মাছের পুকুরে চুন ব্যবহারের নিয়মাবলী

পুকুরে চুন কেন ব্যবহার করা হয় ?

  • মাছের পুকুরে চুনের প্রধান কাজ হল মাটি ও পানির অম্লতা হ্রাস করা।
  • প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধির জন্য, মাছের ভাল বৃদ্ধি এবং বেঁচে থাকার জন্য পুকুরে এটি অপরিহার্য।
  • পুকুরে জৈব পদার্থের অবক্ষয়ের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, তাই পুকুরে ব্যবহারযোগ্য নাইট্রোজেনের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  • পুকুরে ব্যবহারযোগ্য ফসফেটের পরিমাণ বৃদ্ধি করা এবং ফাইটোপ্লাঙ্কটনের বৃদ্ধির জন্য এটি প্রয়োজনীয়।
  • পানিতে ক্ষারত্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • যেহেতু চুনের মধ্যে ক্যালসিয়াম থাকে, তাই চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পুকুরের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
  • চুন তার অতিরিক্ত ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে কিছু মাছের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
  • জলের গাঠনিক অবস্থার পরিবর্তন করে পুকুরের পানির অক্সিজেন বাড়ায়।
  • পানির স্বচ্ছতা বাড়ায়।
  • পুকুরে বিষাক্ত গ্যাসের পরিমাণ কমায়।

চুনের ধরন

  1. ক্যালসিয়াম অক্সাইড ( CaO )
  2. ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড ( Ca (OH)2 )
  3. চুনাপাথর ( CaCO3 )
  4. ডলোমাইট ( CaMg (CO3 ) 2 )

পুকুরে সর্বোত্তম পরিমাণে চুন ব্যবহার

পুকুরের পানিকে নিরপেক্ষ করার জন্য চুনের পরিমাণ মূলত মাটির পিএইচ এবং পুকুরের পানির উপর নির্ভর করে। যদি পুকুরের নিচের মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পায়, নিরপেক্ষতার জন্য চুনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। যদি পুকুরের pH নিরপেক্ষ হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় চুনের পরিমাণও কমে যায়। পুকুরে ব্যবহৃত চুনের সর্বোত্তম পরিমাণ মূলত পুকুরের মাটির প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।

  • পানির পিএইচ মান ৩ -৫ পাথুরে চুন ১২ (কেজি/শতক) পোড়া চুন ৬ (কেজি/শতক)
  • পানির পিএইচ মান ৫ -৬ পাথুরে চুন ৮ (কেজি/শতক) পোড়া চুন ৪ (কেজি/শতক)
  • পনির পিএইচ মান ৬ -৭ পাথুরে চুন ২ (কেজি/শতক) পোড়া চুন ১ (কেজি/শতক)

প্রথমে মাটির চাড়ি বা টিনের ড্রামে অথবা সিলভারে পাতিলে পানি সহ চুন ভেজাতে হবে। প্লাষ্টিকের বালতিতে চুন ভেজাবেন না। কিছুক্ষণের মধ্য চুন ফুটে গরম হয়ে যাবে এমন সময় সর্তক অবস্থায় থাকতে হবে। তারপর চুন ঠাণ্ডা হলে চুনসহ পানি সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে।

চুন প্রয়োগের সঠিক সময়

পানিতে চুন প্রয়োগের জন্য সর্বোত্তম সময় হল ভোরবেলা কারণ এই সময়ে পানির pH খুব কম থাকে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *