অবিভাজ্য ধ্বনি কি বা কাকে বলে? অবিভাজ্য ধ্বনির প্রকারভেদ

প্রত্যেকটি ভাষায় কিছু ধ্বনি উপাদান থাকে, যেগুলোকে কোনভাবেই (স্বাভাবিক / কৃত্রিম) বিভক্ত করা যায় না এবং সেগুলো একাধিক ধ্বনিখন্ড জুড়ে অবস্থান করে। এগুলোকেই অবিভাজ্য ধ্বনি বলা হয়। অর্থাৎ, স্বাভাবিক বা কৃত্রিম কোনভাবেই ভাগ করা যায় না অথচ তারা একাধিক ধ্বনির সমন্বয়ে গঠিত হয়, এদেরকে অবিভাজ্য ধ্বনি বলে।

বাক্যের মধ্যে এমন কিছু ধ্বনির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় যা বিভাজ্য ধ্বনির মতো সুস্পষ্টভাবে বিভাজিত হয় না, এগুলো আসলে অবিভাজ্য ধ্বনি বা ধ্বনিমূল।

অবিভাজ্য ধ্বনির প্রকারভেদ

সাধারণভাবে অবিভাজ্য ধ্বনিগুলোকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ-

  • শ্বাসাঘাত
  • স্বরদৈর্ঘ্য
  • যতি
  • সুরতরঙ্গ

শ্বাসাঘাত

শ্বাসাঘাতঃ একাধিক সিলেবল যুক্ত শব্দের উচ্চারণকালে যদি কোন একটি সিলেবলকে যদি অপেক্ষাকৃত বেশি জোর দিয়ে উচ্চারণ করা হয়, তাকে শ্বাসাঘাত বলে।

শ্বাসাঘাত ঘটনাটি একটি দলের সাথে সরাসরি যুক্ত বলে তাকে বিভাজন করা সম্ভব নয়। এটি পুরো দল জুড়েই হয় বলে তা অবিভাজ্য ধ্বনি। যেমন – মাখন, শব্দ ইত্যাদি। এ শব্দ দুটির মা এবং  দলে শ্বাসাঘাত পড়েছে।

স্বরদৈর্ঘ্য

স্বরদৈর্ঘ্যঃ বাংলা ভাষায় বহুদলযুক্ত শব্দের প্রতিটি দলের অন্তর্গত স্বরধ্বনির উচ্চারণগত দৈর্ঘ্যের রেশ কম ঘটে। এটাকেই স্বরদৈর্ঘ্য বলা হয়। যেমন – বাংলায় বহুদল শব্দের প্রতিটি দলের অন্তর্গত স্বরধ্বনির তুলনায় একদল শব্দের স্বরের দৈর্ঘ্য বেশি। ফলে শব্দের দৈর্ঘ্যও বেশি। যেমন – আমার শব্দের  এর চেয়ে আখ শব্দের  এর দৈর্ঘ্য বেশি।

যতি

যতিঃ মুখ দিয়ে উচ্চারিত কোন শব্দের শেষে, মধ্যে, বাক্যমধ্যে বা বাক্যশেষে যখন থামা হয় বা বিরতি নেওয়া হয়, তাই হলো যতি। যেমন – ইফাদ একা দশজনকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

সুরতরঙ্গ

সুরতরঙ্গঃ বাক্যমধ্যে সুরের উঠানামাকে সুরতরঙ্গ বলে। একই বাক্যকে সুরের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করা যায়। যেমন – বিবৃতিবাক্য হলো- ইফাদ যায়। প্রশ্নবোধক বাক্য ইফাদ যাবে?

বাক্য দুটিতে সুরের উঠানামা হলো –
ইফাদ যায়। ‌‌(বিবৃতিবাক্য)
ইফাদ যাবে? ( প্রশ্নবোধক বাক্য)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *