কতকাল ধরে প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (PDF)
কতকাল ধরে প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : বাংলাদেশের ইতিহাস আড়াই হাজার বছর বা তারও বেশি সময়ের পুরোনো। তেইশ-চব্বিশ-শ বছর আগে যখন রাজা-রাজড়ারা আসলেন তখন থেকে শুরু হলো এদেশের ইতিহাস লেখা। প্রাচীনকালে পুরুষেরা পরত ধুতি-চাদর আর মেয়েরা শাড়ি-ওড়না। সাধারণ লোকের জুতা পরার সামর্থ্য ছিল না, তারা পরত কাঠের খড়ম।
সোনার অলংকার পরার সুযোগ পেত শুধু ধনীরা। মাছ-ভাত-তরিতরকারি-দুধ-ঘি ইত্যাদি ছিল সেকালের বাঙালির প্রিয় খাদ্য। ইলিশ মাছ ছিল বেশি প্রিয়। কুস্তি ছিল সেকালের পুরুষদের অত্যন্ত প্রিয় খেলা, নারীদের ছিল সাঁতার। জলপথই ছিল যাতায়াতের প্রধান পথ, তবে স্থলপথও ছিল বেশিরভাগ লোকই থাকত কাঁচা বাড়িতে। সেকালেও সাধারণ মানুষ স্বপ্ন দেখত— সরু চালের সাদা গরম ভাতের। একালেও তারা তাই দেখছে।
কতকাল ধরে প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : রওনক জাহান বেইলী রোডের নাট্যমঞে বাঙালির প্রাচীন জীবনযাত্রার ওপর একটি মঞ্চনাটক দেখলেন। তিনি নাটকের কলাকুশলীদের পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে হতবাক হলেন। কারণ পুরুষ অভিনেতারা পরনে শুধু লুঙ্গি, পায়ে কাঠের খড়ম, হাতে-গলায় তামার অলংকার পরেছেন। মেয়েরা পরেছেন মখমলের কাপড় আর হাতে-পায়ে কানে-নাকে ও গলায় ব্রোঞ্জের তৈরি বেমানান সাইজের অলংকার। এই দৃশ্য দেখে তিনি মনে করলেন প্রাচীন যুগের পরিধেয় বস্ত্রের চেয়ে বর্তমান যুগের পরিধেয় সাজসজ্জা অনেক রুচিশীল ও মার্জিত।
ক. হাজার বছর পূর্বে কোন চালের ভাতের কদর সবচেয়ে বেশি ছিল?
খ. ‘প্রাচীনকালে জলপথই ছিল যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো।
গ. নাটকের কলাকুশলীদের সাজসজ্জার সাথে ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধের প্রাচীন যুগের সাজসজ্জার বৈসাদৃশ্য বর্ণনা করো।
ঘ. উদ্দীপকের রওনক জাহানের বক্তব্য ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধে কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে বলে তুমি মনে করো? মতামত দাও।
উত্তর
ক. হাজার বছর পূর্বে সরু সাদা চালের ভাতের কদর সবচেয়ে বেশি ছিল।
খ. এ যুগের মতো উন্নত যাতায়াতব্যবস্থা গড়ে তোলার সক্ষমতা না থাকায় প্রাচীনকালে জলপথই যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল।
প্রাচীনকালে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত ছিল না। হাতির পিঠে চড়ে বা ঘোড়ার গাড়িতে করে অবস্থাপন্ন লোকেরা যাতায়াত করলেও সাধারণ মানুষের প্রধান অবলম্বন ছিল নৌকা। প্রশ্নোক্ত উক্তির মাধ্যমে এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
গ. ‘কতকাল ধরে’ রচনায় বিধৃত প্রাচীন যুগের সাজসজ্জার সাথে উদ্দীপকের সাজসজ্জার কিছু বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয় । ‘কতকাল ধরে’ রচনায় প্রাচীনকালের বাঙালিদের জীবনাচরণের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। প্রাচীনকালের মানুষ নানারকম গহনা বা সাজসজ্জার জিনিস ব্যবহার করত। আলোচ্য রচনায় তার একটি বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
উদ্দীপকে পুরুষ অভিনেতারা শুধু ধুতি, কাঠের খড়ম ও তামার অলংকার পরেছে আর মহিলারা মখমলের কাপড়ের সাথে ব্রোঞ্জের অলংকার পরেছে। কিন্তু ‘কতকাল ধরে’ রচনায় দেখা যায়, প্রাচীনকালে পুরুষেরা ধুতি, চাদর আর মেয়েরা শাড়ি, ওড়না পরত। সে সময় ধনী পরিবারের ছেলেমেয়েরা মণি-মুক্তা ও সোনার তৈরি অলংকার পরত, যা উদ্দীপকের অভিনেতাদের সাজসজ্জা থেকে অনেকটাই ভিন্ন। সেদিক বিবেচনায়, উদ্দীপকের কলাকুশলীদের সাজসজ্জার সাথে রচনায় বিধৃত প্রাচীন যুগের সাজসজ্জার বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের রওনক জাহানের বক্তব্য ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধে প্রতিফলিত হয়নি। ‘কতকাল ধরে’ রচনায় প্রাচীনকালের সাজসজ্জার কথা উঠে এসেছে। প্রাচীনকালে পুরুষেরা পরত ধুতি, চাদর, আর মেয়েরা শাড়ি, ওড়না। সাধারণ মানুষের জুতো পরার সামর্থ্য ছিল না। তারা পরত কাঠের খড়ম।
উদ্দীপকের রওনক জাহান মনে করেন, বর্তমান যুগের পরিধেয় সাজসজ্জা বেশি রুচিশীল ও মার্জিত। শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং রুচির সমন্বয়ে এখনকার পোশাক-পরিচ্ছদ আগের চেয়ে অনেক সুন্দর।
প্রাচীনকালে বর্তমান সময়ের মতো আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। তখনকার মানুষ তাদের মতো করেই পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজসজ্জার সামগ্রী তৈরি করেছে। ‘কতকাল ধরে’ রচনায় প্রাচীনকালে ব্যবহার্য পোশাকের যে বর্ণনা রয়েছে তার মধ্যে সালোয়ার, শাড়ি বর্তমানেও বাঙালি সমাজে সমাদৃত। এছাড়া এ রচনায় সেসব পোশাক নিয়ে সমালোচনা করা হয়নি। সে বিবেচনায় রওনক জাহানের মন্তব্যটি ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধে প্রতিফলিত হয়নি।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : বর্তমানে আমাদের দেশে ভালো খাবার বলতে কাচ্চি বিরিয়ানি, মুরগির রোস্ট, খাসি বা গরুর মাংস, পোলাও, কোর্মা, বোরহানি, দই, মিষ্টি ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রীকে বোঝায়। আবার মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণ-তরুণিদের পছন্দের খাবার হলো বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন ফ্রাই, সুপ, ফ্রেন্স ফ্রাই তথা নানা বিদেশি খাবার।
ক. বাঙালির কাছে কোন খাবারের কদর ছিল সবচেয়ে বেশি?
খ. প্রাচীন আমলে ছেলেরা কী ধরনের অলংকার ব্যবহার করত?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘কতকাল ধরে’ রচনার মিল ও অমিল দেখাও।
ঘ. “সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও রুচির পরিবর্তন ঘটে”—– উক্তিটির সত্যতা নিরূপণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : পথে পথে মিয়ানমারের রঙিলা যুবতী— তরুণীরা। কলহাস্যে মুখর। বাড়ির সামনে দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে কেউ কেউ। যুবক, যুবতী, ছোট, বৃদ্ধ। মিয়ানমারের সবাই লুঙ্গি পরে। মেয়েদের পরনে লুঙ্গি ও ঝলমলে ব্লাউজ জাতীয় জামা বা গেঞ্জি।
ক. সাধারণ লোক কীসের পাত্রে রান্নাবান্না করত?
খ. বাঙালিরা নিত্য প্রিয় খাবার কী কী ছিল? বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধের কোন দিকটির প্রতিনিধিত্ব করছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধের সামগ্রিক ভাব উদ্দীপকে স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : পূজাতে মিতুদের বাড়িতে তার বন্ধুরা বেড়াতে এলো। মিতুর মা তাদের খাজা, মোয়া, নাড়ু, পিঠাপুলি, বাতাসা, কদমা ইত্যাদি খেতে দিলেন। এছাড়াও দিলেন ক্ষীর, দই, পায়েস, ছানা ইত্যাদি। তার বন্ধুরা এসব খাবার খেয়ে খুব মজা পেল। মিতুর মা তাদের বললেন, এ খাবারগুলো বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।
ক. কড়ি কারা খেলতো?
খ. পুরোনো সাহিত্যে প্রাচীন বাংলার ভালো খাবার বলতে কোন খাবারকে বোঝাত?
গ. উদ্দীপকে ‘কতকাল ধরে’ রচনার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? নিরূপণ করো।
ঘ. উদ্দীপকের খাবারগুলো সম্পর্কে মিতুর মায়ের অভিমত কতখানি যৌক্তিক? মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : আমাদের যুগে আমরা যখন উড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি, তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগনজুড়ি। উত্তর মেরু দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা, আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জিন, পরী, দেও দানা।
ক. ‘সামন্ত’ কাদের বলা হয়?
খ. আগের দিনে সাধারণ মানুষ জুতো পরতে পারত না কেন?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য বর্ণনা করো।
ঘ. ‘প্রবন্ধে আমাদের সামাজিক জীবনের বিবর্তনের ইতিহাস আছে, যার খণ্ডাংশ মাত্র উদ্দীপকে ঠাঁই পেয়েছে। — মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : রাজা শ্যামপাল একজন অত্যাচারী শাসক ছিলেন। অসৎ চরিত্র, মদ্যপান, বাইজি নাচ এসবের অধিকারী ছিলেন এবং প্রজাদের খাজনার টাকা এসব খাতে ব্যয় করতেন। অথচ প্রজারা ঠিকমত দু বেলা খেতে পেত না। বিভিন্ন অত্যাচারে প্রজারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল । রাজা ও প্রজার এই বৈষম্য সমাজেরই একটি দুর্বল দিক।
ক. সামন্ত কাদের বলা হতো?
খ. রাজাদের আগমনের পূর্বে মানুষ সুখী ছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের রাজা ও ‘কতকাল ধরে’ রচনার রাজ-রাজড়াদের মধ্যে কী কী সাদৃশ্য পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রাজা-প্রজার বৈষম্য সমাজকে ভঙ্গুর করে দেয়— উদ্দীপক ও ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : তুহিনের বাবা বললেন, “আমাদের পাঁচ মাইল পথ পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হতো। পথে অনেক সাঁকো পার হতে হতো। বর্ষাকালে পথঘাট ডুবে যেত, তখন নৌকাই ছিল যাতায়াতের একমাত্র বাহন। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে।” এছাড়া প্রযুক্তি জীবনযাত্রাকে সহজ করেছে।
ক. প্রাচীনকালে বাঙালিরা কীসের পাত্রে রান্না করত?
খ. ইতিহাসে বড় বড় অক্ষরে রাজাদের নাম লেখা হলো কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘কতকাল ধরে’ রচনার কোন দিকটি উঠে এসেছে? তুলে ধরো।
ঘ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা বক্তব্যের সত্যতা ‘কতকাল ধরে’ রচনার আলোকে যাচাই করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : শহরের ময়ে দীপা তার নানাকে নিয়ে নানা বাড়ির গ্রাম দেখতে বের হয়। তার নানা প্রথমে তাকে একটা অবস্থাপন্ন পরিবারে নিয়ে যান। এ পরিবারে তার বয়সি মেয়েরা সালোয়ার-কামিজ পরে, ঠোঁটে লিপিস্টিক দেয়, হাতে চুড়ি ও কানে স্বর্ণের দুল পরে। গৃহিণীরা তাঁতের শাড়ি পরে এবং শাড়ির আঁচলে টেনে ঘোমটা দেয়। তাঁদের হাতে ও গলায় স্বর্ণালংকার শোভা পাচ্ছে। এ বাড়ি পেরিয়ে দীপা এক দিনমজুরের খড়ের তৈরি ঝুপড়ি ঘরে ঢুকে পড়ে। দিনমজুরের স্ত্রীর পরনে মলিন শাড়ি, সন্তানদের পরনে ছেঁড়া হাফপ্যান্ট এবং শরীরের রুগ্ণ দশা দেখে দীপার খুব মনকষ্ট হয়। সে ভাবে, শত শত বছর চলে যায়, কিন্তু এদেশের দরিদ্র মানুষের জীবনের অভাবগুলো আর চলে যায় না।
ক. বাংলাদেশের ইতিহাস কত বছরের পুরোনো?
খ. ‘ইতিহাস বলতে বোঝায় সব মানুষের কথা’ উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
গ. দীপার দেখা গ্রামের লোকজনের পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে হাজার বছর আগের পূর্বপুরুষদের পোশাকের যে মিল পাওয়া যায় তা বর্ণনা কর।
ঘ. ‘শত শত বছর চলে যায়, কিন্তু এদেশের মানুষের জীবনের অভাবগুলো চলে যায় না।’ উদ্দীপক এবং ‘কতকাল ধরে’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।