৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখন অভিজ্ঞতা ১ সেশন ৪ উত্তর (PDF)
৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখন অভিজ্ঞতা ১ সেশন ৪ : আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছিলাম, তথ্যের উৎস প্রধানত দুই ধরনের, মানবীয় ও জড় উৎস। মানবীয় (ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য) উৎস থেকে আমাদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। তোমরা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে অনলাইন ফর্ম তৈরি করে ২০ জনকে পাঠিয়ে দিয়েছ, অথবা হাতে লিখে ২০ জনের কাছ থকে জরিপের প্রশ্ন পুরণ করা চলছে। এবার আমরা জড় উৎস থেকে আমাদের সমস্যা সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় কি না, খুঁজে দেখব।
যেসব জড় মাধ্যম থেকে সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য (যথার্থ) তথ্য পাওয়া যেতে পারে, তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে গণমাধ্যম । “গণমাধ্যম” শব্দটি নিশচয়ই আমরা আগেও শুনেছি, তাই না? প্রচারের ধরনভেদে গণমাধ্যমের আবার বিভিন্ন ভাগ রয়েছে-
৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখন অভিজ্ঞতা ১ সেশন ৪
টিপস: তথ্যের উৎস প্রধানত ২ ধরনের।
১. মানবীয় উৎস: ব্যক্তির মাধ্যমে পাওয়া তথ্যকে তথ্যের মানবীয় উৎস বলে।
২. জড় উৎস: জড়বস্তু (রেডিও, টিভি বা সংবাদপত্র) এর মাধ্যমে পাওয়া তথ্যকে তথ্যের জড় উৎস বলে।
গণ্যমাধ্যম কী?
উত্তর: যেসব মাধ্যমে জনগণের কাছে সংবাদ, মতামত ও বিনোদন পৌঁছানো বা পরিবেশন করা হয় তাকে গণমাধ্যম বলে। যেমন: সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্যাদি। গণমাধ্যম ৩ প্রকার:
১. মুদ্রণ মাধ্যম: পত্রিকা, ম্যাগাজিন, বই ইত্যাদি।
২. ইলেকট্রনিক মাধ্যম: রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।
৩. ইন্টারনেট বা নিউজ মিডিয়া: ওয়েবসাইট, অনলাইন পত্রিকা, অনলাইন টেলিভিশন ইত্যাদি।
আজকে আমরা একটি খেলা খেললে কেমন হয় বলতো! উপরে তিন ধরনের যে গণমাধ্যমের নাম দেখতে পাচ্ছি, সেগুলোর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আমাদের শিক্ষক এক বাক্যে একটি করে বৈশিষ্ট্য বলবেন আর একটি বল আমাদের যেকোনো একজনের দিকে ছুঁড়ে মারবেন, যার দিকে বলটি মারা হলো সে বলটি নিয়েই শিক্ষক কোনো মাধ্যমটির বৈশিষ্ট্য বলছেন, তার নাম বলব । আমরা সবাই দাঁড়িয়ে খেলাটি খেলব। উত্তর সঠিক হলে বসে পড়ব, ভুল হলে দাঁড়িয়ে থাকব এবং বলটি আবার শিক্ষকের কাছে ফেরত দেব।
আমরা এবার আমাদের সমস্যাটি সম্পর্কে কোনো মাধ্যমে কোনো তথ্য আছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। আমাদের সমস্যা সম্পর্কে তথ্য খুঁজতে আমরা উপরের যেকোনো এক বা দুই ধরনের মাধ্যম ব্যবহার করতে পারি। শিক্ষক আমাদের কোনো পত্রিকা, কিংবা বই দেবেন সেখান থেকে আমরা আমাদের নির্ধারিত সমস্যা সম্পর্কে কিছু খুঁজে পাই কি না, দেখব। শিক্ষক আমাদের ইন্টারনেটের মাধ্যমেও খুঁজতে সহায়তা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষকে বলে দেব আমাদের সমস্যাটি খুঁজতে কী কী মূল শব্দ (Key Word) দিয়ে খুঁজতে হবে (সার্চ দিতে হবে)।
তাহলে আমরা আমাদের শ্রেণির কি€বা অন্য কোনো শ্রেণির অন্য কোনো বই যেমন – ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, শিল্প ও সংস্কৃতি, বাংলা যে কোনো বইয়ে আমাদের সমস্যা সম্পর্কে কোনো তথ্য আছে কি না, খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।
জড় উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমরা কিছু ব্যাপার লক্ষ্য রাখব:
১. তথ্যটি কত তারিখে প্রচার হয়েছে। (কারণ, সময়ের ব্যবধানে আজকের আপাতদৃষ্টিতে কোনো সত্য তথ্য আগামীকাল অসত্য প্রমাণ হয়ে যেতে পারে। যেমন: বাংলাদেশের মোট বিভাগ ৭টি। এটি ২০১৪ সাল পর্যন্ত সঠিক তথ্য হলেও ২০১৫ সালের জন্য এটি সঠিক তথ্য নয়, কারণ ২০১৫ সালে ময়মনসিংহকে নতুনভাবে বিভাগ ঘোষণা করা হয়)
২. যতটা সম্ভব সাম্প্রতিক তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করব।
৩. কোনো নিউজের হেডলাইন বা শিরোনাম দেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব না, পুরো খবর পড়ব।
৪. কোনো মাধ্যমে একটি সংবাদ দেখার পর একই Key Word দিয়ে আবার সার্চ দেব এবং যাচাই করব, অন্য মাধ্যমও একই সংবাদ দিচ্ছে কি না (ইন্টারনেট এর সুবিধা থাকলে)।
৫. পত্রিকা বা টেলিভিশনের লোগো দেখেই বিশ্বাস করে ফেলবনা সংবাদটি এ পত্রিকার বা টেলিভিশনের। যাচাই করার জন্য এঁ পত্রিকা বা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে যাব।
৬. আমি যে প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিতে চাই, সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে যাব। লক্ষ্য রাখব হাইপারলিংকটি ঠিক আছে কি না। যেমন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ- এর কোন ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে চাইলে হাইপারলিংকটি হবে এ রকম – http://www.nctb.gov.bd/। অনেক সময় কেউ যদি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ- এর নামে কোনো ভুল প্রচারণা করতে চায়, তাহলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ- এর ওয়েবসাইটের মতো নকল একটি ওয়েবসাইট তারা বানিয়ে রাখতে পারে।
সে ক্ষেত্রে হাইপারলিংকটি দেখতে অন্যরকম হতে পারে । সেই লিংকে কোনো একটি/দুটি অক্ষর এলোমেলো থাকবে, যেমন, c এর জায়গায় n, b এর যায়গায় d, o এর জায়গায় i এরকম এলোমেলো করে অক্ষরণ্ডলো থাকবে, যা হয়তো আমাদের সহজে চোখে পড়বে না। তাই তথ্য নেওয়ার আগে লিংকটি ঠিক আছে কি না, তা দেখে নেওয়াটা জরুরি।
আগামী সেশনের প্রস্তুতি
সেশন-২ (উপস্থিত বক্তৃতার মাধ্যমে সমস্যা নিধারণ) এ আমাদের নির্ধারিত বিষয়টি ছিল বাল্যবিয়ে। নিচে বাল্যবিয়ের ওপর জড় উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্য লেখা হল।
১. বরের বয়স ৪৫, কনের বয়স ১১, ছয় মাসের সাজা বরের
৪৫ বছর বয়সী বরের সঙ্গে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছর বয়সী এক শিশুর। খবর পেয়ে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিয়ের আসর থেকে বরকে আটক করে দেওয়া হয় ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ-।
উৎস: দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণ। ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।
২. বাল্যবিবাহের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আসামে গ্রেপ্তার দুই হাজার
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের পুলিশ বাল্যবিবাহ ঠেকাতে এখনও পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। বাল্য বিবাহ করেছে, এমন কম বয়সী ছেলেরা যেমন এর মধ্যে আছে, তেমনই ধরা হয়েছে তাদের পরিবার আর কাজী-পুরোহিত যারা ওইসব বিয়ে দিয়েছেন, তাদেরও।
উৎস: বিবিসি বাংলা অনলাইন সংস্করণ। ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩. করোনায় বাল্যবিয়ে: স্কুলছাত্রীদের ঝরে পড়া বেড়েছে!
বাংলাদেশে করোনা মহামারির সময় বাল্যবিয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মেয়েদের ঝরে পড়া বেড়েছে। কিন্তু দেশজুড়ে মোট ঝরে পড়া স্কুলছাত্রীর সংখ্যা কতো তা নিয়ে এখনো সরকারি বা বেসরকারি কোনো জরিপ হয়নি। বাল্যবিয়ের কারণে কী পরিমাণ স্কুলছাত্রী ঝরে পড়েছে সে সংখ্যা জানা না গেলেও কিছু বেসরকারি সংস্থা বলছে করোনার সময়ে দেশজুড়েই উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বাল্যবিয়ের ঘটনা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণা বলছে, দেশে করোনার কারণে বাল্যবিয়ে শতকরা ১৩ ভাগ বেড়েছে। গত ২৫ বছরে যা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ।
উৎস: ডয়েচে ভেলে অনলাইন সংস্করণ। ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১।
৪. দেশে এক বছরে বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১০ শতাংশ
দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সি মেয়েদের বিয়ের হার ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে ওই দুই বছর এই বয়সি প্রায় ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। রোববার বাল্যবিবাহের ওপর এক জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে বাল্যবিয়ে এবং শহরের বস্তি এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ শিরোনামে দুটি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
উৎস: সময় নিউজ অনলাইন সংস্করণ। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫. নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করলো নবম শ্রেণির ছাত্রী
নওগাঁর রাণীনগরে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী ইউএনওকে ফোন করে নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করে আলোচিত হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে রাণীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। বুধবার (৯ নভেম্বর) ছাত্রীর কাছ থেকে ফোন পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন পূর্ব বালুভরা গ্রামে গিয়ে বাল্যবিয়ে প- করে দেন।
উৎস: দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইন সংস্করণ। ৯ নভেম্বর, ২০২২।