Islamic

নামাজের ওয়াজিব কয়টি, নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি

1 min read

নামাজের ওয়াজিব কয়টি?

মুসলিম হিসেবে প্রাপ্তবয়স্ক আমাদের সকলের উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ। আমাদের বিভিন্ন কারণে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা হয় না। এমনকি আমাদের অনেকেরই নামাজ সম্পর্কে জ্ঞান একেবারেই কম। আমরা অনেকেই জানিনা নামাজের মধ্যে কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো ফরজ বা আবশ্যক আবার কিছু এমন কাজ রয়েছে যেগুলোকে ওয়াজিব বলা হয় এই ওয়াজিবগুলো পালন করা অত্যন্ত জরুরি। কেউ যদি নামাজে ওয়াজিবগুলো ভুলে ছেড়ে দেয় তাহলে শেষ রাকাতে আত্তাহিয়াতুর পর সালাম ফিরিয়ে আবার দুটি সেজদা দিতে হয় যাকে সাহু সিজদা বলা হয় তখন সেই ভুলটি সংশোধন হয়ে যায়। আজকে আমরা জানবো নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি এবং প্রত্যেকটির কোরআন বা হাদিসের রেফারেন্স দেওয়ার চেষ্টা করব আশা করি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন তাহলে নামাজের ওয়াজিব কয়টি তা দলিল প্রমাণসহ জানতে পারবেন।

প্রথমে জেনে নেওয়া যাক ওয়াজিব কাকে বলে।

যেসকল আদেশমূলক বিধান অকাট্য প্রাধান্যযোগ্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত এবং তার ওপর আমল করা অপরিহার্য তাদেরকে ওয়াজিব বলা হয়।

ওয়াজিবের হুকুম

তার অকাট্যতার ওপর সুনিশ্চিতভাবে বিশ্বাস রাখা অপরিহার্য না হলেও তার ওপর আমল করা অপরিহার্য।

কোনো ওজর ব্যতীত ওয়াজিব ত্যাগকারী গুনাহগার হবে এবং তার অস্বীকারকারী ‘ফাসিক’ বলে গণ্য করা হয়। তবে তাকে ‘কাফির’ বলা

যাবে না।

সলাতের বেশ কিছু আরকান ওয়াজিব আমল হিসেবে বিবেচিত। এ আমলগুলোতে ভুল হলে সাহু সিজদা দিতে হয়।

নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি তা নিচে

(১) সুরা ফাতেহা পড়া (সকল রাকাতে)

(২) সূরা ফাতিহার পরে ফরজ সলাতের প্রথম দু’রাকাতে সহজপাঠ্য যেকোন ক্বিরাত পাঠ করা

(৩) সিররী (অনুচ্চস্বরের) সলাতে অনুচ্চস্বরে ও যেহরী (উচ্চস্বরের) সলাতে উচ্চস্বরে ক্বেরাত পড়া

(৪) ধীর-স্থীর ও প্রশান্তির সাথে দীর্ঘ রুকু ও সিজদা করা।

(৫) রুকু থেকে স্থির হয়ে দাঁড়ানো।

(৬) দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।

(৭) দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সিজদার পর প্রথম বৈঠকে বসা।

(৮) প্রথম ও শেষ বৈঠকে তাশাহুদ (আত্তাহিয়াতু ..) পড়া।

(৯) প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের পর অতিরিক্ত কিছু যেমন দুরূদ পড়া যাবে না, পড়লে সাহু সিজদা দিতে হবে।

(১০) সলাতের ক্রিয়াসমূহের মাঝে তারতীব (ক্রমধারা) রক্ষাকরা।

(১১) বেতের সলাতে দু’আ কুনুত পড়া।

(১২) দুই ঈদের সলাতে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।

(১৩) “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলে সলাত শেষ করা।

দলিল সহ নামাজের ওয়াজিব কয়টি তা নিচে দেয়া হলো

(১) সুরা ফাতেহা পড়া (সকল রাকাতে)

” لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ ”

যে ব্যক্তি সালাতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হলো না।* (মুসলিম ৪/১১, হাঃ ৩৯৪, আহমাদ ২২৮০৭)

(২) সূরা ফাতিহার পরে ফরজ সলাতের প্রথম দু’রাকাতে সহজপাঠ্য যেকোন ক্বিরাত পাঠ করা

সহীহ বুখারী : ৭৫৯

—حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنْ صَلاَةِ الظُّهْرِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ، وَيُسْمِعُ الآيَةَ أَحْيَانًا، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي الْعَصْرِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ.

অনুবাদ:

৭৫৯. আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’ রাক‘আতে সূরাহ্ ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরাহ্ পাঠ করতেন। প্রথম রাক‘আতে দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আত সংক্ষেপ করতেন। কখনো কোন আয়াত শুনিয়ে পড়তেন। ‘আসরের সালাতেও তিনি সূরাহ্ ফাতিহার সাথে অন্য দু’টি সূরাহ্ পড়তেন। প্রথম রাক‘আত দীর্ঘ করতেন। ফজরের প্রথম রাক‘আতও তিনি দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সংক্ষেপ করতেন। (মুসলিম ৪/৩৪, হাঃ ৪৫১)

(৩) সিররী (অনুচ্চস্বরের) সলাতে অনুচ্চস্বরে ও যেহরী (উচ্চস্বরের) সলাতে উচ্চস্বরে ক্বেরাত পড়া

সহীহ বুখারী : ৭৬০

—حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي عُمَارَةُ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.

অনুবাদ:

৭৬০. আবূ মা‘মার (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খাববাব (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কী করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়। (৭৪৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭২৪)

(৪) ধীর-স্থীর ও প্রশান্তির সাথে দীর্ঘ রুকু ও সিজদা করা।

সহীহ বুখারী : ৭৫৭

—حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ وَقَالَ ارْجِعْ فَصَلِّ، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ “. فَرَجَعَ يُصَلِّي كَمَا صَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ” ثَلاَثًا. فَقَالَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَهُ فَعَلِّمْنِي. فَقَالَ ” إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا “.”

অনুবাদ:

৭৫৭. আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন একজন সহাবী এসে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাম করলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, আবার গিয়ে সালাত আদায় কর। কেননা, তুমিতো সালাত আদায় করনি। তিনি ফিরে গিয়ে পূর্বের মত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাম করলেন। তিনি বললেনঃ ফিরে গিয়ে আবার সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার বললেন। সহাবী বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন- আমিতো এর চেয়ে সুন্দর করে সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাক্বীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। অতঃপর রুকু‘তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ‘ করবে। অতঃপর সাজদাহ্ হতে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর তোমার পুরো সালাতে এভাবেই করবে। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭২১)

(৫) রুকু থেকে স্থির হয়ে দাঁড়ানো।

চার নাম্বারে উল্লেখিত হাদিসটি এই ৫ নাম্বারের ও দলিল।

(৬) দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।

চার নাম্বারে উল্লেখিত হাদিসটি এই ৬ নাম্বারের ও দলিল।

(৭) দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সিজদার পর প্রথম বৈঠকে বসা।

সহীহ মুসলিম : ৪৯৮

—حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ، – يَعْنِي الأَحْمَرَ – عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْمُعَلِّمُ، عَنْ بُدَيْلِ بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَفْتِحُ الصَّلاَةَ بِالتَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةَ بِـ { الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ} وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يُشْخِصْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلِكَنْ بَيْنَ ذَلِكَ وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَائِمًا وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا وَكَانَ يَقُولُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ وَيَنْهَى أَنْ يَفْتَرِشَ الرَّجُلُ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ السَّبُعِ وَكَانَ يَخْتِمُ الصَّلاَةَ بِالتَّسْلِيمِ . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ نُمَيْرٍ عَنْ أَبِي خَالِدٍ وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عَقِبِ الشَّيْطَانِ .

অনুবাদ:

মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ….. আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলে সালাত শুরু করতেন এবং সূরাহ আল ফা-তিহাহ দিয়ে কিরাআত পাঠ শুরু করতেন। তিনি যখন রুকু করতেন, ঘাড় থেকে মাথা নীচুও করতেন না, উপরেও উচু করে রাখতেন না বরং একই সমতলে রাখতেন। তিনি যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সাজদাহ করতেন না। তিনি (প্রথম) সাজদাহ থেকে মাথা তুলে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত (দ্বিতীয়) সাজদায় যেতেন না। তিনি প্রতি দুরাকাআত অন্তর “আত্তাহিয়াতু” পাঠ করতেন। তিনি বসার সময় বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা দাঁড় করিয়ে রাখতেন। তিনি শয়তানের বসা থেকে নিষেধ করতেন। তিনি পুরুষ লোকেদেরকে হিংস্র জন্তুর ন্যায় দু’হাত মাটিতে ছড়িয়ে দিতে নিষেধ করতেন। তিনি সালামের মাধ্যমে সলাতের সমাপ্তি ঘোষণা করতেন।

ইবনু নুমায়র থেকে আবূ খালিদ-এর সূত্রে বর্ণিত আছেঃ তিনি শয়তানের মতো* বসতে নিষেধ করতেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ  ৯৯১, ইসলামিক সেন্টারঃ  ১০০২)

(৮) প্রথম ও শেষ বৈঠকে তাশাহুদ (আত্তাহিয়াতু ..) পড়া।

সাত নাম্বারে উল্লেখিত হাদিসটি এই ৮ নাম্বারের ও দলিল।

(৯) প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের পর অতিরিক্ত কিছু যেমন দুরূদ পড়া যাবে না, পড়লে সাহু সিজদা দিতে হবে।

সহীহ মুসলিম : ৫৭২/১

—وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ، وَأَبُو بَكْرٍ ابْنَا أَبِي شَيْبَةَ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، – قَالَ عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، – عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ إِبْرَاهِيمُ زَادَ أَوْ نَقَصَ – فَلَمَّا سَلَّمَ قِيلَ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَحَدَثَ فِي الصَّلاَةِ شَىْءٌ قَالَ وَمَا ذَاكَ ” . قَالُوا صَلَّيْتَ كَذَا وَكَذَا – قَالَ – فَثَنَى رِجْلَيْهِ وَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ ” إِنَّهُ لَوْ حَدَثَ فِي الصَّلاَةِ شَىْءٌ أَنْبَأْتُكُمْ بِهِ وَلَكِنْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أَنْسَى كَمَا تَنْسَوْنَ فَإِذَا نَسِيتُ فَذَكِّرُونِي وَإِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلْيَتَحَرَّ الصَّوَابَ فَلْيُتِمَّ عَلَيْهِ ثُمَّ لْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ ” .”

অনুবাদ:

আবূ শায়বার দু’ পুত্র আবূ বকর ও উসমান এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ….. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাত আদায় করলেন। বর্ণনাকারী ইবরাহীমের বর্ণনা মতে, এ সলাতে তিনি কিছুই কম বা বেশী করে ফেললেন। সালাম ফিরানোর পর তাকে (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! সলাতের ব্যাপারে কি নতুন কোন হুকুম দেয়া হয়েছে? এ কথা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, নতুন হুকুম আবার কেমন? তখন সবাই বললঃ আপনি সলাতে এরূপ করেছেন। এ কথা শুনে তিনি পা দু’ খানা ভাজ করে কিবলামুখী হয়ে বসলেন এবং দুটি সাজদাহ করে তারপর সালাম ফিরালেন। এরপর আমাদের দিকে ঘুরে বললেনঃ সলাতের ব্যাপারে কোন নতুন হুকুম আসলে আমি তোমাদরকে জানতাম। (এটা তেমনি কিছু নয়) বরং আমি তো মানুষ বৈ কিছুই না। তোমাদের যেমন ভুল হয় আমারও তেমন ভুল হয়। সুতরাং আমি যদি কোন কিছু ভুলে যাই তাহলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিও। আর সলাতের মধ্যে তোমাদের কারো কোন সন্দেহ হলে চিন্তা-ভাবনার ভিত্তিতে যেটি সঠিক বলে মনে হবে সেটিই করবে এবং এর উপর ভিত্তি করে সলাত শেষ করবে। অতঃপর দু’টি সাজদাহ করবে। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫৪, ইসলামীক সেন্টার ১১৬৩)

(১০) সলাতের ক্রিয়াসমূহের মাঝে তারতীব (ক্রমধারা) রক্ষাকরা।

সাত নাম্বারে উল্লেখিত হাদিসটি এই ১০ নম্বরেরও দলিল।

(১১) বেতের সলাতে দু’আ কুনুত পড়া।

ফাতাওয়ায়ে শামী (খণ্ডঃ ২ পৃষ্ঠাঃ ২০০)

আল-ফিকহুল হানাফি

প্রকাশকঃ দারুল কলম দামেশক (খণ্ডঃ ১ পৃষ্ঠাঃ ২১৩)

(১২) দুই ঈদের সলাতে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।

সুনানে আবু দাউদ : ১১৫৩

—حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، وَابْنُ أَبِي زِيَادٍ، – الْمَعْنَى قَرِيبٌ – قَالاَ حَدَّثَنَا زَيْدٌ، – يَعْنِي ابْنَ حُبَابٍ – عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو عَائِشَةَ، جَلِيسٌ لأَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْعَاصِ، سَأَلَ أَبَا مُوسَى الأَشْعَرِيَّ وَحُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكَبِّرُ فِي الأَضْحَى وَالْفِطْرِ فَقَالَ أَبُو مُوسَى كَانَ يُكَبِّرُ أَرْبَعًا تَكْبِيرَهُ عَلَى الْجَنَائِزِ . فَقَالَ حُذَيْفَةُ صَدَقَ . فَقَالَ أَبُو مُوسَى كَذَلِكَ كُنْتُ أُكَبِّرُ فِي الْبَصْرَةِ حَيْثُ كُنْتُ عَلَيْهِمْ . وَقَالَ أَبُو عَائِشَةَ وَأَنَا حَاضِرٌ سَعِيدَ بْنَ الْعَاصِ .

অনুবাদ:

আবূ মূসা আল-আশ’আরী ও হুযাইফাহ ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবূ মূসা আল-আশ’আরী ও হুযাইফাহ ইবনুল ইয়ামান (রাঃ)- কে সাঈদ ইবনুল আস (রহঃ) জিজ্ঞেস করেন, ঈদুল ফিত্বর এবং ঈদুল আযহার সালাত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে তাকবীর বলতেন? আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) বলেন, তিনি জানাযার সালাতের ন্যায় চারটি তাকবীর বলতেন। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) সত্যি বলেছেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আমি বাসরাহতে গভর্নর থাকাকালে (ঈদের সালাত) এভাবেই তাকবীর দিয়েছি। আবূ আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সাঈদ ইবনুল আসের প্রশ্ন করার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম।

(১৩) “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলে সলাত শেষ করা।

সহীহ মুসলিম : ৪৩১/১

—حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مِسْعَرٍ، حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ ابْنُ الْقِبْطِيَّةِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْنَا السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ . وَأَشَارَ بِيَدِهِ إِلَى الْجَانِبَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” عَلاَمَ تُومِئُونَ بِأَيْدِيكُمْ كَأَنَّهَا أَذْنَابُ خَيْلٍ شُمُسٍ إِنَّمَا يَكْفِي أَحَدَكُمْ أَنْ يَضَعَ يَدَهُ عَلَى فَخِذِهِ ثُمَّ يُسَلِّمُ عَلَى أَخِيهِ مَنْ عَلَى يَمِينِهِ وَشِمَالِهِ ”

অনুবাদ:

আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ….. জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সালাত আদায় করতাম তখন, ‘আসসালা-মু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্ল-হ’ ‘আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্ল-হ’ বলে সালাত শেষ করতাম। তিনি (জাবির) হাত দিয়ে উভয় দিকে ইশারা করে দেখালেন। (অর্থাৎ- সালামের সাথে সাথে হাতে ইশারাও করা হত)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তোমরা (সালামের সময়) দুষ্ট ঘোড়ার লেজ ঘুরানোর মতো দু’হাত দিয়ে ইশারা করো কেন? তোমরা উরুর উপর হাত রেখে ডানে-বায়ে মুখ ফিরিয়ে তোমাদের ভাইদের সালাম দিবে। এরূপ করাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৮৫২, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮৬৫)*

শেষ কথা নামাজের ওয়াজিব কয়টি

আশা করি নামাজের ওয়াজিব কয়টি তা জানতে পেরেছেন।আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে নামাজের ওয়াজিব গুলো ভালোভাবে জেনে নামাজ সহি শুদ্ধভাবে আদায় করার মত তৌফিক দান করুন আমীন। পোস্টটি ভাল লাগলে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করতে পারেন। অন্যান্য ভাইয়েরও উপকৃত হবে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x