বাক্য হলো কতগুলো পদের সমষ্টি। কিন্তু কতগুলো পদকে পাশাপাশি বসালেই বাক্য হয় না, এগুলোর একটা নিয়ম বিন্যাস আছে, যা অনুসরণ করতে হয়। অর্থাৎ, কোন পদের পর কোনটা বসবে, তা ভালোভাবে জানতে হবে, তবেই বাক্য গঠন করা সম্ভব হবে। আর এটিই হচ্ছে পদ সংস্থাপনার ক্রম।এজন্য ভাষার ক্ষেত্রে পদক্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বাক্যের অন্তর্ভুক্ত পদগুলো উপযুক্ত স্থানে বসানোই পদ সংস্থাপনার ক্রম। কেউ কেউ একে পদক্রমও বলে থাকেন।
বাক্যে পদক্রমের নিয়মাবলি
নিয়ম – ০১
সাধারণত বাক্যের প্রথমে সম্প্রসারকসহ উদ্দেশ্য/কর্তা এবং বাক্যের শেষে সম্প্রসারকসহ বিধেয় / ক্রিয়াপদ বসবে। যেমন – মনোযোগী (সম্প্রসারক) ছাত্ররাই (কর্তৃপদ) রীতিমতো (সম্প্রসারক) পড়াশোনা করে (ক্রিয়াপদ)।
নিয়ম – ০২
বিশেষ্যের পূর্বে সম্বন্ধ পদ বসে। যেমন – “ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে।”
অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য বা ছন্দের অনুরোধে সম্বন্ধ পদ পরেও বসতে পারে। যেমন – ” হে আদি জননী সিন্ধু, বসুন্ধরা সন্তান তোমার।”
নিয়ম – ০৩
কারক – বিভক্তিযুক্ত পদ বা সমাপিকা ক্রিয়াপদ বিশেষণের আগে বসে। যেমন – মুক্তাগাছার মন্ডা খেতে চমৎকার।
নিয়ম – ০৪
বিধেয় বিশেষণ সবসময় বিশেষ্যের পরে বসে। যেমন – ইফাদ যে জ্ঞানী তাতে সন্দেহ নেই।
নিয়ম – ০৫
বাক্যের প্রথমে কর্তা, পরে কর্ম এবং শেষে ক্রিয়াপদ বসে। যেমন – ইফাদ “শাহনামা” পড়ছে।
নিয়ম – ০৬
বহু পদময় বিশেষণ অবশ্যই বিশেষ্যের পূর্বে বসে। যেমন – তোমার দাঁত বের করা হাসি দেখলে সবারই পিত্ত জ্বলে যায়।
বাক্যে না বা নে অব্যয়ের ব্যবহার
১. সমাপিকা ক্রিয়ার পরে বসে। যেমন- ইফাদ যাবে না। আমি রুটি খাই নে, ভাত খাই।
২. অসমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে। যেমন – না চাইতে দানের কোন মর্যাদা নেই।
৩. বিশেষণীয় বিশেষণ রূপে বিশেষণের পূর্বে বসে। যেমন – না খারাপ, না ভালো।
৪. যদি দিয়ে বাক্য শুরু হলে না সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে। যেমন – তুমি যদি আজ না যাও, তাহলে বই পাবে না।
না (নঞ ব্যতীত) অন্য অর্থে
১. বিকল্পার্থেঃ প্রশ্নবোধক বাক্যে – ইফাদ বাড়ি যাবে, না আমি যাব?
২. অনুরোধ বা আদেশ অর্থে (নিরর্থকভাবে বাক্যের শেষে): একটা কবিতা বল না ভাই।