মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কেন প্রতিষ্ঠিত হয়, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কি কি রয়েছে

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কি এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কি কি নিদর্শন রয়েছে এসব বিষয়ে আজ আমরা জানবো।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কি এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর লক্ষ্য৊ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে দেশের মানুষকে সচেতন করতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নানা ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। জাদুঘরের ব্যবস্থাপনায় স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহন ও নিদর্শন সুবিধা সংবলিত কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এছাড়া একটি গাড়িকে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে যাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে একটি ছোট প্রদর্শনশালা তে উন্মুক্ত মঞ্চ রয়েছে। এখানে বিভিন্ন দর্শনীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অপরাপর আটটি দেশের সংবাদ জাদুঘরের সঙ্গে মিলে গঠন করেছে ইন্টার্নেশনাল কোয়ালিশন অফ হিস্ট্রি মিউজিয়াম।  জাদুঘরের   সংগ্রহীত সংখ্যা 10 হাজারের অধিক।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তথা আমাদের গৌরবময় জাতীয় ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং প্রদর্শন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর লক্ষ্য। সংগৃহীত সকল প্রদর্শন জাদুঘরের লক্ষ্য। জাদুঘর দেশের ঐতিহাসিক ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে জনসমক্ষে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে এবং বর্তমানের মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করে।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বহুমাত্রিক জাদুঘর নয়, তবে বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে জীবন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি। স্মারক দলিলপত্র ইত্যাদির একমাত্র অন্যতম সংগ্রহশালা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যায় এবং এর সঠিক ইতিহাস জানতে পারে এটাই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রধান লক্ষ্য।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর  কেন প্রতিষ্ঠিত হয়

আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় রচিত হয় 1971 সালে। 1971 সালের 16 ডিসেম্বর এর বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের স্মৃতি কাগার

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত করে তোলার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ’ মুক্তিযুদ্ধ একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়৊

সেগুনবাগিচায় বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর যাত্রা শুরু হয়েছিল। 1996 সালের 22 মার্চ এ। এটি ছিল একেবারেই ব্যক্তিগত পর্যায়ের  উদ্যোগ।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত৊

বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঢাকার আগারগাঁও এ অবস্থিত। এখন জাদুঘরের সংগ্রহ রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ দের ব্যবহৃত সামগ্রী অস্ত্র দলিল চিঠিপত্র ইত্যাদি মিলিয়ে 17 হাজারেরও বেশি নিদর্শন।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কি কি রয়েছে এখানে থাকার নিদর্শন গুলো কি কি৊

102 কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নয়তলা ভবন। ভবনের ভূগর্ভস্থ কার পারকিং আকাইদ ল্যাবরেটরি ইত্যাদি জাদুঘর কার্যালয় ও মিলনাতায়ন। প্রথম তলায় শিখা অম্লান, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার ব্রঞ্চ নির্মিত ভাস্কর্য, মুক্তমঞ্চ, ক্যান্টিন, স্মারক বিক্রয় কেন্দ্র ও টিকিট কাউন্টার। এখানে একটি হেলিকপ্টার একটা বিমান রয়েছে তাদের সঙ্গে আটকানো এগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে গবেষণা কেন্দ্র পাঠাগার।

তৃতীয় চতুর্থ তলায় চারটি মূল প্রদর্শন পক্ষ। পঞ্চম তলায় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কক্ষ। প্রথম পক্ষের নাম  আমার ঐতিহ্য আমার সংগ্রাম। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন হাজার  1970 সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত দেশের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। প্রাচীন টেরাকোটা শিলাখণ্ড সহ নানা প্রকার নিদর্শন এর সঙ্গে রয়েছে ঐতিহাসিক ঘটনা ও আলোকচিত্র।

দ্বিতীয় প্রদর্শন কক্ষের নাম আমাদের অধিকার আমাদের ত্যাগ। এই কক্ষ থেকেই প্রদর্শন সরাসরি ঢুকে  পড়বেন মহান মুক্তিযুদ্ধের  পড়বে। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে বিশাল এক সাদাকালো ছবি।

স্বাধীনতার দাবিতে রেসকোর্স ময়দানে অগণিত মানুষের বিশাল সমাবেশ 1970 সালের 3 জানুয়ারি ছবিটি তুলেছিলেন মিয়া নামে এক আলোকচিত্রী। যে ক্যামেরাটির দৃশ্যটি ধারণা করা হয়েছিল সেই ক্যামেরাটি ও আছে ছবির নিচে।

7 ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের ছবি। এই গ্যালারি একটি অংশের চমৎকার স্থাপনা কর্মের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে 1971 সালের 25 মার্চ কাল রাতের গণহত্যার ঘটনা। অপারেশন সার্চলাইট নামে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ঢাকায় ঘুমন্ত বাঙালির উপর ট্যাংক কামান ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়।

পরের দুটি প্রদর্শন চতুর্থ তলায়। এর প্রথমটির শিরোনাম আমাদের যুদ্ধ আমাদের  মিত্র। এখানে আসে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জীবনযাত্রা বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বড় আকারের ডিজিটাল প্রিন্ট। মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ হওয়া ও রাজাকারদের তৎপরতা, মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা যুদ্ধের আশ্রয়স্থল ।

এর পাশাপাশি আছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দেশি-বিদেশি যারা বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে, জনমত সৃষ্টি করেছেন সে দিনগুলো। রয়েছে পণ্ডিত রবিশঙ্কর আয়োজিত কনসার্ট ফর বাংলাদেশ গানের জর্জ হ্যারিসনের হাতে লেখা পান্ডুলিপি স্টাফ নোটেশন।

শেষ প্রদর্শনীর নাম রাখা হয়েছে আমাদের জয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত আশা করি আপনারা নিচে আর্টিকেলে সম্পূর্ণ ধারণা পাবেন।

শেষ প্রদর্শন কক্ষ টির নাম হয়েছে আমাদের জয়, আমাদের মূল্যবোধ। ইতিহাসের বিভিন্ন নিদর্শন বিলোনিয়ার যুদ্ধের রেলস্টেশনের রেলিং ট্রলি মিত্রবাহিনীর ছাত্রী সেনাদের আক্রমণ বাড়িঘর প্রভৃতি। শেষ হয়েছে 1972 সালের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের অনুলিপি দিয়ে।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঢাকার আগারগাঁও এ অবস্থিত।

কিভাবে যাবেনঃ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিএনজি টেক্সী কিংবা বাসে চড়ে আগারগাঁওয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আসতে পারবেন

প্রবেশ টিকেট মূল্য ও সময়সূচী

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রবেশের ধনপতি টিকিটের মূল্য 20 টাকা। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কোথায় অবস্থিত। সপ্তাহের প্রতি রবিবার বাদে জাদুঘরটি গৃষ্ম কালীন সময়ে প্রতিদিন সকাল 10 টা থেকে সন্ধ্যা 6 টা পর্যন্ত এবং শীতকালীন সময় সকাল 10 টা থেকে 5 টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।

দৃষ্টি আকর্ষণ

যেকোনো পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ আমাদের দেশের সম্পদ। এইসবে স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন আমাদেরকে উৎসাহিত করুন অন্যদেরকে উৎসাহিত করুন। আমাদের দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হওয়ার দায়িত্ব আমাদের।

সতর্কতাঃ

হোটেল রিসোর্ট যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইড প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যানবাহন ও নানারকম যোগাযোগের মোবাইল নাম্বার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিবেন।

Similar Posts