ব্যাপন কাকে বলে? ব্যাপনের কয়েকটি বাস্তব উদাহরণ
ব্যাপন কি বা কাকে বলে?
গ্যাসের ব্যাপন (Diffusion of Gases): উচ্চ ঘনত্বের স্থান থেকে নিম্ন ঘনত্বের স্থানে কোনো কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের স্বতঃস্ফূর্ত ও সমভাবে ছড়িয়ে পড়া বা পরিব্যপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে।
অর্থাৎ দুটি অসমান ঘনত্বের গ্যাসের পরস্পরের মধ্যে মিশ্রণের পদ্ধতিকেই বলা হয় গ্যাসের ব্যাপন প্রণালি।
ব্যাপনের কয়েকটি বাস্তব উদাহরণ
উদাহরণ ১। বদ্ধ ঘরের কোন স্থানে যদি কোন সুগন্ধিযুক্ত বস্তু রাখা হয় তাহলে কিছক্ষণ পরে দেখা যায় যে ঘরের সর্বত্র সুগন্ধি পাওয়া যাচ্ছে। তবে ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে সুগন্ধের তীব্রতা কিছুটা কমে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এ সুগন্ধি কীভাবে এক স্থান হতে অন্যস্থানে চলে আসে? প্রকৃতপক্ষে সুগন্ধিযুক্ত বস্তু একটি বোতল বা ছোট আয়তনের পাত্রে আবদ্ধ থাকায় এর ঘনত্ব অনেক বেশি থাকে। তাই পাত্রে মুখ খোলার সাথে সাথে সুগন্ধির অণুসমূহ গ্যাসীয় অবস্থায় চারিদিকে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে থাকে অর্থাৎ সুগন্ধির গ্যাসীয় অণুগুলো উচ্চ ঘনত্বের স্থান থেকে নিম্ন ঘনত্বের স্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অর্থাৎ গ্যাসের অণুগুলোর মধ্যে ব্যাপন ঘটে এবং কিছু অণু নাকে প্রবেশ করলে আমরা সেই গন্ধ অনুভব করতে পারি। এটিই হচ্ছে ব্যাপন প্রক্রিয়া।
উদাহরণ ২। বাড়িতে পােলাও কোর্মা রান্না করলে তার সুগন্ধ একই প্রক্রিয়ায় সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটিও একটি ব্যাপন প্রক্রিয়া ।
উদাহরণ ৩। ক্লোরিন বাতাসের চেয়ে প্রায় ২.৫ গুণ ভারী। কিন্তু আপনি যদি একটা ঘরের মধ্যে ক্লোরিন গ্যাস পূর্ণ পাত্র খুলে দেন তাহলে দেখবেন এক সময় সমস্ত ঘরের মধ্যে Cl2 গ্যাস সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরের প্রত্যেক অংশের বায়ু পরীক্ষা করলে দেখা যাবে সব জায়গায় বাতাস এবং ক্লোরিনের অনুপাত সমান।
উদাহরণ ৪। একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে তাতে পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর কয়েকটি দানা ছেড়ে দিলে দেখা যায় ধীরে ধীরে দানাসমূহের কাছ থেকে পানির রং বেগুনি হওয়া শুরু করেছে এবং ক্রমশ সে রং সম্পূর্ণ পানিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পানিকে কোনরূপ নাড়াচাড়া না করা হলেও তা ঘটে। এখানে রঙিন পারম্যাঙ্গানেট আয়ন পানি অণূর মধ্যে ব্যাপন করতে থাকে।