সূরা আল ফালাক অর্থ সহ বাংলা উচ্চারণ, নামকরণ ও ফজিলত

পবিত্র কুরআনের ১১৩ নং সূরা হচ্ছে সূরা হচ্ছে সূরা আল-ফালাক। এটি একটি মাদানী সূরা। এ সূরাটি মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর আয়াতের সংখ্যা ৫, রুকুর সংখ্যা ১। চলুন তাহলে সূরা আল ফালাকের অর্থ সহ বাংলা উচ্চারণ, নামকরণ ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

সূরার নাম সূরা আল ফালাক
শ্রেণী মাক্কী সূরা
নামের অর্থ নিশিভোর
আয়াত সংখ্যা ০৪
সূরার ক্রম ১১৩
পারার ক্রম ৩০
রুকু সংখ্যা ০১
সিজদাহ সংখ্যা নাই
সূরা আল ফালাক

নামকরণ

সূরা নাস ও ফালাক ভিন্ন সূরা হলেও এদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক অনেক গভীর। এ দুই সুরার বিষয়বস্তু পরস্পরের সাথে এতই সম্পর্কিত যে এদের একসাথে “মু’আওবিযাতাইন” নামে ডাকা হয়। মু’আওবিযাতাইন অর্থ হলো আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া। তাছাড়া এ দুটি নাযিলও একইসাথে হয়েছে। এ সূরার প্রথম আয়াতের শেষ শব্দ ফালাক থেকে এর নামকরণ করা হয় সূরা আল ফালাক।

সূরা আল ফালাক

ক্রম আয়াত ও বাংলা অনুবাদ উচ্চারণ & ইংলিশ অনুবাদ
1 قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلْفَلَقِ কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিল ফালাক
বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, Say: I seek refuge with the Lord of the Dawn
2 مِن شَرِّ مَا خَلَقَ মিন শাররি মা-খালাক।
তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে, From the mischief of created things;
3 وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ওয়া মিন শাররি গা-ছিকিন ইযা-ওয়াকাব।
অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, From the mischief of Darkness as it overspreads;
4 وَمِن شَرِّ ٱلنَّفَّٰثَٰتِ فِى ٱلْعُقَدِ ওয়া মিন শাররিন নাফফা-ছা-তি ফিল ‘উকাদ।
গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে From the mischief of those who practise secret arts;
5 وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ওয়া মিন শাররি হা-ছিদিন ইযা-হাছাদ।
এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে। And from the mischief of the envious one as he practises envy.

 

সূরা আল ফালাকের ফজিলত

সূরা ফালাকে আল্লাহর নিকট অনিষ্টকর বিষয় থেকে আশ্রয় চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর অনেক ফজিলত রয়েছে। নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হলো।

আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক দীর্ঘ রেওয়ায়েতে রসুলুল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মিসীবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে যথেষ্ট হয়। – (ইবনে-কাসীর)

এক সফরে রসূলুল্লাহ (সাঃ) ওকবা ইবনে আমেন -কে সূরা ফালাক এবং সূরা নাস পাঠ করালেন, অত:পর মাগরিবের নামাযে এ সূরাদ্বয়ই তেলাওয়াত করে বললেনঃ এই সূরাদ্বয় নিদ্রা যাওয়ার সময় এবং নিদ্রা শেষে বিছানা থেকে উঠার সময়ও পাঠ করো। অন্য হাদীসে তিনি প্রত্যেক নামাযের পর সূরাদ্বয় পাঠ করার আদেশ করেছেন। – (আবু দাউদ, নাসায়ী)

হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার কি জানা নেই আজ রাতে আমার ওপর যে আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে এগুলোর মতো কোনো আয়াত দেখাও যায়নি এবং শোনাও যায়নি। আর তা হলো কুল আয়ুজু বি রাব্বিল ফালাক ও কুল আয়ুজু বি রাব্বিন নাস। – (সহি মুসলিম হাদিস নং-৮১৪)

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে জাবের তুমি পড়। আমি বললাম আমার মাতাপিতা আপনার জন্য কোরবান হোক, আমি কি পড়ব। তিনি বললেন, তুমি পড় কুল আয়ুজু বি রাব্বিল ফালাক ও কুল আয়ুজু বি রাব্বিন নাস। ফলে আমি সূরা দু’টি পড়লাম অতঃপর তিনি বললেন, এই দুই সূরা পড়তে থাকবে (কারণ) এই দুই সূরার মতো (অন্য সূরা) সহজে পড়তে পারবে না। – (সুনানে নাসাঈ ৮/২৫৪ ও সহি ইবনে হিববান, হাদিস নং-৭৯৬)

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *