৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি অধ্যায় ১ সেশন ১ উত্তর (PDF)
৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি অধ্যায় ১ সেশন ১ উত্তর : আচ্ছা, ছোটদের জীবনে বেশি সমস্যা নাকি বড়দের? আসলে ছোট বড় সবারই প্রতিদিন নানান রকম ঝামেলায় পড়তে হয়, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড়রাই বড় সমস্যাগুলো আমাদের সমাধান করে দেন।
কেমন হবে যদি আমরা ছোটরাও বড় বড় সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি? বর্তমান সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে আমরা কিন্তু শুধু তথ্যের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমরা তথ্য এবং এর উৎস সম্পর্কে জেনেছি। সপ্তম শ্রেণিতে আমরা তথ্যের মাধ্যমে সুবিধা নেওয়ার জন্য তখ্যকে আরও গভীরভাবে জানার চেষ্টা করব।
শিশিরের বাবা শিশিরের জন্য নতুন জুতা কিনে এনেছে না। শিশির ও তার ছোট বোন তৃণা বাবা-মায়ের সঙ্গে কাল শ্রীমঙ্গল বেড়াতে যাবে । অনেক দিন পর এত দূরে কোথাও বেড়াতে যাবে বলে শিশির অনেক খুশি, এর মধ্যে আবার সে উপহার পেয়েছে সুন্দর জলপাই রঙের জুতা ।
৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি অধ্যায় ১ সেশন ১ উত্তর
কাল সকালে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে ভাবতে ভাবতেই শিশির তার নতুন জুতা জোড়া পায়ে পরেই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ল। গভীর রাতে হঠাৎ শিশিরের ঘুম ভেঙে গেলো ইঁদুরের কিচকিচ শব্দে। শিশির ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেল তার পড়ার রুমে যে ইদুরটি হঠাৎ হঠাৎ এক দৌড়ে এদিক থেকে ওদিক দৌড়াতে থাকে, সে ইদুরটি বিছানায় এসে শিশিরের নতুন জুতার সামনে চুপচাপ বসে আছে !
শিশির এই ইদুরের নাম দিয়েছিলো ‘ধুমকেতু’। ধূমকেতুকে গত এক সপ্তাহে শিশির একবারও দেখেনি, এতদিন পর ধূমকেতু এসে একেবারে ওর বিছানায় উঠে বসেছে ! শিশির বিরক্ত হলো খুব! একটু পর শিশিরকে অবাক করে দিয়ে ধূমকেতু বলে উঠল “ও শ্রীমঙ্গল যাচ্ছ তোমরা তাহলে?” শিশির একটু ভয় পেয়ে পা গুটিয়ে নিল কাথার নিচে। ধূমকেতু এখন ওভাবেই বসে আছে।
এবার শিশিরের বিম্ময় গিয়ে পৌঁছাল সপ্তম আকাশে, যখন কাথার ভেতর থেকে নতুন জুতা বলে উঠল হ্যাঁ, যাবে নাকি সঙ্গে? গেলে চল, শিশির তোমাকে তার পানির ফ্লাক্ষে করে লুকিয়ে নিতে পারবে চাইলে, কী বল শিশির,পারবে না? ভয়ে শিশিরের মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছিলনা, অনঘ পা ঝাড়া দিয়ে কোনোরকমে জুতা
এবার আমরা এই গল্প থেকে কিছু জিনিস বের করার চেষ্টা করব। প্রতিটি গল্প, ঘটনায় বা তথ্যে ৬টি মৌলিক বিষয় থাকে, এটিকে বলে ৬ক বা 5W1H- কে, কী, কোথায়, কখন, কেন, কীভাবে এই ছয়টি প্রশ্নের উত্তর এই গল্পে আছে কি না, আমরা খুঁজে বের করব। একটি করে উদাহরণ দেওয়া হলো, বাকিগুলো আমরা গল্প থেকে খুঁজে বের করব।
ছয়টি প্রশ্নের উত্তর খুঁজি
১ নম্বরের ৬ক = কে? ১. শিশির, কী? ১. ঘুমিয়ে পড়ল, কখন? ১. রাতে, কোথায়? ১. বিছানায়, কেন? ১. সকালে উঠতে হবে, কীভাবে? ১. জুতা পড়ে।
২ নম্বরের ৬ক = কে? ২. ইঁদুর (ধূমকেতু), কী? ২. বসল, কখন? ২. রাতে, কোথায়? ২. বিছানায়, কেন? ২. সাক্ষাৎ করবে, কীভাবে? ২. চুপচাপ।
৩ নম্বরের ৬ক = কে? ৩. নতুন জুতা, কী? ৩. কথা বলল, কখন? ৩. রাতে, কোথায়? ৩. কাথার ভেতরে, কেন? ৩. ইঁদুরের প্রশ্নের উত্তর দিতে, কীভাবে? ৩. মুখ দিয়ে (কাল্পনিক)।
যে কোনো তথ্য উপস্থাপন করার সময় এই ছয়টি প্রশ্নের উত্তর যখন আমরা একসঙ্গে তুলে ধরতে পারব তখন এ বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যাবে। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য প্রতি মুহূর্তে পেতে থাকি, এর কিছু কিছু তথ্য সব সময় সত্য হয় না।
ভুলবশত আমরা যদি কোনো মিথ্যা তথ্য বিশ্বাস করে ফেলি তাহলে ছোট-বড় অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে, তাই যে কোনো তথ্য বিশ্বাস করা এবং সেই তথ্য অন্য একজনকে দেওয়ার আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, তথ্যটি সঠিক। আর তথ্যটি সঠিক কি না, এটি বোঝার জন্য এই ৬ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার আমরা যখন অন্য কাউকে তথ্য দেব, তখন লক্ষ্য রাখবো, আমার তথ্যের মধ্যে এই ৬ক এর উত্তর আছে কি না।
আগামী সেশনের প্রস্তুতি
নিচের ছয়টি বৃত্তের প্রতিটির মাঝখানে তুমি কলম রাখবে, এরপর তোমার বন্ধু তোমার বইটি ঘোরাবে। তুমি যে কোনো একদিকে কলম নেবে । এভাবে ছয়টি বৃত্ত থেকে ছয়টি শব্দ বা বাক্যাংশ বের হবে। এই ছয়টি শব্দ বা বাক্যাংশ দিয়ে তুমি “শিশির ও তার জুতা” গল্পটি নিজের ইচ্ছেমতো বাকি অংশ লিখবে। শুধু লক্ষ্য রাখবে এই শব্দ বা বাক্যাংশগুলো যেন তোমার গল্পে থাকে ৷ একইভাবে তুমিও তোমার পাশের বন্ধুকে তার ছয়টি শব্দ বের করতে সাহায্য করো।
ভয়ে শিশিরের মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছিল না। শিশির পা ঝাড়া দিয়ে কোনোরকমে জুতা জোড়া খুলে নিতে চাইল। জুতা খুলে শিশির তার বড় বোন মিতার কাছে গেল। তখন তার বাবা শিশিরকে বললেন, ‘কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের গাড়ি আসবে। দ্রুত তৈরি হও।’ এরপর শিশির ঘড়ি দেখল। ঘড়িতে বাজে সকাল ১০টা। তাদের গাড়ি আসবে সকাল ১১টায়।
তখন সে দ্রুত ভাত খেতে বসল। ভাত খাওয়ার পূর্বে শিশির হাত না ধোয়ায় মায়ের বকা শুনল। দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে সে শ্রীমঙ্গল যাবে। গত বছর যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সময় হয়নি। বর্তমানে তার বিদ্যালয় বন্ধ। তাই সে শ্রীমঙ্গল যেতে পারছে। শ্রীমঙ্গলে শিশিরের প্রিয় কাজ হচ্ছে- সাঁতার কাটা। তাই সে এবার সাঁতার কাটার কথা ভাবতে লাগল। তার মন খুশিতে ভরে উঠল।
কে? শিশির, কী? শ্রীমঙ্গল যাবে, কখন? ১১টায়, কোথায়? সিলেটে, কেন ঘুরতে যাবে, কীভাবে? গাড়িতে চড়ে।