স্থিতিশক্তি বা বিভব শক্তি
Potential energy
বন্তু তার অবস্থানের জন্য যে শক্তি অর্জন করে অথবা বস্তুস্থিত কণাসমূহের পারস্পরিক অবস্থান পরিবর্তনের জন্য বস্তু যে শক্তি অর্জন করে তাকে বস্তুর স্থিতিশক্তি বা বিভব শক্তি বলে।
ধর, এক খণ্ড ইট ছাদের উপর উঠিয়ে রেখে দিলে, আবার মােটরের সাহায্যে পানি তুলে ছাদের উপর রক্ষিত একটি ট্যাংকে রেখে দিলে। উভয় ক্ষেত্রে দেখা যাবে যে ইট এবং পানি কম-বেশি শক্তি প্রান্ত হয়েছে। এরূপ সকল শক্তিই হলো স্থিতিশক্তি। কোনো বস্তুর স্থিতিশক্তি বস্তুর ভর, ভূমি থেকে উচ্চতা এবং পরীক্ষাধীন স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভর করে।
উদাহরণ-
(ক) খেলনার মোটর গাড়িতে স্প্রিং লাগানো থাকে। এই স্প্রিং- এ দম দিলে তা আকারে ছোট হয়। এই আকার পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করি যা স্থিতিশক্তিরূপে স্প্রিং- এ সঞ্চিত হয়। দম ছেড়ে দিলে স্প্রিং-এর প্যাঁচ খুলে পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। স্প্রিং- এর সাথে খেলনার চাকা লাগানাে থাকে । ফলে চাকা ঘুরতে থাকে অর্থাৎ স্প্রিং স্থিতিশক্তির দরুন গাড়ি চালাতে কাজ করে।
(খ) হাত ঘড়িতে স্থিতিস্থাপক স্প্রিং- এর সাথে ঘড়ির চাকা যুক্ত থাকে। এই স্প্রিং- এ দম দিলে তা আকারে ছােট হয় । এই আকার পরিবর্তন তথা দম দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করি যা স্প্রিং- এর মধ্যে স্থিতিশক্তিরূপে সঞ্চিত হয়। স্প্রিং- এর সাথে ঘড়ির কাঁটার এমন একটি সংযোগ থাকে যে স্প্রিং পাঁচ খুলে উল্টা দিকে ঘুরে আগের অবস্থায় ফিরে আসার সময় ঘড়ির কাটা ঘুরতে থাকে। স্প্রিং- এর স্থিতিশক্তি গতিশক্তিতে পরিণত হয়।
এরূপ ধনুকের ছিলাতে তীর লাগিয়ে টানলে, ধাতব পাতকে বাঁকালে, রবারকে প্রসারণ করলে সকলেই আকার পরিবর্তনের জন্য স্থিতিশক্তি লাভ করে।
(গ) উচ্চে অবস্থিত পানিতে, পাহাড়ের চূড়ায় বরফে এবং আকাশের মেঘে অবস্থান পরিবর্তনের জন্য স্থিতিশক্তি সঞ্জিত থাকে।
স্থিতিশক্তির পরিমাপ
কোনো একটি বস্তু তার বর্তমান অবস্থান থেকে অন্য যেকোনো স্বাভাবিক অবস্থান বা প্রমাণ অবস্থানে আসতে ঐ বস্তু যে পরিমাণ কাজ সম্পাদন করে সেই পরিমাণ কাজকেই বলে স্থিতিশক্তির পরিমাপ।
বিভব শক্তির বা স্থিতিশক্তির প্রকারভেদ
Types of potential energy
স্থিতিশক্তি বা বিভব শক্তি বিভিন্ন প্রকার।
যথা—
(১) অভিকর্ষীয় স্থিতিশক্তি বা অভিকর্ষীয় বিভব শক্তি (Gravitational potential energy)
(২) স্থিতিস্থাপক বিভব শক্তি (Elastic potential energy)
(৩) তড়িৎ বিভব শক্তি (Electric potential energy)