বালকের সততা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
বালকের সততা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : কোলকাতার বড়বাজারে এক বৃদ্ধ তাঁতির একটি কাপড়ের দোকান ছিল। একদিন জরুরি কাজে বাইরে যাওয়ার সময় করিম বখ্শ নামের এক ছেলেকে তিনি দোকানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যান। নানা দুর্বিপাকে পড়ে দোকানি দীর্ঘদিন ফিরে আসতে পারেননি। এদিকে করিম নিজের সততা ও নিষ্ঠার দ্বার দোকানের অনেক উন্নতি করল।
অবশেষে দীর্ঘ সাত বছর পর তাঁতি ফিরে এলো। করিম তাকে চিনতে পারল এবং সাগ্রহে তাঁতিকে তাঁর দোকান ফিরিয়ে দিতে চাইল। করিমের সততায় তাঁতি মুগ্ধ হলেন এবং নিজের জন্য একটি মাসিক বন্দোবস্ত করে করিমের হাতে দোকানের মালিকানা বুঝিয়ে দিতে তীর্থে চলে গেলেন।
বালকের সততা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : চার সন্তানের জননী রহিমা বেগমের অভাবের সংসার। বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী সে। একদিন রেলের বগি পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি ব্যাগ খুঁজে পায়। ব্যাগে ছিল অনেক টাকা। ভালো করে খুঁজতেই ওটার মধ্যেই পেল মালিকের ফোন নম্বর। পরে মালিককে ডেকে সে সব টাকা ফেরত দিল। মালিক খুশি হয়ে তাকে বকশিস দিতে চাইলে সে তা গ্রহণ করতে রাজি হলো না। পরে অনেক বুঝিয়ে মালিক রহিমাকে রাজি করাতে সক্ষম হলো।
ক. কত বছর পর করিমের মালিক ফিরে এলো?
খ. ‘বলো বাবা, তুমি মানুষ না ফেরেশতা!’ বৃদ্ধের এমন উক্তির কারণ বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের রহিমা বেগমের কোন গুণটি ‘বালকের সততা’ গল্পের করিম বখশ এর মধ্যে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘পরিণতির দিক থেকে গল্পটির সাথে উদ্দীপকের কোনো মিল নেই।’— মন্তব্যটি সম্পর্কে তোমার মত দাও।
প্রশ্নের উত্তর
ক. সাত বছর পর করিমের মালিক ফিরে এলো।
খ. করিমের সততা ও মহৎপ্রাণের পরিচয় পেয়ে বৃদ্ধ অভিভূত হয়ে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন। বৃদ্ধ তাঁতি লোকটি করিম বখশ নামের এক বালকের কাছে দায়িত্ব দিয়ে নানা দুর্বিপাকে প্রায় সাত বছর দোকানে ফিরে আসতে পারলেন না। করিম সততার সাথে তাঁতির দোকানের ব্যবসা চালিয়ে আরও তিনটি দোকান স্থাপন করল । সাত বছর পর ওই দোকানি ফিরে এলে করিম তাকে দোকানের সকল দায়িত্ব তুলে দিতে আগ্রহী হলো। করিমের সততা, দায়িত্বশীলতা, মহানুভবতায় বৃদ্ধ দোকানি অভিভূত হয়ে করিমকে মানুষ না ফেরেশতা বলে অভিহিত করেছেন।
গ. উদ্দীপকের রহিমা বেগমের সততার গুণটি ‘বালকের সততা’ গল্পের করিম বখ্শ এর মধ্যে পাওয়া যায়। সততার গুণ মানুষের চরিত্রের শ্রেষ্ঠগুণ। এ গুণের মানুষগুলো সমাজের অপরাপর মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্র হয়ে থাকে। আর যে মানুষের চরিত্রে সততার গুণ থাকে সে অবশ্যই দায়িত্ব ও কর্তব্যপরায়ণ হয়।উদ্দীপকের রহিমা বেগমের চরিত্রে সততার গুণটি বিদ্যমান রয়েছে।
অভাবী মানুষ হয়েও সে ব্যাগভর্তি টাকা রেলের বগিতে পেয়ে তা আত্মসাৎ না করে প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছে। ‘বালকের সততা’ গল্পের করিম বখ্শ চরিত্রে রহিমার মতো সততার গুণ দেখা যায়। করিম বখ্শ তাঁতির দোকানের দেখভাল করে দীর্ঘ সাতবছর দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যপরায়ণতার পরিচয় দিয়েছে। বৃদ্ধ দোকানি দীর্ঘদিন পর ফিরে এলে তাঁকে সসম্মানে তার দোকানের ভার গ্রহণ করতে অনুরোধ করেছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রহিমা বেগমের সততার গুণটি ‘বালকের সততা’ গল্পের করিম বখ্শ এর মধ্যে পাওয়া যায়।
ঘ. ‘পরিণতির দিক থেকে গল্পটির সাথে উদ্দীপকের কোনো মিল নেই— মন্তব্যটি যথার্থ সততা মানুষের বড় গুণ। সততার বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত মানুষগুলো নির্লোভ হয়ে থাকে। তারা দায়িত্বশীল ও নিষ্ঠার পরিচয় দেয় সব কাজে। উদ্দীপকের রহিমা বেগম চার সন্তানের মা। তার অভাবের সংসার।
কাজ করে রেলের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে। একদিন রেলের বগি পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি ব্যাগভর্তি টাকা পায়। ব্যাগের মালিকের ফোন নম্বর পেয়ে ফোন করে তাকে ডেকে এনে সব টাকা ফেরত দেয়। খুশি হয়ে মালিক তাকে বখশিস দেন। অপর দিকে ‘বালকের সততা’ গল্পের বালক করিম বখ্শ বৃদ্ধ দোকানির দোকানে সফলতা ও সততার সাথে দীর্ঘ সাত বছর ব্যবসা পরিচালনা করে মালিকের ব্যবসার বিশাল উন্নতি করে। সাত বছর পর অসহায়ের মতো দোকানের বৃদ্ধ মালিক ফিরে এলে সসম্মানে তাকে দোকান ও ব্যবসা ফিরিয়ে দিতে চায়। কিন্তু বৃদ্ধ দোকানি তা গ্রহণ করে না। তিনি বালকের সততায় মুগ্ধ ও অভিভূত হয়ে সব দোকান তাকে দিয়ে দেয়।
‘বালকের সততা’ গল্পের বালক করিম বখ্শের সততা তাকে সচ্ছলতার মুখ দেখায়। কিন্তু উদ্দীপকের রহিমা বেগমের সততার পুরস্কার তাঁকে সচ্ছল করে কিনা তা স্পষ্ট নয়। এ সব দিক বিচারে আমার মতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : আবিদা মাঠে খেলার সময় একটি স্বর্ণের চুড়ি কুড়িয়ে পায়। সে ভাবে নিশ্চয় এটি কারও ব্যাগ থেকে পড়ে গেছে। চুড়ির মালিকের জন্য তার কষ্ট হয়। সে মাঠের চারদিকে সংযুক্ত সিসি ক্যামেরার রেকর্ড পরীক্ষা করে চুড়ির মালিককে খুঁজে পায়। পরদিন চুড়ির মালিক ফিরে এলে তাকে সেটি আবিদা ফিরিয়ে দেয়।
ক. বৃদ্ধ শেষে কোথায় চলে যায়?
খ. বালক দোকানে রাত্রিযাপন করে কেন?
গ. আবিদার মধ্যে ‘বালকের সততা’ গল্পের করিমের চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘আবিদা ও করিমের চরিত্রে মিল থাকলেও করিম আরও বেশি মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছে।’– বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : রাত্রি ১০ম শ্রেণিতে পড়ার সময় মা-বাবাকে হারায়। দাদির সাথে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে থাকে। একদিন স্কুলে যাবার পথে সে একটি মানিব্যাগ খুঁজে পায়। খুলে দেখে অনেক টাকা। তারপর সে খেয়াল করল ভিজিটিং কার্ডে মোবাইল নম্বর আছে। তখন সে ফোন করে টাকাগুলো ফেরত দেয়। মানিব্যাগের মালিক টাকা ফেরত পেয়ে এবং রাত্রির সততা দেখে মুগ্ধ হলেন।
ক. বড়বাজারে কার দোকান ছিল?
খ. করিম দোকানেই রাত্রিযাপন করল কেন?
গ. উদ্দীপকের রাত্রির সাথে ‘বালকের সততা’ গল্পের করিমের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. ‘বালকের সততা’ গল্পের সততার বিষয়টি ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও উদ্দীপকের মধ্যে প্রতিফলিত— উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে তিন কোটি টাকার সোনা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়ে সততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। বিমান পরিষ্কার করার সময় সিটের নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা একটি প্যাকেট দেখামাত্র সন্দেহ হয় তাদের। দেরি না করে তারা খবর দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। দুজনের সন্দেহ সত্যি প্রমাণ করে বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ওই প্যাকেটের ভেতর থেকে উদ্ধার করে কোটি টাকা মূল্যের ৬০টি স্বর্ণের বার। ইচ্ছে করলেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে স্বর্ণগুলো আত্মসাৎ করতে পারতেন তারা। তবে সেই লোভ ছুঁতে পারেনি বিমানের দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে। কুড়িয়ে পাওয়া কোটি টাকার স্বর্ণ ফিরিয়ে তারা হয়ে উঠেছেন সততার উদাহরণ।
ক. তাঁতি কত বছর পর ফিরে এসেছিলেন?
খ. বৃদ্ধের মনে আনন্দ হচ্ছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সাথে ‘বালকের সততা’ গল্পের করিমের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. ‘সততা মানুষকে মহান করে’— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : স্কুলের শুরুতে সবাই দৌড়াদৌড়ি করছে। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা হঠাৎ খেয়াল করে মাঠের মধ্যে কি যেন পড়ে আছে। সে তুলে দেখতে পায় পুরো একটি এক হাজার টাকার নোট। আজ বেতনের ডেট। এতগুলো টাকা হারালে নিশ্চয় ছাত্রীটি বিপদে পড়বে, এমনকি নাম পর্যন্ত কাটা যেতে পারে। এক হাজার টাকা নিশ্চয় কয়েক মাসের বেতন হবে। অন্তরা সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের কাছে যায় এবং বলে টাকা আসল ছাত্রীকে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। এতে প্রধান শিক্ষক খুব খুশি হয়ে বলেন তোমার মতো বুদ্ধিমান ছাত্রী থাকা স্কুলের জন্য গৌরবের।
ক. ‘বালকের সততা’ গল্পের লেখকের নাম কী?
খ. “বলো বাবা, তুমি মানুষ না ফেরেশতা”— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের অন্তরার কোন গুণটি তোমার ভালো লাগে এবং কেন ভালো লাগে তা তোমার নিজের ভাষায় লিখ।
ঘ. “সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা”— উক্তিটি উদ্দীপকের অন্তরা ও ‘বালকের সততা’ গল্পের করিম বখ্শ চরিত্রের আলোকে মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : একদিন এক কাঠুরিয়া তার একমাত্র কুঠার হারিয়ে কাঁদছিলো। ফেরেস্তা তার সততার পরীক্ষার জন্য সোনা, রূপা ও লোহার তিনটি কুঠার দেখালেন। সে তার লোহার কুঠারটিই বেছে নিলো। খুশি হয়ে ফেরেস্তা কাঠুরিয়াকে পুরস্কৃত করলো।
ক. তাঁতি কত বছর পর ফিরে এসেছিলো?
খ. সততাই মানব চরিত্রের শ্রেষ্ঠগুণ – ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের কাঠুরিয়ার সাথে ‘বালকের সততা’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য আছে?
ঘ. “সততা ও বিশ্বস্ততাই উদ্দীপক ও ‘বালকের সততা’ গল্পের মূলবিষয়” – আলোচনা করো।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।