শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় ও শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম শবেবরাতে নামাজের নিয়ম যথাযথ সবকিছু মেনে ইবাদত করতে বলেছেন , আমরা এখন জেনে নেব এবং মনোযোগ দিয়ে পড়ে নেব কিভাবে শবে বরাতের নামাজ পড়তে হয় ওও নিয়মগুলো জেনে নেওয়া যায়।
সূচিপত্র
- 1. শবে বরাত কি?
- 2. শবে বরাত নামাজের সঠিক নিয়ম।
- 3. শবে বরাত সম্পর্কিত বিভিন্ন বাণী।
- 4.আরো কিছু নিয়ম নফল নামাজের।
- 5. শবে বরাতের নামাজের কিছু সতর্কতা
- 6. শবে বরাত বরাতের নামাজ ফজিলত জেনে নিন
1. শবে বরাত কি?
শবে বরাত বা লাইলাতুল বারা’আত হচ্ছে হিজরী সাবান মাসের14 ও 15 তারিখে মধ্যবর্তী রাতে শবেবরাত পালিত হয় এই রাতটি মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাত , উপমহাদেশে এই রাতকে শবে বরাতের রাত বলে বলা হয়ে থাকে , শবে বরাতের নামাজ নিয়ে ইসলামিক বিশ্বাসমতে শবে বরাতকে মহান আল্লাহতালা তাদেরকে ক্ষমা করে দেবে ইনশাআল্লাহ , তাই মুসলমানদের জন্য এই রাত খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন শবে বরাত সম্পর্কে , আমার কাছে আরবি শাবান মাসের ইবাদত বন্দেগী অধিক প্রিয় , তাই তোমাদের কাছে শবে বরাতের রাত হাজির হবে তখন তোমরা সেরাতে জাগ্রত থাকো ( নামাজ পড়া , জিকির করা , কোরআন তেলাওয়াত করা , তাসবীহ পড়া ইত্যাদি) , ও দিনের বেলা জন্য রোজা রাখা ।
মহান রব্বুল আলামীন শবে বরাতের রাতে গুনাহ মাফের জন্য সকল বান্দরকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য তাকিয়ে থাকে। আমরা আল্লাহর বান্দা, আমরা যদি মন খুলে এই দিনে মহান রব্বুল আলামীনের কাছে মন খুলে প্রার্থনা করি তাহলে আল্লাহতালা সকল আশা-আকাঙ্ক্ষা , দুঃখ কষ্ট, এবং গুনা থেকে সবাইকে মাফ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
তাই সকল মুসলিমদের জন্য শবে বরাতের নামাজের নিয়ম এবং শবে বরাত নামায কিভাবে পড়তে হয় সবকিছু সঠিকভাবে জেনে নিন।
2.শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
যদি আমরা শবে বরাতের হুকুম সঠিকভাবে আদায় না করি তাহলে আল্লাহ পাক বান্দারহর প্রতি নারাজ হন। তাই আমাদেরকে খুব মনোযোগ দিয়ে শবে বরাতের নামাজ সঠিক করে এবং নিয়ম অনুসারে আদায় করে নিতে হবে , তাই আমরা এই পোস্টটিতে শবে বরাতের নামাজের সঠিক নিয়ম এবং শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা সহজভাবে জেনে নেব ইনশাআল্লাহ ।
শবে বরাতের নফল নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মতই , শবে বরাতের নামাজ টি অন্য নামাজের মত হলেও তার সঠিক নিয়ম আমাদের জানতে হবে। তাই চলুন আমরা শবে বরাতের সঠিক নিয়ম অনুসরণ করি। শবে বরাতের নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মতই। এর জন্য আলাদা করে কোন নিয়ম ধরে দেওয়া নেই। দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়তে হবে ।
প্রথমে বিসমিল্লাহ রহমানির রহিম বলে নিয়ত পাঠ করতে হবে ।
আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম , নাওয়াইতুয়ান উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতে সালাতিল লায়লাতিল বারাতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর।
এছাড়াও আপনি চাইলে বাংলা নিয়ত করতে পারেন
আমি কাবা শরীফের দিকে মুখ করে আল্লাহ এর উদ্দেশ্যে এই লাইলাতুল কদরের দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি , তবে প্রত্যেক রাকাতে আয়াতুল কুরসি পড়তে হবে , এটা উত্তম এবং মুস্তাহাব আমল , প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর পবিত্র কোরআনের যে কোন সূরা পড়তে হয় , যে কোন সূরার মধ্যে পড়তে হবে সূরা ইখলাস , কদর , আয়াতুল কুরসি , কয়েকটা পড়লে বেশি নেকি বা সওয়াব পাওয়া যাবে।
দুই বা চার রাকাত নামাজের পর দোয়া দুরুদ শরীফ , তাসবীহ পাঠ করতে হবে , এছাড়া জিকির করতে হবে এবং কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে , এরপর দুই বা চার রাকাত নামাজের শেষ করার পর এভাবে দোয়া দরুদ পাঠ করতে হবে ।
শবে বরাতের নফল নামাজের কোন ধরা বাধা রাকাত সম্পর্কে বলা হয় নি , যে যত রাকাত পড়তে পারবে তত বেশি সোয়াব বা নেকি হবে ইনশাআল্লাহ , আপনাকে শবে বরাতের নামাজ সাধ্য মত পড়তে হবে , আল্লাহতালা বলেছেন কোন বান্দাকে যেন সাধ্যের বাইরে কোন কিছু বান্দাদের উপর চাপায় দেননি ।
অনেক হাদিসে উল্লেখিত রয়েছে , কমপক্ষে হলেও 12 রাকাত নফল নামাজ আদায় করা উত্তম , কিন্তু অবশ্যই 12 রাকাত এর অধিক সালাত আদায় করা যাবে। যেহেতু একটি মাত্র রাত দীর্ঘ সময় আমরা পেয়ে থাকি তাই ফজিলতময় নামাজ সালাতুত তাসবীহ পড়া উত্তম। সালাতুত তাসবীহ নামাজ সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে যে আপনি যদি প্রতিদিন আমল করতে পারেন আমল করুন , দিও না পারেন তাহলে আপনি জুম্মাবারে এই সালাত আদায় করতে পারবেন , আপনি যদি তাও না পারেন তাহলে অন্ততপক্ষে মাসে একবার হলে এই সালাত আদায় করুন , যদিও না পারেন তাহলে বছরে যেকোনো একদিন হলেও আপনি এই সালাত আদায় করে নিন , এত কিছুর পরও যদি আপনি এই শালাত টি আদায় না করতে পারেন বরঞ্চ আপনি বেঁচে থাকার আগ মুহূর্তেও জীবনে একবার হলেও এই ছালাত আদায় করে নিন , ইনশাআল্লাহ এর পরিবর্তে আপনি মহান আল্লাহর কাছে অনেক নেককার বান্দা হতে পারবেন ।
এই পোস্টটিতে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম বা নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তার একটি সঠিক ধারণা পেলাম।
3. শবে বরাত সম্পর্কিত বিভিন্ন বর্ণিত বাণী
শবে বরাত মানে হল মুক্তির রাত , বিভিন্ন সহি হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই শাবান মাসের 1 থেকে 15 তারিখ পর্যন্ত নফল রোজা রাখতে কখনো কখনো পুরো মাস জুড়ে নফল রোজা রাখতেন , নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কি কি বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এই মাসে রাব্বুল আলামিনের কাছে মানুষের কর্ম উঠানো হয় , আমি ভালোবাসি যে আমার রোজা রাখা অবশ্যই আমার আমল ওঠানো হোক ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আল্লাহর মধ্যে সাবানের রাতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও বিধাতার সৃষ্টি সকলকে ক্ষমা করেন ইনশাআল্লাহ , তাই আমাদের জানা খুব দরকার যে শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় ও নিয়ম কিভাবে জানতে হয় এই পোস্টটিতে আমরা জেনে নেব ইনশাআল্লাহ ।
হাদীসে উল্লেখিত রয়েছে যে শবে বরাতের রাত্রে দোয়া কবুল ক্ষমা প্রার্থনা এবং গুনাহ মাফ করে দেন মহান আল্লাহতালা এবং মহান আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার রাত , আমরা বুঝতে পারছি যে শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা জানাও অন্তত জরুরি , জরুলি নিচে উল্লেখিত সবগুলো পড়ে আমরা জেনে নেবো শবে বরাতের নিয়ম কারণ গুলো।
4. শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও কিছু সতর্কতাঃ
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সহকারে সবকিছু সঠিকভাবে আদায় করতে হবে , সেইসাথে আমাদের কিছু সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরী , ফজর নামাজ আদায় করতে হবে , আমাদের মনে রাখতে হবে নফল নামাজ থেকে ফরজ নামাজ বেশি জরুরি , তাই আমাদের অবশ্য ফরজ নামাজ সঠিক নিয়মে আদায় করে নিতে হবে , নফল পড়ে ক্লান্ত হয়ে যে ফরজ না পড়তে পারলে সব শেষ তাই আগে ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে
যত রাত জেগে নামাজ পড়েন বা কেন ফজর নামাজ অবশ্যই আদায় করুন , শবে বরাতের নামাজ নিয়ম মেনে চলা আমাদেরকে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে ,
5 .শবে বরাত নামাজের ফজিলত
আজকের এই আলোচনার মধ্যে আমরা জানতে পারলাম শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় ও নিয়ম সহকারে , এখন আমরা নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেব , শবে বরাতের ফজিলত অনেক, আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা কখন নেকি পাব এবং পাপ মুক্ত হব , এ কথা মনে রেখে আমাদেরকে শবে বরাতের নামাজ নিয়ম মতন পালন করতে হবে ,
হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন , আমি শবে বরাতের নামাজ আদায়কারীর শাফায়াত ব্যতীত জান্নাতে কদম রাখবো না , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন মধ্য শাবানের রাতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক বেতার সৃষ্টি সকলকে ক্ষমা করেন ইনশাআল্লাহ ,
হাদিস অনুসারে এই রাত দোয়া , কবুল , ক্ষমা , প্রার্থনা , আল্লাহর কাছে চাওয়া রাত , মুসলমানদের শবে বরাতের নামাজের নিয়ম মেনে আদায় করতে হবে
মুসলিম বান্দা আমরা অবশ্যই এই বরকতময় রাতে বেশি বেশি আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করব , এবং আল্লাহকে অবশ্যই সালাত আদায় করে খুশি রাখবো ইনশাআল্লাহ , আমাদেরকে সব সময় বেশি বেশি করে স্বালাত আদায় করতে হবে , বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজন পরিবার দেশবাসী বিশ্বব্যাপী জনমত আল্লাহতালার দরবারে প্রার্থনা করেন সকল মুসলমানরা কি ফজিলত পূর্ণ রাতে আমরা সঠিক নিয়মে সালাত বা নামাজ আদায় করব
মহান আল্লাহতালা সবাইকে নেক হেদায়েত করুন ইনশাআল্লাহ