বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে? বহুব্রীহি সমাস কত প্রকার ও কি কি?
বহুব্রীহি নাম দ্বারায় এর পরিচয় বুঝা যায়। ব্রীহি শব্দের অর্থ ধান। তবে এ শব্দটি দ্বাার বহু ধান বোঝায় না বরং বহু ধান আছে এমন ধনী ব্যক্তিকে বোঝায়। যে সমাসে সমস্যমান পদগুলোর কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে, অন্য কোন পদকে বা অর্থ বোঝায় তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
বহুব্রীহি সমাসের ব্যাসবাক্যে সাধারণত যার, যাতে, যা ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ নীল কন্ঠ যার – নীলকন্ঠ, সহ উদর যার – সহোদর, মহান আত্মা যার – মহাত্মা ইত্যাদি।
মনে রাখবেন – যা, যার, যাতে বহুব্রীহি হয় তাতে।
বহুব্রীহি সমাসের প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ
বহুব্রীহি সমাস ৮ প্রকার। যথাঃ
- সমানাধিকরণ
- ব্যাধিকরণ
- মধ্যপদলোপী
- ব্যতিহার
- নঞ
- প্রত্যয়ান্ত
- অলুক ও
- সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি।
সমানাধিকরণঃ পূর্বপদে বিশেষণ পদ এবং পদপদে বিশেষ্য পদ হলে, তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন –
- খোশ মেজাজ যার – খোশমেজাজ
- হত ভাগ্য যার – হতভাগ্য
ব্যাধিকরণঃ যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ এবং পরপদের কোনটিই যদি বিশেষণ না হয় তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন –
- দু কান কাটা যার – দুকানকাটা
- পাপে মতি যার – পাপমতি
মধ্যপদলোপীঃ যে বহুব্রীহি সমাসে মাঝের বা শেষের এক বা একাধিক পদ লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি বলে। যেমন –
- ফুল তোলা আছে যাতে – ফুলতোলা
- হাতে খড়ি দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে – হাতেখড়ি
ব্যতিহারঃ ক্রিয়ার পারস্পরিক অর্থে ব্যতিহার বহুব্রীহি হয়। এ সমাসে পূর্বপদে আ এবং পরপদে ই যুক্ত হয়। যেমন –
- কানে কানে যে কথা – কানাকানি
- চুলে চুলে যে লড়াই চুলোচুলি
নঞঃ পূর্বপদে না অর্থবোধক পদ থাকলে তাকে নঞ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন –
- ন (নাই) জ্ঞান যার – অজ্ঞান
- অ (নাই) ধৈর্য যার – অধৈর্য
প্রত্যয়ান্তঃ যে বহুব্রীহি সমাসের সমস্তপদে আ, এ, ও ইত্যাদি প্রত্যয় যুক্ত হয় তাকে প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহি বলে। যেমন –
- ঘরের দিকে মুখ যার – ঘরমুখো
- এক দিকে চোখ যার – একচোখা
অলুকঃ যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্ব বা পরপদের কোন পরিবর্তন হয় না, তাকে অলুক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন –
- মাথায় পাগড়ি যার – মাথায়পাগড়ি
- পায়ে বেড়ি যার – পায়েবেড়ি
সংখ্যাবাচকঃ যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদে সংখ্যাবাচক শব্দ এবং পরপদে বিশেষ্য পদ থাকে তাকে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি বলে। যেমন –
- দশ গজ পরিমাণ যার – দশগজী
- চৌ চাল যে ঘরের – চৌচালা