১০ হাজার টাকায় শুরু করা যায় এমন ২৫টি ব্যাবসা আইডিয়া
বুদ্ধিমানেরা বলেন, যদি ব্যবসা করতেই হয় তবে প্রাথমিক অবস্থায় low investment business দিয়ে শুরু করাই ভালো। যদি আমরা প্রাথমিক অবস্থায় কম পুজির ব্যবসা শুরু করি সেখানে লস হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম কেননা এখানে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় কম। যেডেতু কম পুজির ব্যবসা শুরু করা একটি বুদ্ধিমানের কাজ সেহেতু আজকে আমরা মাত্র ১০,০০০ টাকা বা তার কম পুঁজিতে কি কি ব্যবসা করা যায় সেই আইডিয়া গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আগে কিছু কথা বলে নেই। low investment business করতে হলে সবার আগে আপনার মানসিকতাকে পরিবর্তন করতে হবে অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছা, সংকল্পবোধ এবং পরিশ্রম করার মানসিকতাই সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। যদি কম পুজির ব্যবসা করতেই হয় তাহলে পুঁজির চেয়ে বুদ্ধি এবং পরিশ্রম করার মানসিকতাকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। যদি এমনটি করতে পারেন তবে আপনি এই আর্টিকেলটি পুরোটাই পড়তে পারেন। অন্যথায় এই আর্টিকেল পড়ে আপনার কোন কাজে আসবে না।
তো চলুন জেনে নেয়া যাক কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং লাভজনক কম পুজির ব্যবসার আইডিয়া।
১. অনলাইন শিক্ষকতা
আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিষয়ে নিজেরা দক্ষ হয়ে থাকি। আমি বা আপনি যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়টাকে যদি অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায় তাহলে কেন আমরা বসে থাকবো। ধরুন আপনি ভালো গান গাইতে পারেন অথবা ভালো নাচতে পারেন এমনও হতে পারে আপনি ভাল রান্না করতে পারেন, আপনি যেটাই পারেন না কেন প্রত্যেকটি বিষয়কে অনলাইনের মাধ্যমে শিখিয়ে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব । ইউটিউব চ্যানেল খুলে অথবা একটি ওয়েবসাইট লঞ্চ করে সেটার মাধ্যমে আমরা আমাদের দক্ষতাকে অন্যকে শিখিয়ে অর্থোপার্জন করতে পারব।
বাংলাদেশের অলরেডি এই ব্যবসা করেই অনেকেই সফলতা পেয়েছেন উদাহরণ দিতে গেলে অনেকের নাম চলে আসবে। যেমনঃ টেন মিনিট স্কুল, কুকিং স্টুডিও বাই উম্মি, মিনি ক্রাফট ইত্যাদি বেশ কিছু সুপরিচিত ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে বাংলাদেশ। যারা মূলত দক্ষতা বা সৃজনশীলতাকে অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে। এখনো আমাদের সামনে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে অনলাইনে শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে দাঁড় করানোর জন্য। ইন্টারন্যাশনালিতো প্রচুর অনলাইন একাডেমী রয়েছে যেটার উদাহরণ এখানে না করলেও চলবে যেহেতু আমাদের দেশীয় সফল উদ্যোক্তা রয়েছে।
২. খাবারের হোম ডেলিভারি সার্ভিস
আমাদের বাংলাদেশের ঢাকা শহরের মানুষ প্রচুর কর্মব্যস্ত থাকেন। এদের মধ্যে প্রচুর লোক রয়েছেন যারা ব্যাচেলর হিসেবে জীবনযাপন করছেন। যাদের সব সময় বাড়িতে রান্না করা খাবার মনের মত হয় না। আবার অনেক সময় কর্ম ব্যস্ততার কারণে রান্না করার সুযোগ হয় না অনেকেরই। তাইতো মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় কিছু সুস্বাদু খাবার খেতে। নিজের বাড়িতে রান্না করে পৌঁছে দেন বাড়ি বাড়ি, সময়মত খাবার দিতে পারলে ব্যবসার অভাব হবে না ইনশাআল্লাহ।
এই ব্যবসাটি সবচেয়ে ভালো চলবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন এলাকাগুলোতে। কারণ দূর থেকে পড়তে আসা এ সকল ছাত্র ছাত্রীরা প্রতিদিন রান্না করে খেতে ভালোবাসে না। আর আপনি এই সুযোগটাকে লুফে নিতে পারেন। যদি আপনি আপনার বাড়ি থেকে সুস্বাদু খাবার রান্না করে তাদেরকে পরিবেশন করতে পারেন তাহলে এই ব্যবসাটি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
আমাদের দেশে আইডিয়াটা কে কাজে লাগিয়ে বেশ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে foodpanda.com নামের ওয়েবসাইটটি। তারা কিন্তু নিজেরা রান্না করে না রেস্টুরেন্টের খাবার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে অথবা অফিসে অফিসে পৌঁছে দিয়ে ভালোই অর্থোপার্জন করছে। মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আমার মনে হয় এই ব্যবসাটি আপনার জন্য উপযোগী একটি ব্যবসা হতে পারে।
৩. শুরু করুন অনলাইন বেকারির ব্যবসা
আপনি যদি বিভিন্ন রকমের ডেজার্ট, কেক, কুকিজ বানাতে ভালবাসেন তবে আপনার জন্য একটা দারুণ ব্যবসা অপেক্ষা করছে।বর্তমানে জন্মদিন ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কেক কেটে অনুষ্ঠান উদযাপন করার একটা প্রবণতা শুরু হয়েছে । সে দিক থেকে বিবেচনা করলে এখানে একটা দারুণ ব্যবসা করা সম্ভব। দারুন দারুন সব কেক বানিয়ে কেক গুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে বিক্রি করার ব্যবস্থা করুন ।
বেকারি থেকে কেক কেনার চেয়ে বাড়িতে তৈরি কেকের প্রতি মানুষের দুর্বলতা রয়েছে। তাই কি সম্মত উপায়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেক তৈরি করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসা অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এগুলো বিক্রি করার জন্য অনলাইনে ফেসবুকে একটি পেজ খুলে নিতে পারেন। যেখানে আপনি সারা বাংলাদেশ থেকে পণ্যের অর্ডার পাবেন।
৪.ফলের রসের কিওস্ক ব্যবসা
এই ব্যবসাটি করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি সুন্দর জায়গা নির্বাচন করতে হবে। যদি সেটি স্কুল-কলেজ অথবা অফিস পাড়ায় হয় তাহলে বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। জায়গা ভাড়া নিয়ে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন । মাত্র ১০হাজার টাকার মধ্যেই আপনি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পেয়ে যাবেন যার মাধ্যমে ব্যবসাটি খুব সহজে করা সম্ভব ।
৫. ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা
যদি ভেবে থাকেন যে low investment business করবেন তাহলে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা টি কোন অংশে খারাপ নয়। আপনি চাইলে মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যে শুরু করতে পারবেন। ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা । এ সম্পর্কে আমার একটি ভিডিও রয়েছে আপনি চাইলে সে ভিডিওটি দেখে আসতে পারেন। এই ব্যবসাটি করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট এবং এজেন্ট হওয়ার জন্য অনুমতি। অনেক সময় শুধুমাত্র একটি মোবাইল দিয়ে সম্ভব। যদি আপনি বাড়িতে বসে অল্প পুঁজির মধ্যে একজন ব্যবসা করতে চান তাহলে সবচেয়ে সহজ উপায় হল এজেন্সির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া।
৬. শুরু করুন ট্যুর গাইড ব্যবসা
বাংলাদেশের প্রচুর দর্শনার্থী বেড়াতে আসে। এমনকি বাংলাদেশীরাও বিভিন্ন এলাকাতে ঘুরতে যেতে ভালোবাসে। বিদেশে অথবা দেশে দর্শনার্থীদেরকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য সহায়তা করে একটা ব্যবসা করা যায় । ফ্লাইট ট্রেনের টিকিট বুকিং হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ট্যুর প্ল্যান করা এবং পরিচালনা করার দায়িত্ব আপনার কাছে থাকবে। কম খরচে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা এটি । অফিস স্কুল-কলেজের টুর করাতে পারলে সবচেয়ে বেশি লাভ করা সম্ভব। বিদেশি পর্যটকদের কে ট্যুর গাইড এর মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
এই ব্যবসাটি করতে হলে আপনাকে একটি ওয়েবসাইটের মালিক হতে হবে। এরপর আপনাকে বিভিন্ন এলাকার হোটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নিতে হবে তাদের ট্রাভেল এজেন্ট কমিশন এর রেট। আকর্ষণীয় এবং নতুন নতুন জায়গা খুঁজে বের করুন তাহলে আপনার ব্যবসা আরো ভালো চলবে। বর্তমানে এটি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা।
৮. কাস্টমাইজ গয়না তৈরির ব্যবসা
আমাদের দেশে গয়না তৈরীর উপকরণ গুলো খুব সহজেই পাওয়া যায়। নিত্যনতুন ডিজাইনের গয়না তৈরি করে দারুণ একটি ব্যবসা দাঁড় করানো সম্ভব। গয়না তৈরি ধারণা পেতে আপনি ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেখে নতুন নতুন গয়না তৈরি আইডিয়া জেনারেট করতে পারেন। অল্প টাকার ব্যবসা করতে চাইলে এটি একটি ভালো ব্যবসা। মাত্র ১০ হাজার টাকার কম পুঁজিতে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। চাইলে সেগুলো অনলাইনে অথবা বিভিন্ন পাইকারি দোকানের সাথে যোগাযোগ করে বিক্রি করার ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে নিত্যনতুন ডিজাইনের গয়না তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করেও একটা ব্যবসা দাঁড় করা সম্ভব।
৯. অনলাইনে হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করে ব্যবসা করুন
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে কুটির শিল্প অথবা হস্তশিল্প আমাদের দেশে মোটামুটি সুপরিচিত একটি নাম। অল্প টাকায় ব্যবসা করতে চাইলে হস্তশিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করে অনলাইনে অথবা অফলাইনে বিক্রি করে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ১০,০০০ টাকায় ব্যবসা করতে চাইলে এটিও কোন অংশে কম নয়। কোন প্রত্যন্ত গ্রামে বেকার বসে থাকা নারীদের কে কাজে লাগিয়ে আপনি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা পাশাপাশি নিজের একটা ভালো ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন ।
১০. দর্জি দোকানের ব্যবসা
মাত্র ১০,০০০ টাকায় একটি ব্যবসা শুরু করতে চাইলে যে দোকানের ব্যবসা টি উল্লেখযোগ্য ব্যবসা। আপনি যদি ভালো রুচিসম্মত পোশাক তৈরি করতে পারেন তবে ঘরে বসেই এই ব্যবসাটি করতে পারবেন। যদি দর্জি কাজের অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে যেখান থেকে ট্রেনিং নিয়ে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। যেহেতু কম পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করবেন সেহেতু আপনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে অর্ডার নিয়ে এসে তারপর সেটি তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এভাবে করলে আপনার দোকান নেওয়ার বাড়তি খরচ থেকে বেঁচে যাবেন।
নতুন নতুন ডিজাইন তৈরি করতে পারলে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হবে এক্ষেত্রে আপনি অনলাইন থেকে নতুন নতুন ডিজাইন শিখে সেগুলো ক্রেতাদের মাঝে হাজির করতে পারেন। যত নিত্য নতুন ডিজাইন কে তাদের সামনে হাজির করবেন ততই আপনার ব্যবসা অগ্রসর হতে থাকবে।
১১. বিউটিশিয়ান বা বিউটি পার্লারের ব্যবসা
low investment business গুলোর মধ্যে বিউটিশিয়ান বা বিউটি পার্লার ব্যবসা সত্যিই মনমুগ্ধকর একটি ব্যবসা। যদি আপনি বাড়িতে বসেই ব্যবসাটি করতে চান তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এই ব্যবসাটি করার জন্য আপনাকে দক্ষ বিউটিশিয়ান হতে হবে। যদি এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে যে কোনো বিউটি পার্লারের বিউটিশিয়ান কে বললেই আপনাকে শিখিয়ে দেবে, প্রয়োজনে আপনি তাকে খুশি করার ব্যবস্থা করবেন।
যেহেতু এটিও একটি কম্পোজের ব্যবসার মধ্যে ফেলতে চাচ্ছি সে হতো আমরা এখানেও দোকান ছাড়াই ব্যবসা করার বুদ্ধি বের করব। যদি আপনি ক্রেতা বা কাস্টমারের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে সেবা প্রদান করতে পারেন তাহলে আপনার পুঁজির পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে অথবা খরচের পরিমাণ কমে আসবে। যদি আপনি বাড়িতে বাড়িতে যে ফেসিয়াল পেডিকিওর-মেনিকিওর অয়েল ম্যাসেজ অথবা ওয়াক্সিংএর মত সেবা দিতে পারেন তাহলে অল্পদিনেই মুখে মুখে আপনার নাম ছড়িয়ে পড়বে। এভাবে ব্যবসাটি করতে চাইলে বিউটিশিয়ানের প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলো সব সময় আপনার সঙ্গে রাখতে হবে। যদি একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন তাহলে আপনার গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা খুব সহজ হবে।
১২. মেকআপ আর্টিস্ট
মেকআপ আর্টিস্টরা সাধারণত বিয়েবাড়ির কনে সাজানো পার্টি মেকআপ বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে মেকআপ এর কাজ করে থাকেন। যদি আপনি ভালো মানের মেকআপ আর্টিস্ট হতে পারেন তাহলে বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক পাবেন। এক্ষেত্রে যদি আপনি নিজের একটা ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট চালু করে নিতে পারেন তাহলে গ্রাহকের অভাব হবে না।
১৩. নাচ-গান অথবা আকাঁর স্কুল
নাচ গান অথবা ছবি আঁকা এই তিনটি গুণের যেকোনো একটি গুণ যদি আপনার মাঝে থাকে তাহলে আপনি প্রায় বিনা পুঁজিতে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। বাড়িতে ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অথবা ছাত্র-ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে শেখাতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি একটি সপ্তাহ কে কয়টি ভাগে ভাগ করে নিন তাহলে ইনকাম এর পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে। কেননা নাচ-গান ছবি আঁকা সপ্তাহে প্রতিদিন না করলেও হয়।
১৪. বিদেশী ভাষা শিক্ষা দেওয়া
আমাদের দেশ থেকে প্রচুর লোক প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছে চাকরির জন্য। যেকোনো দেশে চাকরির জন্য যাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে সে দেশের ভাষা শেখা । আপনি যদি কোনো একটি দেশের ভাষা সম্পর্কে দক্ষতা রাখেন তবে এ ক্ষেত্রে একটা ভালো ব্যবসা করতে পারবেন । ইংরেজি, কানাডিয়ান, জাপানিজ, কোরিয়ান, আরবি ভাষার বেশ কদর রয়েছে । যেকোনো একটি ভাষায় দক্ষ হলেই সে ভাষার উপর ট্রেনিং দিয়ে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
১৫. ফ্রীলান্সিং কনটেন্ট রাইটিং
ঘরে বসে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখালেখি করে বিনা পুঁজিতে ইনকামের একটা সুযোগ রয়েছে। যদি আপনার একটা ইন্টারনেট কানেকশন ওয়ালা কম্পিউটার থাকে পাশাপাশি যদি ইংরেজিতে ভালো দক্ষ হন তাহলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ পেয়ে যাবেন। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রচুর ওয়েবসাইট চালু হচ্ছে এবং সে ওয়েবসাইটগুলোতে প্রচুর কনটেন্ট এর প্রয়োজন হয় আর তাই ওয়েবসাইটের মালিক কনটেন্টের জন্য লোক ভাড়া করে অথবা কন্টেন্ট কিনে নেয়। তাই আপনি যদি ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা তবে এখান থেকে একটা ভালো অর্থ উপার্জনের পথ বের করতে পারবেন। তবে কিভাবে লিখলে আপনার লেখা টি গুগল সার্চে প্রথমে চলে আসবে সেটা সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান রাখা প্রয়োজন আছে। বর্তমানে দেশীয় ভাষায় কনটেন্ট লেখার চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১৬. ইউটিউব চ্যানেল চালু করা
বাংলাদেশ এমনকি সারা বিশ্বে এখন প্রচুর ইউটিউবার হয়েছে যারা প্রায় বিনা পুঁজিতে শুরু করে এখন মিলিয়ন মিলিয়ন অর্থ উপার্জন করছে। একটি ইউটিউব চালু করার জন্য আপনার তেমন কোন ইনভেস্ট এর প্রয়োজন হয় না। শুধু প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি এবং কর্ম সৃজনশীলতা। শিক্ষামূলক, বিনোদনমূলক বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে আপনি এখান থেকেও একটা ভালো অর্থোপার্জনের পথ বের করতে পারবেন। ইউটিউব এ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতে হয় জানতে চাইলে ইউটিউবে সার্চ করে শিখে নিতে পারবেন।
১৭. অনুবাদের ব্যবসা
Freelancer.com নামক ওয়েবসাইটে যদি আপনি ট্রান্সলেটর লিখে সার্চ করেন তাহলে সেখানে দেখতে পাবেন এ বিষয়ে প্রচুর লোক হায়ার করা হচ্ছে। যদি কয়েকটি ভাষার উপর দক্ষতা থাকে তবে সেখান থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করা সম্ভব ঘরে বসেই এবং প্রায় বিনা পুঁজিতে। বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট এর ট্রান্সলেট করা, মোবাইল অ্যাপের ট্রান্সলেট করা এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিবেদন ট্রান্সলেট করতে হয়। এছাড়াও টিভি সিরিয়াল এবং মুভির সাবটাইটেল করার জন্যও ট্রান্সলেটর দেরকে ভাড়া করা হয়।
১৮. গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ
গ্রাফিক ডিজাইন এর উপর দক্ষতা অর্জন করতে পারলে বর্তমান যুগে ঘরে বসে থেকেই প্রচুর অর্থ উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে। কোন কোম্পানিতে চাকরি না করে নিজের একটি কম্পিউটারের মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে কাজের অর্ডার নিয়ে কাজ করে দিবেন বিনিময়ে ভালো অ্যামাউন্টের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাদেরকে প্রয়োজনীয় ডিজাইনগুলো করে দিতে পারবেন। এই ডিজিটাল যুগে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
১৯. ওয়েডিং প্লানার এর বিজনেস
বের্তমানে ছোট ছোট পরিবার বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বড় বড় ঝক্কি সামলানোর লোকের বড় অভাব দেখা দেয়। তাই বর্তমান সময়ে ওয়েডিং প্লানার এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে খাবার দাবারের ব্যাবস্থা করা, গায়ে হলুদের ব্যবস্থা করা, ফটোগ্রাফি করা, বাসর ঘর সাজানো থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ পরিচালনা করার দায়িত্ব গ্রহণ করে একজন ওয়েডিং প্লানার । একটি ওয়েবসাইট এবং আপনার পরিচিতি এই ব্যবসা কে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবে। মাত্র 10000 টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন ।
২০. শিশুদের ডে কেয়ার সেন্টার
বর্তমান যুগের কর্মব্যস্ত লোকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে ফলে কর্ম ব্যস্ত লোকেদের সন্তানদের দেখাশোনা করার জন্য নিরাপদ স্থানের প্রয়োজন হয়। ডে-কেয়ার সেন্টার গুলোতে দিনব্যাপী বাচ্চাদেরকে খাওয়া-দাওয়া পড়াশোনার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। তাইতো বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নামমাত্র বিনিয়োগ করে আপনি এই ব্যবসাটিকে দাঁড় করাতে পারেন।
২১. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসা
ছোট-বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান জন্য বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত হওয়া অত্যাবশ্যকীয় একটি বিষয়ে রূপান্তরিত হয়েছে। ব্যবসার প্রচার প্রচারণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অথবা সেলিব্রিটিদের হয়ে তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় পেজগুলোর দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে এখান থেকেও ভালো এমাউন্টের অর্থ উপার্জন করা উপায় রয়েছে। বড় বড় কোম্পানির নিজস্ব লোক থাকে এই কাজগুলো করার জন্য কিন্তু ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো বাইরের লোকেদের দিয়ে কাজগুলো করিয়ে নেন।
২২. মিনারেল ওয়াটারের ব্যবসা
ঢাকা শহরে নিরাপদ পানির অভাব সেটা আমরা সকলেই জানি। নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করে একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আপনার ঘাড়ে তুলে নিতে হবে। বড় বড় অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাটগুলোতে পানি পৌঁছানো কাজটি আপনাকে করতে হবে। প্রয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি সাইকেল দিয়ে অথবা ভ্যান গাড়ি দিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। ভ্যান অথবা সাইকেলে করে পানিগ্রাম পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে একটা ভালো ব্যবসা করা সম্ভব। কম পুজির ব্যবসা করতে চাইলে এটি দারুন একটি ব্যবসা।
২৩. মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা
ব্যবসার আইডিয়া না খুঁজে বরং আপনি একটি মোবাইলের রিচার্জের দোকান চালু করতে পারেন । প্রায় প্রত্যেক এলাকাতে মোবাইল রিচার্জের দোকানের চাহিদা রয়েছে। গ্রামীন বাংলালিংক রবি নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারদের সাথে যোগাযোগ করে একটি ছোট্ট দোকান চালু করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে বড় বড় বাজারের মধ্যে একটি টেবিলের মধ্যেই এই ব্যবসাটি করা সম্ভব। মাত্র 10 হাজার টাকার মধ্যে ব্যবসা করতে চাইলে এই ব্যবসাটি ভালই হবে।
২৪. চায়ের দোকানের ব্যবসা
গ্রাম কিংবা শহর সব জায়গাতেই চায়ের ব্যবসা ভালোই চলে । মাত্র 10 হাজার টাকার মধ্যেই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। গ্রামের আর দশটা চায়ের দোকানের চেয়ে যদি আপনারটা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে সবার নজর কাড়বে। আপনি দোকানের ভেতরটাকে সুসজ্জিত করতে পারেন যা সাধারণত কোন চায়ের দোকান ওয়ালা করে না। এছাড়াও অন্যদের চেয়ে ভাল মানের চা কমদামে পরিবেশনের চেষ্টা করতে পারেন সেক্ষেত্রেও আপনার গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বেন্স, টেবিল, চায়ের কাপ সবকিছুই যদি একটু উন্নত মানের নেন তাহলে গ্রাহকরা আরো বেশি আকৃষ্ট হবে। বর্তমানে তো ইলেকট্রিক মেশিন এর মাধ্যমে চা বিক্রি করার প্রচলন শুরু হয়ে গেছে যেখানে আপনাকে বেশি পরিশ্রম করতে হবে না ।
২৫. শুটকি বিক্রির দোকান
প্রত্যেকটি বাজারেই এখনকার সময়ে শুটকি মাছের আলাদা দোকান দেখা যায়। মাত্র 10 হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে চাইলে এই ব্যবসাটি আপনি করতে পারেন। পাইকারি বাজার থেকে শুটকি কিনে এনে সেগুলো খুচরো বাজারে বিক্রি করতে হবে। কোন কোন শুটকি বাজারে বেশি বিক্রি হয় সেগুলো আপনাকে জানতে হবে। পাশাপাশি পান, সুপারি, বিভিন্ন ধরনের মশলা রাখতে পারেন তাহলে আপনার গ্রাহকের সংখ্যা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।