সোনা | সোনার বৈশিষ্ট্য এবং ব্যবহার

সোনা বা স্বর্ণ (Gold) একটি রাসায়নিক উপাদান। এটি প্রকৃতিতে বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাই প্রাচীনকালে মানুষ এটিকে সহজে খুঁজে পায় আর নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে থাকে। আগেকার মানুষ সোনা দিয়ে গহনা বানানোর পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজে ব্যবহার করত। সোনা যাতে মূল্যবান ধাতু তা তখন থেকেই মানুষ বোঝা শুরু করেছিল। তখন তারা সোনাকে টাকার পরিবর্তে ব্যবহার করত। সোনার রাসায়নিক প্রতীক হলো Au.

যেখানে সোনার সন্ধান পাওয়া যায়

পৃথিবীতে শোনা সাধারণত শিলা আকারে পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিলাতে সোনার পরিমাণ এত কম যে এটি খালি চোখে দেখা যায় না। যেসব শিলাতে সোনা পাওয়া যায় সেসব শীলাতে আবার তামা এবং সিসা ও পাওয়া যায়। তাই তামা বা সিসা আহরণের পদ্ধতি অনুসারেই আহরণ করা হয়।

কোন কোন জায়গায় আবার সোনার খনি ও পাওয়া যায়। খুনি তখনই পাওয়া যায় যখন অনেক অনেক বছর ধরে একই জায়গায় শিলা জমা হতে থাকে। প্রাচীনকালে সোনা নদীতে ভেসে যেতে দেখা যেত। এক বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে সাউথ আফ্রিকা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চীন এবং পেরো হচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ সোনা উৎপাদনকারী দেশ।

সোনার বৈশিষ্ট্য

সোনা খুব নরম। তাই এটিকে সহজেই বিভিন্ন আকার দেওয়া যায়। সোনা খুব ভাল বিদ্যুৎ পরিবাহী হিসেবেও কাজ করে।

পারমাণবিক সংখ্যা 79
পারমাণবিক ভর 196.96657
গলনাঙ্ক 1,063° C (1,945° F)
স্ফুটনাঙ্ক 2,966° C (5,371° F)
আপেক্ষিক গুরুত্ব 19.3 (20 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা 68 ডিগ্রি ফারেনহাইট এ)
জারণ অবস্থা +1, +3
ইলেকট্রনের গঠন [Xe] 4f145d106s1

সোনার ব্যবহার

প্রাচীন কাল থেকেই সোনা সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীনকালে তৈরিকৃত অনেক জিনিসপত্র বর্তমানেও টিকে আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন জাদুঘরে আপনি সেগুলো দেখতে পাবেন। বর্তমান সময়ে সোনার সহজলভ্যতা কমে যাওয়ায় এখন শুধু দামি দামি গহনা তৈরি কেবল এটি ব্যবহার করা হয়।

সোনা খুব নরম হয় এটি দিয়ে গহনা তৈরির সময় অন্য ধাতুর সাথে মিশ্রিত করা হয়। সোনা, অন্য ধাতুর সাথে মিশ্রিত হয়েছে সংমিশ্রন তৈরি করে তাকে Alloy বলে। সোনার Alloy তৈরি করতে সোনার সাথে রূপা (Silver), তামা (Copper), দস্তা বা জিংক (Zinc) ইত্যাদি মেশানো হয়। এই মিশ্রণের পরিমাণকে ক্যারেট বলা হয়। মিশ্রণকে 24 ভাগে ভাগ করা হয়। তাই 24 ক্যারেট সোনা হচ্ছে খাঁটি সোনা

22 ক্যারেট সোনা বলতে বুঝায়, সোনার 22 ভাগ খাঁটি সোনা এবং বাকি 2 ভাগ অন্য ধাতু।

18 ক্যারেট সোনার ক্ষেত্রে, 75 পার্সেন্ট হচ্ছে খাঁটি সোনা বাকি 25 ভাগ অন্য কোন ধাতু যেমন রূপা বা তামা।

ইলেকট্রনিক শিল্পেও স্বর্ণের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এর কারণ হচ্ছে সোনার সবচেয়ে ভালো বিদ্যুৎ পরিবাহী। সোনার পাতলা চীড় সূর্য থেকে আসা রেডিয়েশন প্রতিফলিত করতে পারে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্যাটেলাইটের সোনার ব্যবহার হয়ে থাকে।

সোর্স: Britannica Website.

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *