দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং ফযিলত

দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং ফযিলত

দুরূদ শব্দের আরবি হচ্ছে সালাত। আর সালাত শব্দের অর্থ হলো দুরূদ বা শুভকামনা, তাসবীহ, গুণকীর্তন, রহমত, দয়া, করুণা, ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রর্থনা করা ইত্যাদি। তো চলুন জেনে নেই দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ এবং ফযিলত।

নামাজে তাশাহহুদের পর আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হয়। দুরূদ শরীফ পাঠ করা ছাড়া নামাজ হয় না। তাই আমাদের উচিত বুঝে শুনে শুদ্ধভাবে দুরূদ শরীফ পাঠ করা।

 নামাজে ব্যবহৃত দুরুদ শরীফ দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ. وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ’ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ. اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ. وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ. اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

আল্লাাহুম্মা সল্লি ‘আলাা মুহাম্মাদ, ওয়া ‘আলাা আালি মুহাম্মাদ, কামাা সল্লাইতা, আলাা ইবরাাহীমা ওয়া ‘আলাা আালি ইবরাাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাাহুম্মা বাারিক ‘আলাা মুহাম্মাদ ওয়া আলাা আালি মুহাম্মাদ, কামাা বাারকতা ‘আলাা ইবরাাহীমা ওয়া ‘আলাা আালি ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

দরুদ শরীফ এর বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি রহমত নাযিল করো যেমন রহমত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি বরকত নাযিল করো যেমন বরকত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান। (সহীহ বুখারী, হাদীস:২৯৭০)

দরুদ শরীফ পাঠের গুরুত্ব

হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবি লায়লা বলেন, আমার সাথে হযরত কা‘ব ইবনে উজরা রা. এর সাক্ষাত হল। তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি হাদিয়া দিবো যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি? আমি বললাম, হ্যা আমাকে সেই হাদিয়া দিন। তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, হে আল্লাহর রাসূল, আপনার প্রতি সালাম প্রেরণ করার বিষয়টি তো আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে শিখিয়েছেন কিন্তু আমরা আপনার ও আপনার পরিবারবর্গের উপর দুরূদ কীভাবে পাঠাব? (উত্তরে) তিনি বলেন দরুদে ইব্রাহিম পাঠ কর।

দুরুদ শরীফ পড়ার উত্তম সময়

১) নামাযের শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পাঠ করার পর।

২) জানাযার নামাযে ২য় তাকবীর বলার পর।

৩) জুম’আর দিবসে।

৪) মুয়াজ্জিনের আযান শোনার পর।

৫) মসজিদে প্রবেশের পূর্বে এবং তা হতে বের হওয়ার পূর্বে।

৬) সাফা ও মারওয়া সা’য়ী করার সময়।

৭) কোন মজলিস থেকে পৃথক হওয়ার পূর্বে।

৮) সকাল-সন্ধা।

৯) পাঠ শুরু করার পূর্বে এবং শেষ করার পূর্বে।

১০) দু’আ বা মুনাজাত করার সময়।

আরো কিছু দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং ফযিলত

দোজখের আযাব মাফ হওয়ার দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

هُمَّ اِنِّي اَصْبَحْتُ اَشْهَدُكَ وَاَشْهَدُ حَمَلَةِ عَرْشِكَ وَمَلٰئِكَتِكَ وَجَمِيْعِ خَلْقِكَ اِنَّكَ اَنْتَ اللهُ لَااِلَهَ اِلاَّ اَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ وَاَنَّ مُحَمَّدً عَبْدَكَ وَرَسُوْلُكَ-

উচ্চারণ

(আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্বাহতু আশহাদুকা ওয়া আশহাদু হামালাতি আরশিকা, ওয়া মলাইকাতিকা, ওয়া জামী-’ই খলক্বিকা ইন্নাকা আন্তাল্লাহু লা- ইলাহা ইল্লা আন্তা, ওয়াহ্দাকা লা-শারীকালাকা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রাসূলুকা)

এই দরুদ শরীফ এর ফযিলত:

হযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (দ:) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি এই দুরূদ শরীফ সকালে বা সন্ধ্যায় ১বার পাঠ করবে, আল্লাহ তা’আলা তার এক চতুর্থাংশ দোজখের আজাব মাফ করবেন এবং দুইবার পাঠ করলে অর্ধেক আজাব মাফ করবেন এবং তিনবার পাঠ করলে তিন চতুর্থাংশ এবং ৪বার পাঠ করলে আল্লাহ তা’আলা তাকে সম্পূর্ণ দোযখের আযাব থেকে রেহাই দেবেন।

দুনিয়াতে জান্নাত দেখার দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

صَلَّى اللهُ عَليٰ حَبِيْبِهٖ مُحَمَّدٍ وَاٰلِهٖ وَسلَّمَ

(ছাল্লাল্লাহু আলা হাবীবিহী মুহাম্মাদিন ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লিম।)

এই দরুদ শরীফ এর ফযিলত:

যে ব্যক্তি এই দুরূদ শরীফ একাধারে এক হাজার বার পাঠ করবে, তার মৃত্যুর পূর্বে সে ইনশা’আল্লাহ  জান্নাতে তার স্থান ও জান্নাতের ঘর দেখতে পাবে।

দরূদে নারিয়া বা সালাতে নারিয়া দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

اَللّٰهُمَّ صَلِّ صَلٰوةً كَامِلَةً وَسَلِّمْ سَلَامًا تَامًّا عَليٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدِنِ الَّذِيْ تَنْحَلُّ بِهِ الْعُقَدُ وَتَنْفَرِجُ بِهِ الْكُرَبُ وَتُقْضىٰ بِهِ الْحَوَائِجُ وَتُنَالُ بِهِ الرَّغَائِبُ وَحُسْنُ الْخَوَاتِمِ وَيُسْتَسْقَي الْغَمَامُ بِوَجْهِهٖ الْكَرِيْمِ وَعَليٰ اٰلِهٖ وَصَحْبِهٖ فِي كُلِّ لَمْحَةٍ وَّنَفَسٍ بِعَدَدِ كُلِّ مَعْلُوْمٍ لَكَ-

বাংলা উচ্চারনঃ

(আল্লাহুম্মা ছাল্লি ছালাতান কামিলাতান ওয়া সাল্লিম সালামান তাম্মান আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিনিল্লাযী তানহাল্লু বিহীল উক্বাদু ওয়া তানফারিজু বিহীল কুরাবু ওয়া তুক্বদ-বিহীল হাওয়ায়িজু ওয়া তুনালু বিহীর রাগাইবু ওয়া হুসনুল খওয়াতিমু ওয়া ইউস্ তাস্কাল গামামু বিওয়াজ হিহিল কারীম,ওয়া আ’লা আলিহী ওয়া ছাহবিহী ফী কুল্লি লাম্হাতিন ওয়া নাফাসিম বিআদাদি কুল্লি মা’লুমল্লাক্)

এই দরুদ শরীফ এর ফযিলত:

দুরারোগ্য, বালা-মুছিবত, চাকুরী লাভের জন্য, ব্যবসার উন্নতি ও যে কোন আশা পূরণের জন্য এবং বিবাহ হওয়ার জন্য ৪৪৪৪ বার পাঠ করলে ইনশাআল্লাহ সফল হবেন।

দরূদে ফুতুহাত দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

بِسْمِ اللهِ اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا وَعَلٰي اٰلِهٖ بِعَدَدِ اَنْوَاعِ الرِّزْقِ وَالْفُتُوْحَاتِ يَابَاسِطَ الَّذِيْ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ- اُبْسُطْ عَلَيْنَا رِزْقًاوَاسِعًا مِنْ كُلِّ جِهَةٍ مِّنْ خَزَائِنِ غَيْبِكَ بِغَيْرِ مِنَّةٍ مَّخْلُوْقٍ ِبۢمَحْضٍ فَضْلِكَ وَكَرَمِكَ بِغَيْرِ حِسَابٍ-

(বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সাইয়্যিদিনা ওয়া আ’লা আলিহি বি আদাদি আনওয়াইর রিজক্বি ওয়াল ফুতুহাতি ইয়া বা-সিতাল্লাযী ইয়াব্সুতুর রিয্কা লিমাঁই ইয়াশাউ বিগাইরি হিসাব। উসবুত আলাইনা রিয্কাঁও ওয়াসিআম্ মিন কুল্লি জিহাতিম মিন খাযায়িনি গাইবিকা বিগাইরি মান্নাতিম্ মাখলুক্বিম বিমাহ্দি ফাদ্লি কা ওয়া কারামিকা বিগাইরি হিসাব)

এই দরুদ শরীফ এর ফযিলত:

এই দুরূদ শরীফ ৩বার পাঠ করলে জীবনে কখনো অবনতি ঘটবে না ও ধনে-জনে সমৃদ্ধ শালী থাকবে। ইনশা’আল্লাহ

দরূদে রু’ইয়াতে নবী করিম (সাঃ)

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍنِ النَّبِيِّ اْلاُمِيِّ

(আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিনি ন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি)

এই দরুদ শরীফ এর ফযিলত:

হযরত বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রঃ) লিখেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ এই নিয়্যতে পড়ে যে, প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১বার আয়াতুল কুরসী ও ১৫বার সূরা ইখলাস এবং নামাজ শেষে এই দুরূদ শরীফ ১০০০ বার পড়বে অবশ্যই সে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখতে পাবে। যদি ঐ রাতে না দেখে তবে ২য় শুক্রবার আসার পূর্বে দেখতে পাবে। এবং তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। ইনশা’আল্লাহ

দরূদে তুনাজ্জিনা দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلوٰةً تُنَجِّيْنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْأَهْوَالِ وَاْلآفَاتِ وَتَقْضِيْ لَنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْحَاجَاتِ وَتُطَهِّرُنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ السَّيِّاٰتِ وَتَرْفَعُنَا بِهَا عِنْدَكَ اَعْليٰ الدَّرَجَاتِ وَتُبَلِّغُنَا بِهَا اَقْصىٰ الْغَايَاتِ مِنْ جَمِيْعِ الْخَيْرَاتِ فِي الْحَيَاتِ وَبَعْدَ الْمَمَاتِ- اِنَّكَ عَليٰ كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ-

(আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আ-লি সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন সালাতান তুনাজ্জিনা বিহা মিন জামীয়িল আহ্ওয়ালি ওয়াল আফাত, ওয়া ত্বাক্দি লানা মিন জামীয়িল হাজাত। ওয়া তুতাহ্হিনরুনা বিহা মিন জামীয়িস্ সাইয়্যিআত।ওয়া তারফউনা বিহা ইন্দাকা আ’লাদ্দারাজাত। ওয়া তুবাল্লিগুনা বিহা আকসাল গায়াত মিন জামীয়িল খাইরাত ফিল হয়াতি ওয়া বা’দাল মামাত। ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর;বিরহমাতিকা ইয়া আরহার্মা রহিমীন।)

এই  দুরুদ শরীফ এর ফযিলত:

পাক সাফ স্থানে বসে ১হাজার বার পাঠ করলে গুরুতর মোকাদ্দামায় ও আশ্চর্য সুফল পাওয়া যায়। প্রত্যহ ফজর ও মাগরিবের পর ১১বার এই দুরূদ শরীফ পাঠ করলে কখনো চাকরি যাবেনা ও রিযিক বন্ধ হবেনা।এই দুরূদ শরীফ ৩বার টাঠ করে ১মুষ্টি মাটির উপর ৩বার ফুঁক দিয়ে কবরের উপর ছিটিয়ে দিলে শিয়াল কুকুর দ্বারা ঐ কবরের লাশ নষ্ট হবেনা।

দরূদে খাইর

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا وَنَبِيِّنَا وَشَفِيْعِنَا وَمَوْلَآنَا مُحَمَّدٍ صَلَّي اللهَ عَلَيْهِ وَعَليٰ اٰلِهٖ وَاَصْحَابِهِ وَاَزْوَاجِهِ وَبَارِكْ وَسَلِّمْ

(আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সাইয়্যিদিনা ওয়া নাবিয়্যিনা ওয়া শাফীয়িনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আ’লা আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া বারিক ওয়া সাল্লিম।)

এই  দুরুদ শরীফ এর ফযিলত:

যিনি সর্বদা এই দুরূদ শরীফ আমল করবেন- তিনি অবশ্যই দেশের সর্দার হবেন। যদি তা না হয়, তবে অন্তত স্বীয় বংশের সর্দার রূপে বা শ্রেষ্ঠ ধনী রূপে ইজ্জত পাবেন। প্রত্যহ চাশ্ত নামাযের পর ২১বার পড়লে ইনশা’আল্লাহ ধনী হয়ে যাবে।

মাগফিরাতের দুরূদ শরীফ দুরুদ শরীফ এর বাংলা উচ্চারণ

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلىٰ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَلىٰ اٰلِهٖ وَسَلِّم

(আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা সাইয়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিও ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিম)

এই  দুরুদ শরীফ এর ফযিলত:

তাজেদারে মদীনা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান যে ব্যক্তি এই দুরূদ শরীফ পড়বে যদি দাঁড়ানো থাকে তবে বসার পূর্বে এবং বসা থাকলে দাঁড়ানোর পূর্বেই তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

বৃষ্টির সময় এই দুরূদ শরীফ পড়া উত্তম

اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَّسَلِّمْ عَلىٰ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَّ علىٰ اٰلِهٖ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ بِعَدَدِ قَطْرَاتِ الْأَمْطَارِ

(আল্লাহুম্মা ছাল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা সাইয়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিও ওয়া আ’লা আলিহি সাইয়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন্ বি আদাদি ক্বাতরাতিল আমতার)

 এই দুরুদ শরীফ এর ফযিলত:

বৃষ্টি আসার সময় এই দুরূদ শরীফ পাঠ করলে যতগুলো ফোটা মাটিতে পড়ে ততগুলো ছাওয়াব পাওয়া যাবে।

দুরূদ শরীফের ফজিলত

  1. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু মানব জাতিই নয়, সমগ্র বিশ্ব জাহানের জন্য রহমত স্বরূপ।হজরত রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গী হওয়ার সবচেয়ে অধিক উপযুক্ত ওই ব্যক্তি যে আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করে। (তিরমিজী শরিফ)
  2. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ মাফ করবেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। (মুসতাদরাকে হাকেম হাদীস নং-২০৫৬)।
  3. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘ঐ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে আমার উপর বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করে। (তিরমিযী শরিফের  হাদীস)
  4. নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি সকালে আমার উপর দশবার দুরূদ পড়বে এবং সন্ধ্যায় দশবার দুরূদ পড়বে কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সুপারিশ করব। (ত্ববারানী আউসাত হাদীস নং-৫২৩, নাসায়ী সুনানে কুবরা, হাদীস:৯৮৯০)
  5. উবাইদুল্লাহ বিন উমর কাওয়ারী রহ. বর্ণনা করেন, আমার প্রতিবেশী একজন কতিব ছিলেন। তার ইনতিকালের পর স্বপ্নে তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহ তাআলা আপনার সাথে কিরূপ আচরণ করেছেন? তিনি উত্তর দিলেন- আমাকে মাফ করে দিয়েছেন। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করায় তিনি উত্তরে বললেন, কিতাব লেখার সময় যখনই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক আসত, তখনই হুযুরের নামের সাথে সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লেখা আমার অভ্যাস ছিল। এর বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা আমাকে এমন নিয়ামত দান করেছেন, যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শুনেনি, কোন অন্তর কখনো তার কল্পনাও করেনি। সুবাহানাল্লাহ।
  6. হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর উপর দরুদ পাঠ কর এবং উত্তমরুপে সালাম পেশ কর।(কুরআন মাজীদ ৩৩/৫৬)
  7. আর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার উপর ১০ বার রহ্‌মত বর্ষণ করবেন।   (মুসলিম, মিশকাত শরিফ ৯২১ নং)
  8. অন্য এক বর্ণনায় আছে, এবং তার ১০টি পাপ মোচন হবে ও সে ১০টি মর্যাদায় উন্নীত হবে।মিশকাত ৯২২নং)
  9. সাহাবাগণ তাঁকে বললেন, ‘আমরা আপনার উপর দরুদ কিভাবে পাঠ করব?’ তখন তিনি তাঁদেরকে দরুদ শিক্ষা দিলেন। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৯১৯ _ ৯২০নং
  10. হজরত ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বলেন, নিশ্চয় বান্দার দোয়া-মোনাজাত আসমান ও জমিনের মাঝখানে ঝুলানো থাকে, তার কোনো কিছু আল্লাহপাকের নিকট পৌঁছে না যতক্ষণ না বান্দা তোমার নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজী শরিফ)।
  11. হযরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত, হযরত রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কৃপণ ওই ব্যক্তি যার নিকট আমার নাম উচ্চারিত হলো, কিন্তু সে আমার নাম শুনে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করল না।  (তিরমিজি শরিফ)
  12. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহপাক তার প্রতি দশটি রহমত নাজিল করেন, তার দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হয় এবং তার জন্য দশটি মর্তবা বুলন্দ করা হয়। (নাসায়ী শরিফ)।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *