নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার বিধান কি?
নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার বিধান কি। রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে তার করণীয় কি। আপনি যদি নাপাক অবস্থায় সেহরি খেয়ে থাকেন বা নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া যাবে কিনা সে বিষয়ে আলোচনা । এবং অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা সে নিয়ে আজকেরই আলোচনা। নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া যাবে কিনা বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
সূচিপত্র
- নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া যায়
- নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া রোজা রাখা যাবে কিনা
- নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়ার পর রোজা সহীহ হবে কিনা
- নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে না
- পবিত্র ছাড়া রোজা রাখা যাবে কিনা
- ফরজ গোসলের ফরজ কয়টি তা জেনে নিন
- রোজা রাখা অবস্থায় ফরজ গোসলের নিয়ম জেনে নিন
নাপাক অবস্থায় রোজা রাখতে পারবেন কিনা/ এবং ফরজ গোসল ছাড়া কি রোজা রাখা যাবে।
রমজান মাসে আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের চিন্তা করে থাকি যা নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া যাবে কিনা এবং অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা সকল বিষয়ের আজকে আলোচনা করুন তার কারণ গুলো জেনে নিন। নাপাক অবস্থায় আপনি সেহরি খেতে পারবে । মানুষের জীবনে প্রত্যেকদিন বিভিন্ন কারণের জন্য গোসল ফরজ হয় সেটা হল যদি সেটা হয় ইচ্ছাকৃত বা অনিইচ্ছাকৃত। আমরা অনেকেই ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত ফরজ গোসল করতে দেরি করে ফেলি। কিন্তু ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত এর জন্য ফরজ গোসল করতে দেরি করার জন্য সেহেরী খাওয়া নিয়ে এর সঙ্গে কোন তুলনা হয় না। এর জন্য আপনি নাপাক অবস্থায় রোজা রাখতে পারবেন এবং সেহেরী খেতে পারবেন কিন্তু আপনি যদি নাপাক অবস্থায় সারাদিন গোসল না করে থাকেন তাহলে রোজা সেহরি দুটো হবে কিন্তু নামাজ হবে না। এই অবহেলার কারণে আমাদের নামাজ কাজা হয়ে যায়। তাই আমরা নাপাক না থেকে ফরজ গোসল করে পাক-পবিত্র হয়ে থাকবো। এর কারণে আপনার কবিরা গুনাহ হতে পারে ফরজ গোসলের কারণ এর নামাজ কাজা হয়ে গেলে আপনার কবিরা গুনা হবে । তাই না পাক অবস্থায় আপনি চিরিও রোজা দুটোই করতে পারবেন ।
নাপাক অবস্থায় সেহরি খেলে রোজা হবে কি ?
জি যদি আপনি নাপাক অবস্থায় সেহরি খান তাহলে সেহেরী আদায় হবে কিন্তু মনে রাখবেন সেহেরী এর সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ফজরের নামাজের সময় হয় বা ওয়াক্ত হয় তাই নামাজের পূর্বে পবিত্র হতে হবে। অন্যথায় যদি অপবিত্রতার কারণে নামাজ কাজা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে গুনাগার হবেন। অর্থাৎ যদিও নাপাক অবস্থায় সেহরি আদায় হবে কিন্তু যেহেতু নাপাক অবস্থায় সেহরি করার পর নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই এক্ষেত্রে আমাদেরকে নাপাক অবস্থায় সেহরি করার বিষয়টা কি পরিহার করতে হবে। যত নামাজ কাজা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই এটা পরিহার করাই উত্তম।
অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কি?
যদি আপনি অপবিত্র অবস্থায় সেহরি করে রোজা রাখেন তাহলে রোজা আদায় হবে। এছাড়াও দৈনন্দিন জীবনের নানা কারণে শরীর অপবিত্র হতে পারে সেক্ষেত্রে অপবিত্র অবস্থায় রোজা আদায় হবে। কিন্তু কিন্তু আপনাকে নামাজের ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে যেহেতু অপবিত্র অবস্থায় নামাজ আদায় করা যায় না তাই গোসল ফরজ হলে অবশ্যই পবিত্রতা হাসিল করে নামাজ আদায় করতে হবে। যদিও অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখলে প্রজাদের হবে কিন্তু অপবিত্র অবস্থায় যেহেতু নামাজ আদায় হবে না তাই এ ধরনের চিন্তাভাবনা মাথায় না আনাই উত্তম।
নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে না সে সম্পর্কে জেনে নিন
যদিও ফরজ গোসল না করে রোজা রাখলে রোজা আদায় হবে কিন্তু আপনি নাপাক থাকবেন। আর উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে নাপাক অবস্থায় এমন কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো করার সম্পূর্ণ হারাম। নাপাক অবস্থায় যে সকল কাজ করা হারাম তা হল
- নাপাক অবস্থায় কোরআন শরীফ স্পর্শ করা যাবে না
- মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না
- কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে না
- এবং কাবা শরীফ স্পর্শ করা যাবে না
ফরজ গোসলের ফরজ কয়টি?
যদি আমাদের গোসল ফরজ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জন করার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে গোসল করা। আর গোসলের ক্ষেত্রে তিনটি ফরজ আদায় করতে হয় অন্যথায় সম্পূর্ণ শরীর ধুয়ে উত্তমরূপে গোসল করলেও শরীর পবিত্রতা অর্জন করতে পারবে না। তাই আল্লাহ প্রদত্ত নিয়মে গোসল করার ক্ষেত্রে ফরজ আদায় করতে হবে। নিম্নে উল্লেখ করা হলো
- ১. গড়গড়া করে কুলি করতে হবে
- ২. নাকে পানি দিতে হবে
- ৩. সমস্ত শরীরে পানি দিয়ে উত্তমভাবে ধৌত করতে হবে
আশা করছি এই আর্টিকেল থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে রোজা রাখার ব্যাপারে শরীর অপবিত্র থাকার কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখা সম্ভব তবে যেহেতু অপবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার ক্ষেত্রে নামাজ কাজা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই এ ধরনের চিন্তা ভাবনা মাথায় না আনাই উত্তম।
যদি ফরজ গোসল না করেন এবং এর কারণে আপনার নামাজ মিস হয় তাহলে কবিরা গুনাহ হবে। নামাজ না পড়ে শুধুমাত্র রোজা রাখলে সেই রোজার কোন ফজিলত আশা করা যাবে না। এক্ষেত্রে শুধু শুধু না খেয়ে থাকার কষ্ট টাই হবে। তাহলে আশাকরি ফরজ গোসল করা নামাজের পেতে কত গুরুত্বপূর্ণ বুঝতে পেরেছেন।
পরিশেষে এটাই বলতে চাই যারা এ ধরনের চিন্তা ভাবনা করেন মূলত শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকেই এ ধরনের চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে। শয়তান আমাদেরকে নানা ধরনের কুপরামর্শ দিয়ে মনের ভেতর দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার চেষ্টা করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবৈধ কাজ কে বৈধ বলে চালিয়ে দেওয়া এক ধরনের প্রবণতা আমাদের ভিতর তৈরি হয়। তাই আমরা এধরণের শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করব ।