীনতা দিবসে আমাদেরকে স্বাধীনতা রক্ষায় বলিষ্ঠ শপথ গ্রহণ করতে হবে। আর সেইসব কে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে দেশ গড়ার নতুন প্রত্যয়।

বিজয় দিবসের তাৎপর্য

মুক্তিযুদ্ধের একটি জাতীয় পতাকা এবং স্বাধীন ভূখণ্ড মধ্যে সীমিত নয়, এর তাৎপর্য সুদূর প্রসারিত। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে অবহেলিত পশ্চাদপদ শোষিত জাতি রচনা করেছিল অসমাপ্ত সৌরভ কথা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নামের পর আরেক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে জাতীয় জীবনে ঘটে গিয়েছিল নবজাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল অযুত সম্ভাবনার মুহূর্ত। স্বাধীনতা চেতনার রূপ পরিগ্রহ করে মূলনীতি মূলনীতিতে গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের  আদর্শ।

মক্তিযুদ্ধের বিজয়

শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হলেও আমাদের স্বপ্ন সম্ভাবনা বাস্তবের আঘাত ছিন্নভিন্ন হয়েছে। 1975 বুলেটের সপরিবারে জাতির জনকের মর্মান্তিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা আদর্শ পরিত্যক্ত। স্বাধীন দেশে গণতন্ত্র হয় নির্বাসিত। নতুন করে সংগ্রাম করতে হয়েছে গণতন্ত্র। আদর্শিকভাবে স্বাধীনতার মূল চেতনার অনেক কিছুই এখন অধরা। গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানিক কি করণে এখনো পাড়ি দিতে হবে অনেক পথ। অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন এখনো স্বপ্ন মাত্রা। জাতীয় জীবনে ইটের বদলে সংঘাত, তিতির অস্থিরতা। শান্তির নৈরাজ্য মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ।

কিন্তু এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও একুশ শতকে পদার্পণের মুহূর্তে বাংলাদেশের কিছু অগ্রগতি ও আছে। দেশের অর্ধেকেরও বেশি লোক দারিদ্র সীমার উপরে উঠতে পেরেছেন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। কৃষি ক্ষেত্রে প্রাণের সাড়া জেগেছে। গ্রামীণ নারী সমাজ জাগতে শুরু করেছে। শিক্ষার হার বেড়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে বিদেশি নিয়োগ বারছে।

বিজয় দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি

বাংলাদেশের বিজয় দিবসের পটভূমিতে রয়েছে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের একাগ্র গামী অধ্যায় রয়েছে পাকিস্তানে জঙ্গি দুই দশকের শাসন-শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে অগ্নি শপথ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস। ইতিহাসের পাতায় অন্যান্য মাইলফলক মহান ভাষা আন্দোলন ।পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের মাধ্যমে উন্মেষ ঘটেছিল বাঙালি ভাষা ভিত্তিক জাতীয়তাবাদী চেতনার।

এই চেতনার ধারায় ক্রমবিকাশ হয়েছে 1962 শিক্ষা আন্দোলন, 1966 এর ছয় দফা আন্দোলন, 1969 এর 11 দফা আন্দোলন ভেতর দিয়ে। এসব আন্দোলনের প্রচন্ড তার মুখে ঘটে যায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। স্বাধীকার চেতনায় জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নেয়। পাকিস্তানি সামরিক জঙ্গিতত্ত্ব দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি। স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে ছিল পাকিস্তান ধর্ম  বেরাজাল, অগ্নি শপথ নিয়েছিল স্বাধীনতা অর্জনের ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিল দুই দশকের দুঃশাসনের কেল্লা কে।

পরিশেষে বলা যায় যে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ সম্পর্কে আমরা আপনাদের অনেক ধারণা দিতে পেরেছি। আপনার যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন যে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ সম্পর্কে কতটা ধারণা পাওয়া যায়। এই বিজয় দিবস অনুষ্ঠান সম্পর্কে যদি আপনারা আরও কিছু জানতে চান তাহলে আপনারা আমাদের কমেন্ট করে বলতে পারেন। তাহলে আপনাদের আরো বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারব।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *