আসমানি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

আসমানি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : রসুলপুরের ছোট্ট পাখির বাসার মতো বাড়িতে আসমানির বাস। একটু বৃষ্টি হলেই সে বাড়িতে পানি গড়িয়ে পড়ে এবং বাতাসে ঘর নড়বড় করে। আসমানি ঠিকমতো খেতে পায় না বলে তার বুকের হাড় দেখা যায়। পরনে শত শত ছেঁড়া তালির পোশাক। এমন দরিদ্রতার কারণে তার মুখে হাসি নেই, চোখ দিয়ে শুধু অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। বাড়ির আশপাশের পরিবেশ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে।

আসমানি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : গ্রামের দরিদ্র কৃষক লালচান মিয়া। বিঘে তিনেক জমি বর্গা চাষ করে। পর-পর দুবছর বন্যা ও খরায় সে জমিতে ফসল ফলেনি। পরিবারকে দু-বেলা পেট ভরে খেতে দিতে পারে না। না খেতে পেয়ে সন্তানদের চোখ কোটরে ঢুকে গেছে, বুকের পাজর গোনা যায়। একটি মাত্র মাটির ঘর, তারও আবার ছাউনি নষ্ট হওয়ার উপক্রম। বৃষ্টি বাদলার রাতে ঘরের কোণে বসে রাত কাটাতে হয়। লালচান মিয়ার মতো মানুষগুলোর অভাব যেন পিছু ছাড়ে না।

ক. আসমানিদের গ্রামের নাম কী?
খ. মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ-রাশি, থাপড়েতে নিবিয়ে গেছে দারুণ অভাব আসি এই চরণ দুটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. আসমানিদের ঘরের সাথে লালচান মিয়ার ঘরটির সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘লালচান মিয়ার মতো মানুষগুলোর অভাব যেন পিছু ছাড়ে না’— ‘আসমানি’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।

প্রশ্নের উত্তর

ক. আসমানিদের গ্রামের নাম রসুলপুর।

খ. আসমানির হাসি অভাবের দরুন মুছে গেছে, যা বোঝাতে আলোচ্য চরণটির অবতারণা করা হয়েছে।
আসমানি নিতান্তই হতদরিদ্র। পেট ভরে খেতে পায় না বলে, অনাহারেই দিন কাটে। দারিদ্র্যের এই কশাঘাতে নিভে গেছে তার মুখের হাসি। অথচ তার হাসি দেখলে মনে হয় যেন প্রদীপ জ্বলছে। কিন্তু অভাব তার মিষ্টি হাসি কেড়ে নিয়েছে।

গ. আসমানিদের ঘরের মতো লালচান মিয়ার ঘরটিরও হতদরিদ্র ও নড়বড়ে অবস্থা।

‘আসমানি’ কবিতার আসমানিদের ঘর নড়বড়ে, পাখির বাসার মতো হালকা। বাড়ির ওপরে ভেন্না পাতার ছাউনি দেওয়া। গরিব মানুষেরাই ভেন্না পাতা ঘরের ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করে। একটুখানি বৃষ্টি হলেই চালা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। আসমানিদের বাড়ির অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তা থাকার অযোগ্য।

উদ্দীপকের লালচান মিয়ারও থাকার জন্যে একটামাত্র ঘর রয়েছে। সেই ঘরের ছাউনিও আবার নষ্ট হওয়ার উপক্রম। বৃষ্টি হলে ঘরের কোণে বসে দিন কাটাতে হয়। আসমানিদের থাকার ঘর যেমন বসবাসের অযোগ্য, লালচান মিয়ার ঘরও তেমনি। আর সেজন্যেই আসমানিদের ঘরের সাথে লালচান মিয়ার ঘরের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

ঘ. ‘আসমানি’ কবিতায় গরিব দুঃখি মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে, যা উদ্দীপকের লালচাঁদ মিয়ার মতো মানুষের দুঃখ-কষ্টের অনুরূপ।

‘আসমানি’ কবিতার আসমানিদের হতদরিদ্র অবস্থা। পেট ভরে খেতে পায় না তারা, আবার ঘরের অবস্থাও একদম নাজেহাল। অভাব এসে কেড়ে নিয়ে গেছে তাদের মুখের হাসি ।

উদ্দীপকের লালচান মিয়াও হতদরিদ্র চাষি। বন্যা ও খরায় তার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনাহারে তার ছেলে-মেয়েদের এমনই অবস্থা যে, বুকের পাজর গোনা যায়। পরিবারকে দুবেলা পেট ভরে খেতেও দিতে পারেন না।

‘আসমানি’ কবিতার আসমানি ও উদ্দীপকের লালচান মিয়া দারিদ্র্যের কশাঘাতে নাজেহাল অবস্থায় জীবনযাপন করে। তাদের দুজনেরই থাকার ঘরের অবস্থা একদম নড়বড়ে। পেট পুরে দুবেলা খেতেও পারে না তারা। অনাহারে, অর্ধাহারে শরীরের অবস্থা নিতান্তই করুণ। আসমানি এবং উদ্দীপকের লালচান মিয়ার মতো মানুষের অবস্থা এমনই দুর্বিষহ, অভাব যেন এদের পিছু ছাড়ে না ।

নিজে অনুশীলন করো

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : তেরো বছর বয়সি রতন ফুটপাতে থাকে। কখনো রাস্তার পলিথিন, প্লাস্টিক কুড়ায়। কখনো ভিক্ষা করে মানবেতর জীবন কাটায়। কখনো দিনে খেতে পায় কখনো খেতে পায় না। বর্ষাকালে কখনো বাসের যাত্রীছাউনিতে সারারাত না ঘুমিয়ে কাটায়। রোগে ভুগে ফুটপাতে শুয়েই দিনের পর দিন কাটিয়ে দেয়। মৃত্যুর সাথে লড়াই করে তবুও সে বেঁচে থাকে।

ক. ‘বৈদ্য’ অর্থ কী?
খ. আসমানির গলার সুর ক্ষয় হয়েছে কীভাবে?
গ. উদ্দীপকের রতনের সাথে ‘আসমানি’ কবিতার আসমানির সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপক এবং ‘আসমানি’ কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে সবকিছু হারিয়ে পথে এসে দাঁড়ায় আলতাফ মিয়ার পরিবার। মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে গাছের তলায় রাত কাটে তাদের। দুবেলা দুমুঠো খাবারের অভাবে পাঁজরের হাড় বেরিয়ে যায় আলতাফ মিয়ার ছেলেমেয়েদের। চারপাশের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিত্যই রোগে ভুগতে থাকে বাচ্চাগুলো।

ক. আসমানির গায়ের বরণ কী রকম?
খ. আসমানির গায়ের বরণ উপহাস করছে কেন?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আসমানি’ কবিতার মিলগুলো তুলে ধরো।
ঘ. “উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আসমানি’ কবিতার সাদৃশ্য থাকলেও প্রেক্ষাপট ভিন্ন”– বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : বিউটি তার বাবার সঙ্গে একদিন ভোরবেলা মর্নিং ওয়াকে বেরিয়েছিল। রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে সে দেখতে পেল অসংখ্য মানুষ ফুটপাতে শুয়ে আছে। তাদের কোনো ঘর নেই। ছেঁড়া কাঁথা জড়িয়ে শুয়ে আছে অনেকে। কেউ আবার মাটিতেই শুয়ে ঘুমাচ্ছে।

ক. জসীমউদ্দীন কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. আসমানির রোগে ভোগার কারণ ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘আসমানি’ কবিতার কোন দিকটি উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে— ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘আসমানি’ কবিতার সমগ্র চিত্র ফুটে ওঠেনি”– তোমার মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : তানিসা বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। সে অভাব কী জিনিস কখনো দেখেনি। তার বাবা-মার কাছে সে যখন যা চায় তাই পায়। শীতকালে বাবা-মায়ের সাথে খালার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে দরিদ্র মানুষের জীবন-যাপন দেখে তানিসা ভাবতেই পারে না মানুষ এত কষ্ট করে জীবন-যাপন করে। ওদের কষ্ট দেখে তানিসার মন বেদনায় ভরে ওঠে।

ক. ‘উপহাস’ শব্দটির অর্থ কী?
খ. আসমানিরা কীভাবে রান্না বান্না করে?
গ. ‘আসমানি’ কবিতার আসমানির সঙ্গে উদ্দীপকের তানিসার বৈসাদৃশ্য তুলে ধরো।
ঘ. উদ্দীপকের তানিসার মতো আসমানি কেন জীবন-যাপন করতে পারে নি? বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : স্মৃতি হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবা হারা পরিবারে একমাত্র বড় ভাইটিই তার ভরসা। ভাইটিও পরিবারের ভরণ-পোষণ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রাইভেট হাসপাতালে খরচ বেশি বলে স্মৃতিকে নিকটস্থ ছোট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অযত্ন-অবহেলায় তার চিকিৎসা চলে। টাকার অভাবে প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হতে না পারায় তার মনে দুঃখ জাগে।

ক. জ্বলে কী গুলেছে?
খ. আসমানিদের দুঃখের কারণ ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের স্মৃতির অবস্থার সাথে ‘আসমানি’ কবিতার আসমানিদের সম্পর্ক নিরূপণ করো।
ঘ. তুমি কি মনে করো, আসমানি ও উদ্দীপকের স্মৃতি একই সমস্যায় জর্জরিত? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ :

রুগ্‌ণ ছেলের শিয়রে বসিয়া একেলা জাগিয়েছে মাতা,
করুণ চাহনি ঘুম ঘুম যেন ঢুলিছে চোখের পাতা।
শিয়রের কাছে নিবু নিবু দীপ ঘুরিয়া ঘুরিয়া জ্বলে,
তারি সাথে সাথে বিরহী মায়ের একেলা পরাণ দোলে।
ভন ভন ভন জমাট বেঁধেছে বুনো মশকের গান,
এঁদো ডোবা হতে বহিছে কঠোর পচান পাতার ঘ্রাণ।
ছোট কুঁড়েঘর। বেড়ার ফাঁকেতে আসিছে শীতের বায়ু,
শিয়রে বসিয়া মনে মনে মাতা গণিছে ছেলের আয়ু।

ক. কবি জসীমউদ্দীনের গ্রামের নাম কী?
খ. বৈদ্য ডেকে ওষুধ করে পয়সা নাহি আর’– উক্তিটি দ্বারা কী বুঝোনো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আসমানি’ কবিতার কোন বিষয়টির সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকটির ‘আসমানি’ কবিতার সম্পূর্ণ ভাব ধারণ করতে পারেনি। মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : মামুন বেড়িবাঁধের বস্তিতে ছোট একটি ঝুলন্ত টিনের ঘরে থাকে। ঘরের নিচে বদ্ধ পানিতে বেড়ে ওঠা কচুরিপানায় অসংখ্য মশা। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো অসুখ সর্বদা লেগেই থাকে। নেই নিরাপদ পায়খানা। ঝুলন্ত পায়খানা থেকে ভেসে আসা দুর্গন্ধে মাঝে মাঝে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মামুন স্বপ্ন দেখে, বড় হয়ে সে তার মা-বাবাকে নিয়ে একটি সুন্দর পরিবেশে থাকবে।

ক. আসমানিদের বাড়ির ধারের পুকুরে কী বাস করে?
খ. ‘সাক্ষী দেছে অনাহারে কদিন গেছে তার’—এই চরণ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের মামুনের জীবনাচরণের সঙ্গে আসমানির জীবনের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. মামুনের স্বপ্নের প্রতিফলন ‘আসমানি’ কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে কি? তোমার মতামত দাও?

সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : রাহেলা তার বাবা-মার সাথে এক বস্তিতে থাকে। তাদের দু-বেলা দু-মুঠো ভাত জুটে না, বৃষ্টি হলে ঘরে পানি পড়ে। পাশের জলাশয়ের নোংরা, জীবাণুযুক্ত জলেই তাদের গোসল ও রান্না-বান্না চলে।

ক. আসমানীর বাড়ি কোথায়?
খ. আসমানীদের বাড়িকে পাখির বাসা বলেছেন কেনো?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আসমানী’ কবিতার কোন চরিত্রের মিল আছে আলোচনা করো।
ঘ. “দারিদ্র্যতাই যেন উদ্দীপক ও ‘আসমানী’ কবিতার মূল সুর।” মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : আদর্শপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রুবিনা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে তাদের বহনকারী গাড়িটি গিয়ে থামল শাহবাগ মোড়ের সিগন্যালে। হঠাৎ রুবিনার চোখ পড়ল এক ফুল বিক্রেতার দিকে। তার চেয়েও কম বয়সী একটি মেয়ে পরনে ময়লা প্যান্ট, উসকো-খুসকো চুল আর হাতে একগুচ্ছ গোলাপ। থেমে থেমে চলা গাড়িগুলোর মধ্য দিয়ে রোগাক্রান্ত চেহারায় মেয়েটি ছুটছে এ গাড়ি থেকে ও গাড়ি। জীবন বাজি রেখে ছুটে চলা মেয়েটিকে ভাবতে ভাবতে রুবিনার মনে পড়ল কবি জসীমউদদীনের লেখা আসমানি কবিতার আসমানিকে।

ক. আসমানিদের গ্রামের নাম কী?
খ. ‘মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ-রাশি, থাপড়েতে নিবিয়ে গেছে দারুণ অভাব আসি- এই চরণ দুটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে আসমানি কবিতার কোন দিকটির আভাস দেওয়া হয়েছে? বর্ণনা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের ফুল বিক্রেতা মেয়েটি আসমানি কবিতার বিষয়বস্তুর আংশিক প্রতিফলন মাত্র’- আসমানি কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ANSWER SHEET

উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *