৭ম শ্রেণির আইসিটি: ৪র্থ অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
প্রশ্ন ১ : ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে কীভাবে বাংলা লেখা প্রস্তুত করা যায়? বর্ণনা করো।
উত্তর: ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম চালু করে বাংলা টাইপ বা লেখার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসরকে প্রস্তুত করতে হয়। বাংলা লেখার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসরে বিজয় সফটওয়্যারে Alt, Ctrl ও B এক সাথে চাপতে হয় এবং অভ্র সফটওয়্যারে F12 কী চাপতে হয়। বিজয় সফটওয়্যারের জন্য SutonnyMJ এবং অভ্র-এর জন্য NikoshBAN ফন্ট নির্বাচন করতে হয়। এবার বাংলা টাইপ শুরু করতে হয় এবং বাংলা লেখা ওয়ার্ড প্রসেসরে দেখা যায়। এভাবে ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে বাংলা লেখা প্রস্তুত করা যায়।
প্রশ্ন ২ : বাংলা লেখার সফটওয়্যার সম্পর্কে বর্ণনা করো।
উত্তর: কম্পিউটারকে বাংলা লিখার জন্য মুনীর চৌধুরীর উদ্ভাবিত বাংলা কী বোর্ড থেকে বাংলা ফন্টসহ শহীদ লিপি সফটওয়্যারটি প্রবর্তিত হয়। এটিই কম্পিউটারে বাংলা লেখার প্রথম সফটওয়্যার। কিন্তু এ সফটওয়্যারটি তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে নব্বই দশকের শেষের দিক পর্যন্ত বিজয়, প্রশিকা শব্দ, প্রবর্তনা, লেখনী প্রভৃতি সফটওয়্যার বাজারে আসে। সফটওয়্যার উন্নয়নের কারণে এবং বিভিন্ন সফটওয়্যারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় বিজয় সফটওয়্যারটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে অভ্র সফটওয়্যারটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ৩ : বাংলা কী বোর্ড-এর উৎপত্তি বর্ণনা করো।
উত্তর: কী বোর্ড হলো ওয়ার্ড প্রসেসের প্রধান ইনপুট ডিভাইস। ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে বাংলায় লেখালেখি করতে হলে বাংলা কী বোর্ড আবশ্যক। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী ১৯৬৫ সালে সর্বপ্রথম বাংলা টাইপ রাইটারের জন্য একটি বিজ্ঞানসম্মত কী বোর্ড লে-আউট তৈরি করেন। তাঁর এ বাংলা কী বোর্ড লে-আউট সম্পূর্ণ ইংরেজি কী বোর্ডের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়। পরবর্তীতে এই কী বোর্ড লে-আউটই কম্পিউটারের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে কম্পিউটারে বাংলা ওয়ার্ড প্রসেসিং সহজ হয়।
প্রশ্ন ৪ : অভ্র সফটওয়্যারের জনপ্রিয়তার কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর: অভ্র বাংলা লেখার ইউনিকোড সফটওয়্যার। অভ্র সফটওয়্যারে উচ্চারণভিত্তিক বাংলা টাইপিং ব্যবস্থা আছে। যারা বাংলা টাইপিং জানে না তারাও ইংরেজি টাইপিংয়ের মাধ্যমে সহজেই বাংলা লিখতে পারে। অভ্র সফটওয়্যারের বিশেষ সুবিধা হলো এতে মাউস দিয়ে লেখার সুবিধা রয়েছে। এতে একটি বিশেষ অন-স্ক্রিন কী বোর্ডে মাউস দ্বারা ক্লিক করে লেখা যায়। এসব সুবিধাসমূহ অন্য বাংলা লেখার সফটওয়্যার যেমন- বিজয়, শহীদ, লিপি, প্রবর্তনা, লেখনী ইত্যাদিতে না থাকার কারণেই অভ্র সফটওয়্যারটি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে।
প্রশ্ন ৫ : ওয়ার্ড প্রসেসিং বলতে কী বোঝ?
উত্তর: লেখালেখি করতে হলেই শব্দ বা ওয়ার্ড লিখতে হয়, সুন্দর করে। লিখতে হলে শব্দগুলোকে সাজাতে ও গোছাতে হয়। আর এটা হচ্ছে এক =/ ধরনের প্রক্রিয়া বা প্রসেসিং। কাজেই কম্পিউটারের মাধ্যমে কোনোকিছু লিখে সুসজ্জিতভাবে সাজানোর প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ওয়ার্ড প্রসেসিং বা শব্দ প্রক্রিয়াকরণ।
প্রশ্ন-৬. তুমি ডকুমেন্ট সম্পাদনায় কপি ও পেস্ট কিভাবে করবে? বর্ণনা করো।
উত্তর: ডকুমেন্টে অনেক সময় কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশ কপি বা অনুলিপি করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়ার প্রয়োজন পরে। এ জন্য প্রথমে ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশকে নির্বাচন করে কী বোর্ডের Ctrl এবং C কী একসাথে চাপতে হয়। এভাবে ডকুমেন্ট সম্পাদনায় কপি করা যায়। আর পেস্ট বলতে ডকুমেন্টের কোনো অংশকে কাট বা কপি করে ডকুমেন্টের অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করাকে বুঝায়। এ জন্য ডকুমেন্টের কোনো শব্দ, অক্ষর, বাক্য বা কোনো অংশকে কাট বা কপি করে ডকুমেন্টের অন্য কোথাও নির্ধারিত স্থানে কারসর এনে কী বোর্ডে Ctrl এবং V কী একসাথে চেপে পেস্ট সম্পন্ন করা যায়। এভাবেই ডকুমেন্ট সম্পাদনায় কপি ও পেস্ট করা যায়।
প্রশ্ন ৭ : ডকুমেন্টে অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক এবং আন্ডারলাইন করা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।
উত্তর: ডকুমেন্টের যে অংশের অক্ষর বা লেখার আকার পরিবর্তন করতে হয় প্রথমে সেই অংশটি নির্বাচন করতে হবে। তারপর যে কোন ওয়ার্ড প্রসেসরে টুলবার বা রিবনে ফন্টের নামের পাশে যে B, I, U থাকে তাতে মাউস দ্বারা ক্লিক করতে হবে। তাহলে অক্ষর বা লেখার আকার যথাক্রমে বোল্ড, ইটালিক এবং আন্ডারলাইন হবে। কী বোর্ড এর সাহায্যেও এ কাজটি করা যায়। ডকুমেন্টে অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড করতে হলে কী বোর্ডে Ctrl এবং B কী দুইটি একসাথে চাপতে হবে। লেখা বা অক্ষর ইটালিক করতে Ctrl এবং I কী একসাথে চাপতে হবে এবং আন্ডারলাইন করতে Ctrl এবং U কী দুইটি একসাথে চাপতে হবে। এভাবে ডকুমেন্ট অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক এবং আন্ডারলাইন করা যায়।
প্রশ্ন ৮ : ডকুমেন্ট এলাইনমেন্ট কী? এ কাজটি করা যায় কীভাবে?
উত্তর: কোনো ডকুমেন্টের অংশ বিশেষকে প্রয়োজন অনুসারে পৃষ্ঠার বামে, মাঝে এবং সবদিকে সমান (জাস্টিফাইড) প্যারাগ্রাফ আকারে এলাইন করাকে ডকুমেন্ট এলাইনমেন্ট বলা হয়। ডকুমেন্টের প্যারাগ্রাফ মার্জিনের কোন দিকে মিশে থাকবে তা এলাইনমেন্টের দ্বারা নির্ধারিত করা হয়। সাধারণত প্যারাগ্রাফের এলাইনমেন্ট বামদিকে থাকে। প্যারাগ্রাফের এলাইনমেন্ট চার ধরনের হয়ে থাকে। বামদিকে থেকে, ডানদিক থেকে, মাঝ বরাবর এবং সবদিকে সমান প্যারাগ্রাফ এলাইন। কোনো ডকুমেন্টের প্যারাগ্রাফের এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করতে হলে প্রথমে তা নির্বাচন করতে হয়। তারপর ওয়ার্ড প্রসেসরে টুলবার বা রিবন থেকে এই আইকনগুলোতে মাউস দ্বারা ক্লিকের মাধ্যমে এলাইনমেন্ট কাজটি করা যায়। মাউস ছাড়াও কী-বোর্ড শর্টকার্ট হচ্ছে বাম দিকে CTRL I, ডানদিকে CTRLr, মাঝখানে CTRL e এবং জাস্টিফাইড CTRL j, কমান্ড ব্যবহার করে এলাইনমেন্ট করা যায়।
প্রশ্ন ১০ : ডকুমেন্ট ফরম্যাট-এর কাজগুলো লেখ।
উত্তর: ডকুমেন্ট ফরম্যাট-এর কাজগুলো হলো
১. অক্ষর বা লেখার আকার ছোট বা বড় করা।
২. অক্ষর বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন করা।
৩. প্যারাগ্রাফ এলাইনমেন্ট।
৪. লাইনের ব্যবধান নির্ধারণ।
৫. টেবিল করা।
৬. বুলেট ও নাম্বার দেওয়া।
৭. লেখার রং পরিবর্তন করা।
৮. স্থির চিত্র এবং ভিডিও সংযোজন করা।
৯. গ্রাফ করা।
১০. লে-আউট কালার ও জলছাপ দেওয়া।
প্রশ্ন ১১ : কীভাবে তুমি ডকুমেন্ট প্রিন্ট বা মুদ্রণ করবে বল।
উত্তর: ফরম্যাটকৃত ডকুমেন্ট কাগজে ছাপানোকে প্রিন্ট বা মুদ্রণ বলে । ডকুমেন্ট প্রিন্ট করতে হলে প্রথমে আমাকে কম্পিউটারের সাথে কালিভর্তি প্রিন্টার যথাযথভাবে সংযুক্ত করতে হবে। প্রিন্টার চালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার এবং উপযুক্ত সাইজের কাগজ আছে কিনা দেখে নিতে হবে। এবার আমি যে কোনো ডকুমেন্ট খুলে বা ওপেন করে মাউস দিয়ে প্রিন্ট আইকনে ক্লিক করব। অথবা, শর্টকাট কী হিসেবে কী বোর্ডের Ctrl ও P কী দুইটি একসাথে চাপব। তখন একটি ডায়ালগ বক্স কম্পিউটারের মনিটরে দেখা যায়। আমি সে ডায়ালগ বক্সের ওপর এন্টার কী চাপলেই ডকুমেন্টটি প্রিন্ট মুদ্রণ শুরু হয়ে যাবে। এভাবে আমি প্রিন্টারের সাহায্যে ডকুমেন্ট প্রিন্ট বা মুদ্রণ করতে পারি।