আয়রন ফলিক এসিডের অভাবে কি হয়, উপকারিতা ও অপকারিতা
ভিটামিন বি পরিবারের এক সদস্য ফলিক এসিড |ভিটামিন বি -9 এর রাসায়নিক নাম হচ্ছেফলিক এসিড| ফোলেট এবং ফলিক অ্যাসিড উভয় নামই এসেছে ল্যাটিন শব্দ ফোলিয়াম থেকে যার অর্থ পাতা। সবুজ পাতা সমৃদ্ধ শাক-সবজি ফলিক অ্যাসিডের বড় উৎস।ফলিক অ্যাসিড নিজে জৈবিকভাবে বিক্রিয়াশীল না হলেও মানবদেহের যকৃতে ডাইহাইড্রোফলিক অ্যাসিড হতে এর রূপান্তরের পরে টেট্রাহাইড্রোফোলেট এবং অন্যান্য উপজাতের কারণে এটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
ফলিক এসিডের অভাবে কি হয়
১. ক্লান্তিভাব
শরীরে ফোলেটের অভাব হলে ক্লান্তিভাব বেড়ে যেতে পারে।
২. চুল ধূসর হয়ে যাওয়া
ফোলেটের অভাবের কারণে অনেক সময় চুল ধূসর হয়ে যেতে পারে।
৩. মুখে ঘা
অনেক সময় আমাদের মুখে ঘা হয়ে থাকে। আর এটি হতে পারে শরীরে ফলিক অ্যাসিডের অভাবের কারণেও।
৪. জিহ্বা ফুলে যাওয়া
শরীরে ফোলেট কমে গেলে জিহ্বা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. চামড়া ফ্যাকাশে হয়
চামড়ার রঙ্গে পরিবর্তন হয়ে তা ফ্যাকাশে দেখাতে পারে ফলিক অ্যাসিড়ের অভাবের কারণে।
৬. শরীরের বৃদ্ধিতে সমস্যা
ফলিক অ্যাসিডের অভাবের কারণে অনেক সময় শরীরের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া ফলিক অ্যাসিড়ের অভাবের কারণে অ্যানিমিয়া রোগ হয়ে থাকে। তাই রক্ত স্বল্পতার বিভিন্ন লক্ষণও দেখা দিতে পারে শরীরে ফলিক অ্যাসিড় কমে গেলে। যেমন অনেক বেশি দুর্বলতা, অলসতা, নিঃশ্বাসে দুর্বলতা চামড়া ফ্যাকাশে ইত্যাদি।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা
ফোলেট বা ফলিক অ্যাসিড আমাদের শরীরে সুস্থ লাল রক্ত কণিকা গঠন করে। এ ছাড়া অনাগত শিশুর বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি কমায়। আর শরীরে এটির অভাবের কারণে অ্যানিমিয়া হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ২০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর আমাদের শরীর ফলিক অ্যাসিড উৎপাদন করতে পারে না। এ কারণে বিভিন্ন সুষম খাবার থেকে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করতে হয়।
এটি ডিএনএ গঠন বা সিন্থেসাইজেশন, কোষ বিভাজন এবং ডিএনএ মেরামত করতে সাহায্য করে। এটি ক্রমাগত কোষ বিভাজন এবং কোষের বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাই গর্ভাবস্থায় এবং নবজাতকদের জন্য ফলিক অ্যাসিড জরুরী। লোহিত রক্তকণিকা তৈরীর কাজে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে এই ভিটামিন শিশু ও পূর্ণ বয়স্ক উভয়েরই প্রয়োজন.।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর দাম
বর্তমান বাজারে ফলিক এসিড পাওয়া যায় এরকম অনেক ট্যাবলেট রয়েছে |তারমধ্যে ফলিসন ট্যাবলেট অন্যতম | জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানির দ্বারা তৈরি |প্রতি প্যাকেটে 500 ফলিক এসিড ট্যাবলেট থাকে |এক বক্স ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর দাম 170 টাকা |
ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
এই ফলিক এসিড ট্যাবলেট আপনার ডাক্তারের নির্দেশ অনুসারে খাবারের সাথে বা ছাড়াই মুখে নিয়ে নিন, সাধারণত দিনে একবার। আপনি যদি ওভার-দ্য-কাউন্টার পণ্যটি গ্রহণ করেন তবে পণ্য প্যাকেজের সমস্ত নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে, আপনার ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টকে জিজ্ঞাসা করুন।
ডোজ আপনার চিকিৎসা অবস্থা এবং চিকিত্সার প্রতিক্রিয়া উপর ভিত্তি করে। আপনার ডোজ বাড়াবেন না বা নির্দেশিত তুলনায় আরো ঘন ঘন এই পণ্য গ্রহণ করবেন|
ফলিক অ্যাসিড থেকে সর্বাধিক সুবিধা পেতে ফলিক অ্যাসিড নিয়মিত গ্রহণ করুন। আপনাকে মনে রাখতে সাহায্য করার জন্য, প্রতিদিন একই সময়ে ফলিক অ্যাসিড নিন। আপনার ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ান দ্বারা সুপারিশকৃত খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করুন।
যদি আপনার সূর্যদী ফলিক এসিডের ঘাটতি স্থায়ী হয় বা আরও খারাপ হয়, অথবা আপনি যদি মনে করেন আপনার একটি গুরুতর চিকিৎসা সমস্যা হতে পারে, তাহলে অবিলম্বে অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা সহায়তা নেন।
ফলিক অ্যাসিড প্রস্তুতি সাধারণত ভাল সহ্য করা হয়, এবং অপরিমিত মাত্রা খুব কমই পরিলক্ষিত। ডোজ রোগী ও রোগ তীব্রতা বয়স উপর নির্ভর করে। 300-400 গ্রা ও নার্সিং – – 500 মাইক্রোগ্রাম উদাহরণস্বরূপ, একটি পূর্ণবয়স্ক একটি দিন 200 UG আদেশ, গর্ভবতী নির্ধারিত হয়। থেরাপির স্থিতিকাল সাধারণত এক মাস।
40 থেকে 200 মিলিগ্রাম থেকে অবস্থার উপর নির্ভর করে – শিশু মানে কম ডোজ সরবরাহ করা হয়।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়
গর্ভধারণের পরিকল্পনার শুরুতেই নিয়মিত ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ শুরু করে দেওয়া ভালো। যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি বা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের নির্দেশনা হলো, সন্তান নেওয়ার অন্তত এক মাস আগে থেকে প্রতিদিন ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড বড়ি খাওয়া শুরু করে দেওয়া উচিত। প্রথম তিন মাস পর্যন্ত এটি চালিয়ে যাওয়া উচিত।
ফলিক এসিড এর প্রাকৃতিক উৎস
১. ব্রকলি
ব্রকলি ক্রসিফেরি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত একটি শীতকালীন সবজি। আমাদের দেশে এটিকে অনেকে সবুজ ফুলকপিও বলে থাকেন। ফলিক অ্যাসিডের পাশাপাশি এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফাইবার থাকে। এ ছাড়া এটি হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আর ব্রকলি জারণরোধী ভিটামিন এ ও সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতিও রোধ করতে সহায়তা করে।
২. পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি
পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি যেমন— বাঁধাকপি, পালংশাকসহ বিভিন্ন ধরনের শাকে ফলিক অ্যাসিড থাকে।
৩. মটরশুটি ও শিম
মটরশুটি ও শিমে ফলিক অ্যাসিড থাকে। এটি সিদ্ধ করে বা রান্নায় খাওয়া যেতে পারে।
৪. লেবুজাতীয় ফল
লেবু বা লেবুজাতীয় বিভিন্ন ফল যেমন— কমলা, বাতাবিলেবু, মাল্টা ইত্যাদিতে ফলিক অ্যাসিড থাকে।
৫. কলিজা বা লিভারের মাংশ
আমিষের মধ্যে কলিজা বা লিভারে ফলিক অ্যাসিড থাকে।
এগুলোর বাইরেও বিভিন্ন ফল যেমন— কলা, তরমুজ, টমেটো বা টমেটোর রসে ফলিক অ্যাসিড থাকে। আর মুরগির মাংস ও ডিমেও ফলিক অ্যাসিড থাকে।
ফলিক এসিডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বড়ি “ফলিক অ্যাসিড” শিশুদের ত্বকে লাল লাল ফুসকুড়ি এবং চুলকানি সুস্পষ্ট করতে পারে ।